ট্রাকচাপায় রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে হত্যা মামলার আশ্বাস
ট্রাকচাপায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মাহবুব হাবীব হিমেলের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে হিমেলের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে দেওয়া সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এ তথ্য জানান ভিসি।
একই সঙ্গে বুধবারের মধ্যে হিমেলের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার আরও বলেন, ‘রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক শিক্ষার্থী রিমেলের চিকিৎসার সকল খরচও প্রশাসন বহন করবে।’
ভিসি বলেন, ‘আপাতত আজকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তবে এফসির সঙ্গে বৈঠক করে সম্ভব হলে এ ক্ষতিপূরণ বাড়ানো হবে। হিমেলের মায়ের সব ধরনের আর্থিক দায়িত্ব নেবে বিশ্ববিদ্যালয়।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনের রাস্তায় ট্রাকচাপায় মাহমুদ হাসান হিমেল নিহত হন। হিমেল রাবির গ্রাফিকস ডিজাইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি বগুড়ায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন তিনি।
এদিকে হিমেলের নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসেন। এ সময় তারা উপাচার্য ও প্রক্টরের সাড়া না পেলে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা ৬টি ট্রাকে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর উপাচার্য ভবনে হামলার চেষ্টা করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে গিয়ে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ভবনে ভাঙচুরও চালানো হয়। পরে রাত ২টার দিকে শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়ার ব্যাপারে উপচার্যের আশ্বাসের পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়। এরপর থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শান্ত রয়েছে।
হিমেলের বন্ধুরা জানান, ঘটনার পর প্রায় দেড় ঘণ্টা হিমেলের মরদেহ ঘটনাস্থলে পড়ে সাড়া তবুও রাবি কর্তৃপক্ষ মরদেহ সরাতে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এটি দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড। প্রক্টর লিয়াকত আলীকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
মঙ্গলবার রাতে ঘটনার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের প্রত্যাহারের দাবি করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার মধ্যরাতে সেই দাবি মেনে নিয়ে তাকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
রাবির জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ পান্ডে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের পদত্যাগ ছিল, উপাচার্য তা মেনে নিয়েছেন। তবে এখনো তা গেজেট হয়নি। আজকের (বুধবার) মধ্যেই তা হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে ট্রাকচালক গ্রেপ্তার, লাইটের ব্যবস্থা, রাস্তার উন্নয়ন, বহিরাগত প্রবেশ বন্ধ, নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ–এগুলোও উপাচার্য মেনে নিয়েছেন। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীরা ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন, এটা নিয়ে আজ আবার বসে সিদ্ধান্ত হবে।
এসএ/