অফিস না করেই বেতন পাচ্ছেন বশেমুরবিপ্রবির চিকিৎসক
মাসের পর মাস অফিস না করেই নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) চিকিৎসক ডা. অভিষেক বিশ্বাস। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন।
সরেজমিনে গত ছয় মাস ধরে একাধিকবার গিয়েও মেলেনি তার দেখা। তবে চিকিৎসা কেন্দ্রের সূত্র অনুযায়ী, মাঝেমধ্যে তিনি অফিশিয়ালি গুরুত্বপূর্ণ কাজে হাজির হন। অভিযোগ রয়েছে, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কখনোই তাকে অফিস সময়ে সেবা দিতে দেখা যায়নি। তবে নিয়মিত গোপালগঞ্জ সদরে নিজস্ব ক্লিনিকে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব দপ্তরের তথ্য সূত্রে জানা যায়, প্রতি মাসে তিনি অফিস না করেই মাসে ৪৯ হাজার ৯০ টাকা বেতন পাচ্ছেন। যা হিসেবের অঙ্কে প্রায় অর্ধ লাখ টাকা।
হিসাব দপ্তরের কর্মকর্তাদের দাবি, ওই চিকিৎসককে কখনোই তারা দেখেননি। তিনি ব্যতীত অন্য দুইজন মেডিকেল অফিসার হিসেবে ডা. লিখন চন্দ্র বালা ও ডা. রোকাইয়া আলম কর্মরত থাকলেও তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মাঝেমধ্যে তারা অফিসে আসলেও অফিস সময় শেষ হওয়ার আগেই দুপুরের খাবারের বিরতিতে চলে যান।
অন্যদিকে প্রায়ই ডাক্তার শূন্য চিকিৎসা কেন্দ্র থাকলেও নিয়মিত উপস্থিত থাকেন নার্স, ব্রাদার ও বয় হিসেবে কর্মরত কর্মচারীরা। তারাই শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা শুনে ওষুধ প্রদানসহ ডাক্তারের ভূমিকা পালন করেন।
এদিকে প্রতি সেমিস্টারে চিকিৎসা ফি ২০০ টাকা করে নেওয়া হলেও চিকিৎসকের সেবা না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি, মাসের পর মাস আমারা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনও উদ্বেগ নেই। অপরদিকে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চব্বিশ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা থাকলেও আমরা তা পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে ব্যাপারে জানতে চাইলে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. অভিষেক বিশ্বাস জানান, আমি অফিস করি না, বেতন নেই সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বুঝবে। তবে আপনারা, শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করতে চাইলে অভিযোগ করতে পারেন। আমি তাদের সঙ্গে বুঝব।
এ প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, একজন চিকিৎসক এমন কথা বললে আমার আর কোনও কথা থাকে না। আপনারা উপাচার্যকে অবগত করতে পারেন।
এ ব্যাপারে উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব জানান, আসলে ডা. অভিষেক অনেক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন সার্জন। তিনি চুক্তি ভিত্তিতে আমাদের সঙ্গে তার চিকিৎসা সেবার কথা রয়েছে। তিনি অফিস না করলেও চেম্বারে আমাদের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিনামূল্যে সেবা প্রদান করে থাকেন। তা ছাড়াও করোনাকালীন সময়ে তিনি আমদের যথেষ্ট সাহায্য করেছেন। এসব বিষয় বিবেচনা করে তাকে নানা বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়।
এসআইএইচ