চবিতে শিক্ষক নেটওয়ার্কের কর্মসূচি
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দলদাসে পরিণত হয়েছেন’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক দলদাসে পরিণত হয়েছেন এবং তারা শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত এক কর্মসূচিতে তারা এ সমন্তব্য পালন করেন। সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ন্যায় বিচার, ভিসির অপসারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ, হলগুলোতে আবাসন সমস্যার সমাধান ও মানসম্মত খাবার পরিবেশনের দাবির প্রতি সমর্থন জানান অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা। একই সঙ্গে শাবিপ্রবি ভিসির আচরণের তীব্র নিন্দা জানান তারা। শিগগরিই এ পরিস্থিতির সমাধানের জন্য আহ্বান জানান তারা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও কর্মসূচিতে যোগ দেন।
কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তৌফিক ইমাম বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষকরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দলদাসে পরিণত হয়েছে। ন্যূনতম বিবেকের তাড়না কারোর মধ্যে দেখতে পাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একেকজন সামন্তপ্রভুর মতো আচরণ করছেন। শাবিপ্রবির ভিসি স্যারকে বলতে চাই আপনি এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের অধিকর্তা হবার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে আপনার স্থান কোথায় দেখে নেন। আমরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশে আছি। শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের অনশন ধর্মঘটের পরেও প্রশাসন সুস্থ মানসিকতার পরিচয় দিতে পারেনি। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দমন-পীড়নের নীতিতে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গেুলো নির্দয় শিক্ষকের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। আমরা কী দেখলাম! শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করার পরে তাদের ওপর পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হলো।’
সমাজতত্ব বিভাগের অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন অরাজকতা চলছে, প্রবল শক্তির প্রদর্শন চলছে। আমরা দেখছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদাধিকারীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান। তারা ব্রিটিশদের দেখানো পথ ডিভাইডেড অ্যান্ড পলিসি অবলম্বন করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছেন। আমরা দেখি অধিকারগুলো ভুলুণ্ঠিত হয়, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়, মামলা দেওয়া হয়। এর সঙ্গে জড়িত দালাল উপাচার্যরা। আবার তারাই পুরস্কৃত হন। আমরা এ অরাজক পরিবেশ থেকে মুক্তি চাই।
তিনি বলেন, ‘শাবি উপাচার্যের পদত্যাগই এ আন্দোলন থামানোর পথ। এ ছাড়া এ আন্দোলন থামানো যাবে না।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিককতা বিভাগের অধ্যাপক সূবর্ণা মজুমদার বলেন, ‘আমি আমার নৈতিক অবস্থান থেকে এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। শাবিপ্রবির উপাচার্যের বিরুদ্ধে এত আন্দোলন ও বিক্ষোভ হওয়ার পরও তিনি এখনো তার পদে অনড় আছেন। আমি শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাব আপনাদের যা কিছু দরকার হয় আমাদের জানান। আমরা সবসময় আপনাদের পাশে আছি।’
এসএন