জ্বর-গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ দিয়েই চলছে মেডিকেল সেন্টার
জ্বর এবং গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) মেডিকেল সেন্টারের। এতে নিয়মিত জরুরী চিকিৎসা সেবার অভাবে নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভুগছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদেরকে বাহিরের ফার্মেসী থেকে বেশি টাকা খরচ করে প্রয়োজনীয় ঔষধ কিনতে হচ্ছে।
মেডিকেল অফিসার জানান, ঔষধ ক্রয়ের জন্য একাধিকবার আবেদন করা হলেও মেলেনি কোনো সুরাহা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২-৩মাস যাবৎ জ্বর এবং গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ দিয়ে মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসা সেবা চলছে। এতে জরুরী কোনো ধরনের চিকিৎসা সেবা নিতে পারছেন না তারা।
তাদের মতে, শিক্ষার্থীরা মাসের অধিকাংশ দিন নানান ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভোগেন। ফলে তাদেরকে মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে হয়। কিন্তু মেডিকেল সেন্টারে গেলে জ্বর এবং গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ ব্যতিত অন্যকোনো ঔষধ পাওয়া যায় না৷ এতে বাহিরের ফার্মেসীগুলো থেকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে প্রয়োজনীয় ঔষধ কিনতে হচ্ছে বলে জানান তারা।
মেডিকেল সেন্টারের নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হ্যাপি বাগচি বলেন, গত ২ মাসে আমিসহ আমার বান্ধবী বেশ কয়েকবার মেডিকেল সেন্টারে যাই। কিন্তু প্রতিবারই এইস এবং এন্টাসিড ব্যতিত অন্যকোনো ঔষধ পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, আমি যতবার মেডিকেল সেন্টার থেকে ঔষধ নিয়েছি ততবার আমাকে সহ যারা ঔষধ নিতে যায় তাদেরকে একই ঔষধ দেওয়া হয়।
মেডিকেল সেন্টারে প্রয়োজনীয় ঔষধ প্রদান না করার বিষয়ে জানতে চাইলে মেডিকেল অফিসার লিখন চন্দ্র বালা বলেন, আমরা মাত্র ২জন চিকিৎসক ১২হাজার শিক্ষার্থীর সেবা প্রদান করি। যেটি আমাদের জন্য খুবই সমস্যার সৃষ্টি করে। কারন ১হাজার মানুষের পেছনে ১জন করে ডাক্তারের প্রয়োজন। কিন্তু সে জায়গায় এখানে ১২হাজার শিক্ষার্থীর পেছনে নিয়মিত চিকিৎসক মাত্র ২জন।
অন্যদিকে, মেডিকেল সেন্টারে গত ২মাস যাবৎ এইস, এলাক্ট্রল এবং এন্টাসিড দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা লাগছে। যার জন্য আমরা গত জানুয়ারী মাসের ১৮তারিখ জরুরী ভিত্তিতে নতুন ঔষধ ক্রয় করার জন্য ঔষধ ক্রয় কমিটির সভাপতি বরাবর অনুলিপি প্রদান করি। কিন্তু এতে কোনো ফলাফল আসেনি। পরবর্তীতে নতুন করে ফেব্রুয়ারী মাসের ৫তারিখ আবার অনুলিপি প্রদান করি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ২জন চিকিৎসক শিক্ষার্থীদের যথোপযুক্ত চিকিৎসা সেবা প্রদান করার চেষ্টা করছি কিন্তু প্রয়োজনীয় ঔষধ না থাকলে চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায় না। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদেরকে বকাবকি করে এবং মাঝে মাঝে মেডিকেল স্টাফদের সাথে অশোভন আচরণ করে।
ঔষধ কিনতে বিলম্ব করার কারন সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার এবং ঔষধ ক্রয় কমিটির সভাপতি অভিষেক বিশ্বাস বলেন, মেডিকেল সেন্টার থেকে ঔষধ কেনার জন্য অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আমি চাইলে ঔষধ কিনতে পারিনা। ঔষধ কিনতে হলে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়৷ প্রথমে ঔষধ কিনার হলে পরিকল্পনা দপ্তর থেকে পরিকল্পনা করা হয়৷ তারপর ভিসি স্যার অনুমতি দিলে ঔষধ কিনা হয়৷
মেডিকেল সেন্টারে ঔষধ নেই, এবিষয়টি ভিসি স্যার জানেন কিনা এবিষয়ে তিনি বলেন, স্যারকে জানানো হয়েছে। স্যার অনুমতি দিলে ঔষধ কিনা হবে।
এএজেড