সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল দাবি ঢাবি শিক্ষকদের
ছবি: সংগৃহীত
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা সর্বজনীন পেনশন-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে এর প্রত্যাহারের দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ডাকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
এই কর্মসূচি আগামীকাল বৃহস্পতিবার (সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা) পর্যন্ত চলবে। তবে চলমান পরীক্ষাগুলো এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
এ সময় বক্তারা বলেন, দাবি আদায়ে ২৭ তারিখ পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরও যদি জারিকৃত পেনশন বাতিল করা না হয় তাহলে ১ জুলাই থেকে পূর্ণ কর্মবিরতি ও সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পূর্ণ কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার হুঁশিয়ারি দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
কর্মবিরতি পালনের পাশাপাশি দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতারা অবস্থান নেন। এ সময় প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন বক্তব্য দেন শিক্ষক নেতারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, আমাদের দাবি যৌক্তিক। দীর্ঘদিন ধরে যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্যে আন্দোলন করে আসছি। ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৩০ তারিখে আমরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করব। তখন আমাদের কোনো হলের প্রভোস্ট হলে যাবেন না, কোনো বিভাগের চেয়ারম্যান বিভাগে যাবেন না, ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা ইনস্টিটিউটে যাবেন না। এমনকি যেসব শিক্ষক প্রশাসনিক দায়িত্বে আছেন, তারাও কোনো দায়িত্ব পালন করবেন না।
তিনি বলেন, এটা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। সরকার ‘সেবক’ নামে আরেকটা স্কিম যে চালু করবে আগামী বছর থেকে, সেখানে সরকারি কর্মকর্তাদের কী কী সুবিধা আছে, তার ব্যাখ্যা নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, চাকরি শেষে পেনশনের টাকা দিয়ে আমরা কী করি? হয়তো একটা জমি কেনার চেষ্টা অথবা একটা বাড়ি কেনার চেষ্টা করি। সন্তানদের উচ্চশিক্ষার জন্যে অর্থ ব্যয় করি। তাহলে সেই জায়গা কেটেকুটে আপনারা আমাদের আরো স্বল্প বেতনে, স্বল্প পেনশনে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন। এই অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে? প্রশ্ন রাখেন তিনি।
জিনাত হুদা বলেন, এটি মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ, মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সুতরাং এই ধরনের সংবিধান পরিপন্থি, যেটিকে সর্বজনীন নাম দিয়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কোনো কোনো মহল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ তা মেনে নেবে না।