কারমাইকেল কলেজ হোস্টেলে বহিরাগতদের হামলা, গ্রেপ্তার ৪
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুরের কারমাইকেল কলেজের জিএল হোস্টেলে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রংপুর মহানগর পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল কাদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম মিন্টু বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় আকাশ, খাইরুল ইসলাম, রবিউল হাসান,হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জিএল হোস্টেলে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে ১০ শিক্ষার্থী আহত হন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে বিক্ষোভ তুলে নেন তারা।
জানা গেছে, শনিবার দুপুরে কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসের বাংলা মঞ্চের সামনে মার্কেটিং বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী আহসানের সঙ্গে বহিরাগত এক মাদকাসক্ত টোকাই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এরই জের ধরে বহিরাগত টোকাইদের একটি গ্রুপ সংঘবদ্ধ হয়ে ওই শিক্ষার্থীর উপর হামলা করে। এ খবর জানতে পরে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এসে বহিরাগতদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ৪০-৫০ জন বহিরাগত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসের জিএল হোস্টেলে অতর্কিতভাবে প্রবেশ করে হামলা চালায়। এসময় তারা কয়েকটি রুমে ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় হল মনিটর আকিমুল ইসলাম ইমনসহ ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আকিমুল ইসলামকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে এ ঘটনায় কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমজাদ হোসেন ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে আমার শিক্ষার্থী নয় আমার সন্তানদের উপর হামলা করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নিতে মামলা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি তুলেছে, সেটিও আমরা দ্রুত বাস্তবায়ন করব।
কারমাইকেল কলেজ শিক্ষার্থী পরিষদের আহ্বায়ক রেজওয়ান আহমেদ সৌধ বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমরা সব সময়ই ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য অধ্যক্ষকে বহুবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু আজও আমাদের সেই দাবি বাস্তবায়ন করা হয়নি। বিকাল হলেই ক্যাম্পাসজুড়ে টোকাই, বহিরাগতসহ বিভিন্ন জায়গার মানুষজনের আনাগোনা বাড়ে। প্রায়ই মোবাইল ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনার খবর পাই আমরা। এতে করে আমাদের ক্যাম্পাসে আমরা নিজেরাই অনিরাপদ হয়ে পড়ছি। এ অবস্থার অবসানে কলেজ প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়াসহ হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এসজি