রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সাস্টে মার খেয়েছেন ছাত্র, ছাত্রীরা

১৬ জানুয়ারি শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল প্রভোস্টের ‘পদত্যাগ’ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে পুলিশ। ছাত্র, ছাত্রীদের লক্ষ্য করে ২৭ রাউন্ড রাবার বুলেট, ২১টি সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়েছেন তারা। ঠিক কী কারণে তাদের হামলা করেছে? কী ঘটেছিল সেদিন? লিখেছেন নুরুল ইসলাম রুদ্র। ছবি : সংগ্রহ

 

“১৬ জানুয়ারি, বিকাল ৫টা। সাধারণ ছুটির সময় থাকে তখন। তবে সেদিন ছাত্র, ছাত্রীরা ক্ষোভে উত্তাল। তাদের দাবি মেনে নিতে অবরুদ্ধ উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দেখা করতে আইআইসিটি (ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি) ভবনের গেটের সামনে গেলেন সাস্টের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম। ছাত্রীরা তাকে তালা খুলে দিতে চাবি খুঁজতে লাগলেন। তখনই ক্যাম্পাসের ভেতরে চলে আসা পুলিশ সদস্যরা বাঁশিতে ফুঁ দিয়ে মারমুখি অবস্থান নিয়ে নিলেন। তারপর তারা সবাই মিলে আমাদের ওপর লাঠিচার্জ মানে লাঠি দিয়ে বেড়ধক মারা শুরু করলেন। আমরা দুটি স্তরে আন্দোলন করছিলাম। ভেতরে মেয়েরা, বাইরে ছেলেদের-মানব শিকল। পুলিশ প্রথমে লাঠি দিয়ে প্রবলভাবে পেটাতে, পেটাতে আমাদের সামনের মানব শিকল ভাঙল। এ সময় ধরে, ধরে আমাদের হাতে, পেটে ও পিঠে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে তারা। মার খেয়ে সরে যাবার পর সাস্টের ছাত্রীদের মানব শিকলের ওপর হামলা চালিয়েছে। মারতে, মারতে আমাদের অনেককে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। সেই মুহূর্তেও লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে”-নিরস্ত্র ছাত্র,ছাত্রীদের উপর পুলিশের হামলার বর্ণনা দিলেন সজল কুণ্ডু। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্র, ছাত্রীদের অন্যতম। নৃবিজ্ঞান পড়েন। তাকেও প্রচণ্ড মেরেছে পুলিশ ক্যাম্পাসের ভেতরে। সজলকে পুলিশ বাহিনী ছিটা গুলি ছুঁড়েছে ও সাউন্ড গ্রেনেড মেরেছে। গ্রেনেড হামলায় সজলের শরীরের অন্তত ৮৩টি জায়গা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। বন্ধুরা তাকে দ্রুত তুলে নিয়ে হাসপাতালে ভতি করে তার জীবন বাঁচিয়েছেন। এক্স-রেতে জানা গিয়েছে, তার শরীরের মাথা, কান, গলার নিচ, হাত, আঙ্গুল, বুক, পেটসহ পুরো শরীরে আঘাত আছে। কোনো, কোনোটি গুরুতর। কীভাবে পুলিশ তার উপর হামলাটি চালিয়েছে-সেই হৃদয়বিদারক বর্ণনা কাঁদতে, কাঁদতে সজল দিয়েছেন, ‘আমি ছিলাম সাস্ট ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরে। দেখেছি, কয়েকজন পুলিশ ঘিরে, ঘিরে আমাদের কয়েকজন ছাত্রকে নির্দিষ্টভাবে লক্ষ্য করে বেধড়ক মারধর করছে, লাথি মারছে, পেটাচ্ছে। তাদের ভয়াবহ কষ্ট দেখে থাকতে না পরে বেরিয়ে ছুটে গিয়েছি। ওদের আমরা পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে বেষ্টনি থেকে বের করে এনেছি। ঠিক তখনই একজন পুলিশ সদস্য আমাকে লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করল। আমার পায়ের কাছে এসে ফাটল শব্দ করে। মনে হয়েছে, আমি কয়েকশ ভোল্টের একটি বিদ্যুৎ শক অনুভব করছি। কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্তদ্ধ ও বধির হয়ে গেলাম। নড়তেও পারছি না। প্রিয় বন্ধু রাকিব আমাকে ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরে নিয়ে গেল। এরপর খেয়াল ফিরে এলো। দেখলাম, ডান হাত দিয়ে জলস্রোতের মতো রক্তস্রোত বেরুচ্ছে। ব্যথায় কাঁদছি। দুই কী তিনটা গামছা দিয়ে হাতটি বেঁধে রক্তপড়া বন্ধ করার চেষ্টা করছে ওরা। ততক্ষণে মাথা থেকেও রক্ত বের হচ্ছে। শরীরের কাপড় ছিদ্র হয়ে গেছে। হাসপাতালে কয়েকজন বন্ধুবান্ধবের কাঁধে উপর ভর দিয়ে যাচ্ছিলাম। সামনে দেখে বন্ধুরা পুলিশকে বলেছিল, ‘ভাই, ও শারিরীভাবে আঘাত পেয়েছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।’ শুনে পুলিশরা কোনো কথা না বলে কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলেন। তবে যখনই আমরা তাদের সীমানার মধ্যে ঢুকলাম, সবাইকে আবার লাঠিপেটা শুরু করলো। আমি আহত শরীরটিকে কোনোমতে টেনে-হিঁচড়ে ক্যাম্পাসের গোলচত্বরের সামনে এসে জীবন বাঁচালাম। অন্যরা তখন মার খাচ্ছে। ওরা আমাকে সরিয়ে দিয়েছিল।”

