সিটি করপোরেশনে এলো সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
ইফতেখার আহমেদ ফাগুন
‘সিলেট সিটি কর্পোরেশন’র অংশ হলো ‘সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি)’। বিশ্ববিদ্যালয়টি আগে সদর উপজেলার টুলটিকর ইউনিয়নভুক্ত থেকে কাজ চালিয়ে গিয়েছে।
সম্প্রতি তাদের সিটি করপোরেশনের অন্তভুক্ত করা হয়েছে। সিলেট জেলা প্রশাসনের জারি করা গণবিজ্ঞপ্তির তালিকাতে নাম উঠেছে।
এরপর ১২ জানুয়ারি উপাচার্য ড. মো: মতিয়ার রহমান চৌধুরীর আমন্ত্রণে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বিকেল সাড়ে তিনটায় ক্যাম্পাস ঘুরতে আসেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার আলোচনা সভা হয়।
রেজিষ্ট্রার মো. বদরুল ইসলাম শোয়েবের পরিচালনায় সভায় এক সময় তারা সিলেটের মেয়রের কাছে নানা দাবী পেশ করেন।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আরিফুল হক চৌধুরীকে জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির বজ্র্য ব্যবস্থাপনা নিয়মানুসারে ও ভালোভাবে করতে হবে। এজন্য ক্যাম্পাসে একটি বজ্র্য স্টেশন তৈরি করতে হবে, সুপেয় জল সরবরাহের জন্য সংযোগ প্রদান করতে হবে, মাদানীনগর ঈদগাহ থেকে টিলাগড় ইকোপার্কের পথটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী গেট নির্মাণ করতে হবে, ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কে রাতের জন্য সৌরবিদুৎ বাতি স্থাপন করতে হবে, সীমানা প্রাচীর স্থাপন করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, তাদের পরিবারসহ অন্যদের হাঁটার জন্য ওয়াক ওয়ে বানাতে হবে, ড্রেনগুলো সংস্কার ও তৈরি করতে হবে এবং নিয়মিত মশার স্প্রে করতে হবে।
এই সময় তারা সিলেটের মেয়রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা-মাছের মাধ্যমে মশার বংশ নিধন, পরিবেশবান্ধব পলিথিন বজ্র্য ব্যবস্থাপনাসহ নানা ধরণের বর্জ্য ব্যবহার করে কম্পোস্ট সার বানানো, র্যাবিস ভ্যক্সিন প্রদান কার্যক্রম ভালোভাবে জানান।
মেয়েদের হলের নিরাপত্তা জোরদার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
সিলেটের মেয়র তাদের বলেছেন, ‘বাংলাদেশের কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম এই বিশ্ববিদ্যালয় সিলেটের নাগরিক ও মেয়র হওয়ায় আমার দুবলতার কারণ। আমি জানি, আপনাদের কাজ ও অবদান। আমাদের সিটি করপোরেশনের মধ্যে আসায় দুই পক্ষই লাভবান হয়েছি। ভবিষ্যতে তা ভালোভাবে জানা যাবে। আপনারা সবাই আরো বেশি নাগরিক সুবিধা পাবেন।’
তিনি জানিয়েছেন, ‘সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শাখার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বজ্র্য ব্যবস্থাপনা করা হবে।’
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মাধ্যমে একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন তৈরি করে দেবার নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের শহরের পানি নিস্কাষন ও ছাদকৃষি কাযক্রম ছড়িয়ে দেবার জন্য বৈজ্ঞানিক এবং কার্যকর পদ্ধতি আবিস্কার করতে অনুরোধ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বীকার করেছেন, ‘সিটি করপোরেশনের সুবিধা থেকে আমরা এতকাল বঞ্চিত ছিলাম। এখন থেকে সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হয়ে শহরের অবকাঠামোগত নির্মাণের অংশ হবে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নানা উন্নয়ন পরিকল্পনা আমাদের জন্য গ্রহণ করা হবে, সরকারীভাবে সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে আমাদের জন্য বাজেট আসবে। তাতে উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধাতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত মান অর্জন করবে এবং শহরকে আরো উন্নত করবে।’
সিলেটের মেয়র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এই আলোচনা সভায় ছিলেন অনুষদগুলোর ডিন, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, প্রক্টর, অফিসার পরিষদের সভাপতি, দপ্তর প্রধানরা।
নানা বিভাগের অধ্যাপকরাসহ ছিলেন বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
সিলেট সিটি কর্পোরশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার নূর আজিজুর রহমান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রূমা ও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ মতিউর রহমান খান আলোচনা সভায় যোগ দিয়েছেন।
সভাশেষে সিটি মেয়রকে ক্রেষ্ট উপহার দিয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
ওএস/২৪-১-২০২২।