জাবিতে প্রক্সি দিতে এসে আটক ঢাকা কলেজ ছাত্র
ছবি সংগৃহিত
জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে আসা এক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আটককৃত সাগর হোসেন ওরফে রোহান ঢাকা কলেজের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (২০২০-২০২১ সেশন) শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে। তার বাবার নাম লিটন আলী।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সি ইউনিটভুক্ত কলা ও মানবিকী অনুষদের পঞ্চম শিফটের পরীক্ষা চলাকালে সমাজবিজ্ঞান অনুষদ কেন্দ্রের ১৩০নং কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে কক্ষ পরিদর্শক তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে হস্তান্তর করলে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপরাধ স্বীকার করেন।
নিরাপত্তা অফিস সূত্রে জানা যায়, মো. টুটুল হাসান নামের এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভর্তিচ্ছুর হয়ে প্রক্সি দিতে আসেন রোহান। এসময় রোহানের এসএসসি সার্টিফিকেটের সঙ্গে তার ছবির মিল না পেয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সন্দেহ হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ রোহান ও টুটুল হাসানকে নিরাপত্তা শাখায় হস্তান্তর করেন ওই শিক্ষক।
অভিযুক্ত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী টুটুল জানান, প্রক্সি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য শ্রুতি লেখক হিসেবে কাউকে নিয়োগ করতে চেয়েছিলো সে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২য় বর্ষের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শাওনকে প্রক্সি লেখক খুঁজে দেওয়ার জন্য বলেন। শাওন প্রক্সি লেখকের জন্য মিরপুর বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী শফিকের সাথে যোগাযোগ করেন। পরে শাওন প্রক্সি লেখকের জন্য তিন হাজার টাকা দিতে বলেন টুটুলকে এবং চান্স পেলে দশ হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তির কথা স্বীকার করেন টুটুল।
এ বিষয়ে শাওন বলেন, টুটুলের কাছ থেকে নগদ এক হাজার টাকা নিয়েছে ও পরে বিকাশে দুই হাজার টাকা নেওয়ার কথা ছিল। যিনি প্রক্সি দিতে এসেছেন তার যাতায়াত ও নাস্তা বাবদ এটা নিয়েছি। চান্স পাওয়ার পর দশ হাজার টাকা নেওয়ার কোনো চুক্তি হয় নি।
রাজশাহীর তানোরের মহির আলীর ছেলে টুটুল হাসানের পরিবর্তে এই পরীক্ষা দিতে আসেন তিনি ৷ পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা অভিযুক্ত রোহানকে ঢাকার আশুলিয়া পুলিশ সার্কেলের হাতে তুলে দিলে ভ্রাম্যমান আদালতের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুর রহমান পাবলিক পরীক্ষা আইন ১৯৮০ এর ৩(খ) ধারা অনুযায়ী এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং দুইশত টাকা জরিমানা করেন।
এ বিষয়ে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, আটককৃত রোহান প্রক্সি দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। আমরা তাকে ভ্রাম্যমান আদালতের হাতে তুলে দিয়েছি। অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে আদালত তাকে শাস্তি প্রদান করবেন। এ ধরনের অপরাধে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।