সাংবাদিক হেনস্তায় চবিসাসের অবস্থান কর্মসূচি ও কলম বিরতি
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কর্মরত দৈনিক সমকালের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মারজান আক্তারকে হেনস্তার ঘটনায় মানববন্ধন ও কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)।
রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমান, সহসভাপতি রুমান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম সৈকত, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আজহার, অর্থ ও ক্রীড়া সম্পাদক রোকনুজ্জামানসহ সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা। এতে একাত্মতা পোষণ করে চবি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ।
মানববন্ধনে নেতারা এ ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবি জানান। এর ব্যত্যয় ঘটলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন। তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এর আগে দুটি আল্টিমেটাম দিয়েও তারা কোনো পদক্ষেপে যায়নি। তাই এরপরেও যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয় কঠোর পদক্ষেপে যাবে সাংবাদিক সমিতি। পরে তারা ৫ ঘণ্টার জন্য কলম বিরতিতে যান।
সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চাকসু নির্বাচন হচ্ছে না, ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছে সাংবাদিক সমিতি। সেখানে সাংবাদিককে চিনতে না পারার অজুহাতে হেনস্থা করা হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, মারজানকে হেনস্থা করা মানে সবাইকে হেনস্থা করা। আমরা প্রশাসনকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি। ঘটনার ২১ দিন হয়ে গেলেও যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার পরেও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। অনতিবিলম্বে এটির সুষ্ঠু সমাধান না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাব।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মারজান আক্তার বলেন, ঘটনার ১৭তম দিনের পরেও কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা আমাকে হুমকি দিয়েছে, তারা স্বাচ্ছন্দ্যে আমার সামনে ঘুরে বেড়ায়। এই অবস্থায় তারা আমার ক্ষতিও করতে পারে। এর আগেও গত বছর সাংবাদিক হেনস্থার ঘটনাগুলোর সঠিক বিচার করতে পারেনি প্রশাসন। আমি চাই আমাকে যারা হুমকি দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত, গত ৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় চারুকলা ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মারধর করে শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ ভিএক্স ও বাংলার মুখের নেতা-কর্মীরা। এসময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতে হেনস্তার শিকার হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও দৈনিক সমকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মারজান আক্তার ও আরটিভির ফটো সাংবাদিক এমরাউল কায়েস মিঠু। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত মারুফ ইসলামসহ আরও বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ তাদের। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এ ঘটনার ১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি।
এসজি