র্যাগিং ও চিকিৎসাকেন্দ্র ভাঙচুরের ঘটনায় ইবির ৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ছবি সংগৃহিত
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেডিকেল সেন্টারে ভাঙচুর ও র্যাগিংয়ের ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া বাকি তিনজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিং ও চিকিৎসা কেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্র শৃঙ্খলা সভায় তাঁদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেডিকেল সেন্টারে ভাঙচুর ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। উভয় ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে মেডিকেল সেন্টারে ভাঙচুরের ঘটনায় আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্যকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়াও নবীন ছাত্রকে র্যাগিংয়ের ঘটনায় হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের মিজানুর রহমান ইমন ও হিশাম নাজির শুভকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। র্যাগিংয়ে জড়িত একই বিভাগের অন্য তিনজনকে (শাহরিয়ার পুলক, শেখ সালাউদ্দীন সাকিব ও সাদমান সাকিব আকিব) ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় তার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সভার সদস্য সচিব ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন
ক্যাম্পাস সূত্রে, গত ১০শে জুলাই রাত সাড়ে ১১টায় মেডিকেল সেন্টারের জরুরি বিভাগে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্যের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সাথে থাকা অন্য দুই শিক্ষার্থী সালমান আজিজ, আতিক আরমান কাব্যের সঙ্গে থাকলেও সরাসরি সংশ্লিষ্ট না থাকায় তাদের সতর্ক করা হয়েছে। এর আগে ভাঙচুরের ঘটনায় মেডিকেল কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৫ জুলাই ওই তিন ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করে তদন্ত কমিটি করে কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিনকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কাব্যকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিবেদনে মেডিকেলে ভাঙচুরের ঘটনায় অন্যদের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তবে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া গত ৯ সেপ্টেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থী লিখিতভাবে র্যাগিংয়ের অভিযোগ করেন তারই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে। পরদিন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্তরা হলেন, হিশাম নাজির শুভ, মিজানুর রহমান ইমন, শাহরিয়ার পুলক, শেখ সালাউদ্দীন সাকিব ও সাদমান সাকিব আকিব। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ইমন ও শুভকে স্থায়ী ও অন্য তিনজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, মেডিক্যাল ভাঙচুরের ঘটনায় কাব্যকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তার সাথে থাকা বাকি দুইজনের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাইনি তদন্ত কমিটি। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনো একশন নেওয়া হয়নি। তবে তাদের সতর্ক করা হয়েছে। আর র্যাগিংয়ের ঘটনায় ইমন ও শুভকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকি ৩ জনকে ১ বছরের জন্য সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও মিটিংয়ে আলোচনা সাপেক্ষে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেজুলেশনের কাজ সম্পন্ন হলে জড়িতদের অফিশিয়াল চিঠি পাঠানো হবে।