রাবি ভর্তি পরীক্ষায় ট্রেনকাণ্ডে ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীদের পাসের হার সবচেয়ে কম
ছবি সংগৃহিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার ‘সি’ ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। সোমবার (১১ মার্চ) বেলা এগারোটার দিকে বিজ্ঞান অনুষদের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশ করেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, উপস্থিতির ভিত্তিতে 'সি' ইউনিটের বিজ্ঞান গ্রুপে পাসের হার ৪৬ শতাংশ এবং অবিজ্ঞান গ্রুপে ৮০.৬ শতাংশ। এই ইউনিটের পাঁচটি গ্রুপের মধ্যে সর্বোচ্চ কৃতকার্যের হার অবিজ্ঞান গ্রুপে ৮০.৬১ শতাংশ। তবে, চারটি বিজ্ঞান গ্রুপের মধ্যে সর্বোচ্চ কৃতকার্যের হার গ্রুপ-৩ এ ৫২.৭৬ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন কৃতকার্যের হার গ্রুপ-৪ এ ৩৯.৩৫ শতাংশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, 'সি' ইউনিটের গ্রুপ-৪ এর ভর্তি পরীক্ষা গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই গ্রুপের কিছু শিক্ষার্থী ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনযোগে পরীক্ষা দিতে এসেছিল। ট্রেনটি ঢাকা থেকে বিলম্বে ছাড়া এবং পথিমধ্যে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ের প্রায় চার ঘন্টা পর রাজশাহী পৌঁছায়। এ কারণে ট্রেনটিতে থাকা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশে ২০ থেকে ৩০ মিনিট করে দেরী হয়েছিল। সি ইউনিটের গ্রুপ-৪ এ কৃতকার্যের হার কম হওয়ার পিছনে ওই সকল শিক্ষার্থীর পরীক্ষা খারাপ হওয়াটাও অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন অনেকে।
প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, সি ইউনিটে মোট পাঁচটি গ্রুপে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে গ্রুপ-১ এ মোট আবেদনকারী ১৮ হাজার ৬৪৪ জনের মধ্যে পরীক্ষায় উপস্থিত ছিল ১৫ হাজার ১৪১ জন। খাতা বাতিল হয়েছে ৯৬ জনের। কৃতকার্য হয়েছেন ৭ হাজার ৬৩৩ জন এবং অকৃতকার্য হয়েছেন ৭ হাজার ৪১২ জন। কৃতকার্যের হার ৫০.৪১ শতাংশ। সর্বোচ্চ মার্ক ৯৬। কোটায় আবেদনকারীদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ১ হাজার ২৭২ জন।
গ্রুপ-২ এ ১৮ হাজার ৬৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১৫ হাজার ২৮৬ জন। বহিষ্কৃত হয়েছিল ১ জন। খাতা বাতিল হয়েছে ৮৩ জনের। কৃতকার্য হয়েছে ৬ হাজার ৩২৯ জন এবং অকৃতকার্য হয়েছেন ৮ হাজার ৮৭৩ জন। কৃতকার্যের হার ৪১.৪০ শতাংশ। সর্বোচ্চ মার্ক ৯১.৫০। কোটায় আবেদনকারীদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ১ হাজার ১৯৩ জন।
গ্রুপ-৩ এ ১৮ হাজার ৬৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১৫ হাজার ২৯৩ জন। বহিষ্কৃত হয়েছিল ৩ জন। খাতা বাতিল হয়েছে ৮৭ জনের। কৃতকার্য হয়েছে ৮ হাজার ৬৯ জন এবং অকৃতকার্য হয়েছে ৭ হাজার ১৩৪ জন। কৃতকার্যের হার ৫২.৭৬ শতাংশ। সর্বোচ্চ মার্ক ৯৫.৫০। কোটায় আবেদনকারীদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ১ হাজার ২৭৯ জন।
গ্রুপ-৪ এ ১৮ হাজার ৬৪৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১৫ হাজার ৩৯৯ জন। খাতা বাতিল হয়েছে ১০০ জনের। কৃতকার্য হয়েছে ৬ হাজার ৬০ জন এবং অকৃতকার্য হয়েছে ৯ গাজার ২৩৯ জন। কৃতকার্যের হার ৩৯.৩৫ শতাংশ। সর্বোচ্চ মার্ক ৯৬। কোটায় আবেদনকারীদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ১২০৭ জন।
গ্রুপ-৫ (অবিজ্ঞান) এ ১ হাজার ৭৭৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় উপস্থিত ছিল ১ হাজার ৬৯৭ জন। খাতা বাতিল হয়েছে ১ জনের। কৃতকার্য হয়েছে ১ হাজার ৩৬৮ জন এবং অকৃতকার্য হয়েছে ৩২৭ জন। কৃতকার্যের হার ৮০.৬ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ মার্ক পেয়েছে ৮৭। কোটায় আবেদনকারীদের মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ৪৭৬ জন।
এবিষয়ে সি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক নাসিমা আক্তার বলেন, কিছু শিক্ষার্থী দেরীতে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছিল বলে ওই গ্রুপে পাসের হার কমে গেছে, এটা আমি মনে করি না। কারণ, দেরীতে প্রবেশ করা শিক্ষার্থীর সংখ্যাতো খুব একটা বেশি না, ৫০ থেকে ৬০ জন মত। আর অন্যান্য গ্রুপের থেকে ওই গ্রুপের পাসের হারেতো খুব বেশি পার্থ্যক্যও নেই। এমনটা বিভিন্ন কারণেই হয়ে থাকে।