এই আন্দোলনে পুলিশের গুরুতর হামলায় পিটুনির শিকার হয়েছেন পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র ফাতিন আল সাদাফ। বলেছেন, ‘আমরা ওই মানব শিকলটি তৈরি করে বোনদেরকে রক্ষা করতে চেয়েছি। পুলিশ অতর্কিত হামলা করেছে আমাদের ওপর। আমাদের মারতে, মারতে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। আমিসহ আরো কয়েকজনকে বুট দিয়ে লাথি মেরেছে, লাঠি দিয়ে বারবার পিটিয়েছে। আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত হয়েছে, থেঁতলে দেওয়া হয়েছে আমাদের কয়েকজনের শরীর।’

একজন অধ্যাপককে বাঁচাতে গিয়ে নিজের একটি হাত ভেঙেছেন গণিতের ছাত্র নজরুল ইসলাম রাকিব, ‘মানব শিকলে হামলা করে তখন পুলিশ ছাত্র, শিক্ষক সবাইকে বেধড়ক মারধর করেছে। আমার সামনেই একজন প্রিয় অধ্যাপককে লাঠিচার্জ করা শুরু করলো তারা। থাকতে না পেরে, জীবনের পরোয়া না করে আমি বাধা দিতে এগিয়ে গেলাম। মার খেয়ে আমার বাম হাতের একটি আঙ্গুল ভেঙে গেল। শিক্ষকের ওপর আঘাত ঠেকাতে তখন দুই হাতের তালুতেও খুব ব্যথা পেয়েছি মারে।’ এখন তিনি চিকিৎসাধীন।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-সাস্টের আরেকটি কালো দিবসে তাদের মতো অন্তত ৫০ জন ছাত্র, ছাত্রী ভয়াবহ পুলিশী হামলার শিকার হয়েছেন। কেবল সাধারণ ছাত্র, ছাত্রীরাই নন, এই হামলা ঠেকাতে ও সবাইকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কমীরা। সাস্ট ছাত্রলীগের একজন কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তৌহিদকে লাঠি দিয়ে পেটাতে, পেটাতে পুকুরে ফেলে দিয়েছে পুলিশ বাহিনী। তিনি নৃবিজ্ঞানে পড়েন। এরপর পুলিশরা পানিতে নেমে ফের তাকে লাঠি দিয়ে বারবার মেরেছে। অজ্ঞান তৌহিদের জ্ঞান ফিরেছে হাসপাতালের বেডে। জ্ঞান ফেরার পরও তৌহিদ আতঙ্কিত হয়ে গিয়েছিলেন বলে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন সহপাঠীরা।

লুকিয়ে নয়, জীবন বাঁচাতে বন্ধুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি মানুষ। শিক্ষার্থীদের পুলিশের মারধরের দৃশ্যে নিরবে কেঁদেছেন অনেকে। কেঁদেছেন তাদের সহপাঠী ও বন্ধুরা। তারা কেউ-ই ভালো নেই। হাসপাতালের ডাক্তারেদের চেম্বার ও বেড রুমে কাটছে জীবন । সজলকে চিকিৎসক জানিয়েছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে। তার সব চিকিৎসার খরচ শেখ হাসিনার তহবিল থেকে দেওয়া হবে জানিয়েছে সরকার। সজল বলেছেন, ‘আজ সোমবার আমাকে বিএসএমএমইউতে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল ইউনিবাসিটি) নিয়ে যাওয়া হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসা শুরু করবেন। সে অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হবে।’

এ ঘটনায় শিক্ষকদের প্রতি ছাত্র, ছাত্রীদের কষ্টের জন্ম হয়েছে জানিয়েছেন অনেক ছাত্র, ছাত্রী। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। পদার্থবিজ্ঞানের শাহরিয়ার আবেদীন বলেছেন, ‘ সাস্টের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমদ ও প্রক্টর ড. আলমগীর কবীরের উপস্থিতিতে সাধারণ ছাত্র, ছাত্রীদের ওপর পুলিশ হামলা করেছে। তারা কেউ পুলিশকে বাধা দেননি। আরো অনেক অধ্যাপক এসময় উপস্থিত ছিলেন। আমাদের ওপর পুলিশের হামলায় তারা পালিয়েছেন। কেউ-ই আমাদেরকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি। অধ্যাপকরা আমাদের সন্তানসম দাবি করেন অথচ সেদিন সব সন্তানকে পুলিশদের লাঠি ও গুলির সামনে রেখে তারা পালিয়ে বেঁচেছেন। এমন দৃশ্য বাংলাদেশের কোথাও ঘটেছে বলে আমার মনে হয় না। কীভাবে তারা আমাদের সন্তানের মতো দাবি করেন?’

ওএস/৩১ জানুয়ারি ২২

 

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি