শাবিতে পুলিশি আচরণ দুঃখজনক: শিক্ষামন্ত্রী

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের চড়াও হওয়ার ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেছেন, ‘শাবিতে পুলিশি আচরণ (অ্যাকশন) দুঃখজনক। কিন্তু তার আগে শিক্ষকদেরও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। দুটোই অনভিপ্রেত। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা অনশন থেকে সরে এসে আলোচনায় বসুক। তারা চাইলে অনশনরত অবস্থাতেও আলোচনায় বসতে পারেন। আলোচনাই একমাত্র সমস্যা সমাধানের উপায়।’
রাজধানীর হেয়ার রোডে শনিবার (২২ জানুয়ারি) রাতে শিক্ষামন্ত্রীর হেয়ার রোডের সরকারি বাসায় শাবিপ্রবি শিক্ষকদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আলাপ আলোচনায় মনে হয়েছে এখানে শিক্ষক শিক্ষার্থী ছাড়াও আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, আমরা খুব স্পষ্ট করে সেটা বুঝতে পারিনি বা বলতে পারছিনা কিন্তু আরও কারও এখানে ইন্ধন আছে কী-না বা থাকলেও সেটার ব্যাপকতা কত সেটা আমরা জানিনা। যা-ই হোক আমাদের মূল কথা হল শিক্ষার্থীরা অনশন করছে, তাদের স্বাস্থ্যহানি ঘটুক এটা আমাদের কাছে কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা অনতিবিলম্বে তাদের অনশন প্রত্যাহার করুক। এটি আমাদের চাওয়া, এটি আমাদের প্রত্যাশা আমাদের আপিল তাদের কাছে।
তারা যদি এই মুহুর্তে অনশন প্রত্যাহার নাও করে তবে যে কোনো সমস্যা সমাধানের সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে আলোচনা। আমরা চাই তারা আলোচনা করুক।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে শাবিপ্রবি’র শিক্ষক প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যলয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ।
শাবিপ্রবির পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক তুলসি কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক মহিবুল আলম, ভৌত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক রাশেদ তালুকদার, ফলিত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলাম এবং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন. খায়রুল ইসলাম রুবেল।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি মধ্য রাতে শাবিপ্রবি’র আজিজুন্নেছা ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে। ওই মিটিং এ তারা হল প্রভোস্টকে উপস্থিত হয়ে তাদের সমস্যা শোনার জন্য আহ্বান জানায় কিন্তু প্রভোস্ট রাতের বেলা হলের বাহিরে আসতে পারবেন না জানিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাতেই বিশ্বিবিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে। এখান থেকে আন্দোলনের সূত্রপাত হলে পরদিন আন্দোলন আরও ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর আন্দোলন আরও কঠোর হতে থাকে। শিক্ষার্থীরা হল প্রভোস্ট ও প্রভোস্ট কমিটির পাশাপাশি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলন শুরু করে।
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে গেলে শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনে আলোচনা করে তাদেরকে বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ জানান। প্রথমে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল শুক্রবার রাতেই ঢাকায় আসার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তারা আসেননি।
অপরদিকে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল শনিবার ঢাকায় এসেছেন। যারা কিছুক্ষণ পর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
এপি/এনএইচবি/এএস
