চবি ছাত্রলীগ সভাপতির পা টিপছেন ২ নেতা
একজন মোবাইল হাতে বিছানায় শুয়ে আছেন আর দুইজন পা টিপছেন। সম্প্রতি এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ছবিতে মোবাইল হাতে শুয়ে থাকা ব্যক্তিটি ১৭ বছর আগে ছাত্রত্ব পেরিয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল, আর পা টিপছেন শাখা ছাত্রলীগের উপ-কর্মসূচি বিষয়ক সম্পাদক শামীম আজাদ ও উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শফিউল ইসলাম।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের ৩১১নং কক্ষে বিলাসিতায় জীবনযাপন করে যাচ্ছেন সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। তিনজনের আসনটি তিনি একাই দখল করে আছেন। আবার নিজ কক্ষের দরজায় লেখা আছে রেজাউল হক রুবেল, সভাপতি, চবি ছাত্রলীগ। যেই কক্ষটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেক আগেই। এ ছাড়া বর্তমান কমিটির মেয়াদও শেষ হয়েছে অনেক আগে।
বর্তমান নেতা-কর্মীদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ তিনি। চবির পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ সেশনের এ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পার করেছেন ১৭ বসন্ত।
সোমবার (২০ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক গ্রুপে ছড়িয়ে পড়ে ছবিটি। এতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, এগুলো নতুন নয়। ছাত্রলীগ সভাপতি বিভিন্ন সময় তার কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। তবুও তিনি নিজেকে শোধরাননি কখনো। তা ছাড়া কর্মীরা বেশিরভাগ তার ৮-১০ বছরের ছোট, তাহলে এমন কাজ তো করানোই স্বাভাবিক। নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা না থাকায় এরকম সেশন গ্যাপ তৈরি হয়েছে। কেউই ছাত্র থাকা অবস্থায় নেতৃত্বের সুযোগ পান না। তাই ছাত্রলীগের অনুসারীরা ধরেই নিয়েছেন নেতৃত্বে আসতে হলে ক্যাম্পাসে ৮-১০ বছর থাকতে হবে কমপক্ষে। আমাদের এ জায়গাগুলোতে পরিবর্তন আনা উচিত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করি তাদের সঙ্গে পরিবার থাকে না। আমরা বড়ভাই ছোটভাই সবাই একসঙ্গে থাকি। আমার কোনো ছোটভাই অসুস্থ হলে আমি সেবা-যত্ন করি, আমি অসুস্থ হলে আমার ছোট ভাইয়েরা আমাকে সেবা-যত্ন করতে পারে এটাই স্বাভাবিক।
তিনি আরও বলেন, আমি যখন জুনিয়র ছিলাম তখনো আমার সিনিয়রকে সেবা-যত্ন করেছি, এখনো আমার জুনিয়রদের সেবা-যত্ন করি। কিছুক্ষণ আগে আমার এক ছোটভাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে দেখে আসছি। এই ঘটনাগুলো খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। এখন এটার একটা ছবি তুলে কেউ আমার বিরুদ্ধে অপরাজনীতি করার চেষ্টা করছে। এটা দুই-আড়াই বছর আগের ঘটনা। শরীরটা খারাপ ছিল, আমার পাগুলো ফুলে গেছিল। এটা মানুষ হিসেবে মানুষকে সেবা-যত্ন করা। এর চাইতে বেশি কিছু না।
এসজি