ঢাবির রোকেয়া হলের পাঁচ ছাত্রীর বিরুদ্ধে র্যাগ দেওয়ার অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বেগম রোকেয়া হলে পাঁচ ছাত্রীর বিরুদ্ধে র্যাগ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে দুই ঘণ্টা ধরে নাচতে বাধ্য করেন তারা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানীর কাছে অভিযোগ তুলেছেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগে অধ্যায়নরত ভুক্তভোগী ছাত্রী।
অভিযুক্তরা হলেন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী নাসরিন জাহান খুশি, জুলি মারমা, রিনাকী চাকমা, জান্নাত নিপু ও পূজা দাস।
ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘সিনিয়র আপুরা আমাকে জোর করে দুই ঘণ্টা ধরে নাচতে বাধ্য করেন। রাত ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত আপুরা আমাকে র্যাগ দেয়।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী আরও বলেন, ‘গতকাল রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এক্সটেনশান ভবনের ৩ নাম্বার রুমের আপুরা আমার রুমে আসেন। তারা হাসি-তামাশা করে চলে যান। এরপর পুনরায় ফিরে আসেন। তখন আপুদের মধ্যে ভাষাভিত্তিক বিভিন্ন আলোচনা চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় যথেষ্ট সম্মান ও বিনয়ের সঙ্গে জুলি আপুকে জিজেস করি, আপু, আমি ভাত খাই এটাকে আপনাদের ভাষায় কিভাবে বলে? এই কথার প্রত্যুত্তরে তিনি হঠাৎ রাগান্বিত হয়ে আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, তুই আমাকে জিজ্ঞেস করিস, তোর সাহস তো কম না! তোকে র্যাগ দিতে হবে। এরপর নাসরিন জাহান খুশি আপু বলে উঠলেন, শুধু ও না, এই ফ্লোরের প্রত্যেকটারে র্যাগ দিতে হবে। তখন নিপু আপু গিয়ে অন্য রুমের আমার আরেকজন সহপাঠীকে র্যাগ দেওয়ার জন্য নিয়ে আসেন। এরপর আমাদের দু’জনের উদ্দেশে জুলি আপু বলেন, তোরা ২ মিনিট ভেবে বল, তোরা কী করবি না হয় খারাপ কিছু ঘটবে। আমরা এমন কিছু দেবো যা তোরা করতে পারবি না। এরপর খুশি আপু বললেন, তোদের আজ নাচাবো। তিনি নিপু আপুকে বললেন, এই খারাপ একটা গান ছাড়। তোদের আজ খারাপ গানে নাচাবো। পেছন থেকে এক আপু বলছিলেন, র্যাগ দে, র্যাগ দে, চিল হবে চিল।’
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘আমি প্রশাসনিকভাবে হলে উঠেছি বললে তারা আমাকে ধমক দেন। তারা বলেন, প্রশাসন আবার কিসের? আমরা থাকতে দেই বলে তোরা থাকতে পারিস।’
তবে র্যাগিংয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন জান্নাত নিপু। তিনি বলেন, ‘র্যাগিংয়ের কোনো ঘটনার কথা তো আমরা জানি না। কাল রাতে আমরা সিনিয়র-জুনিয়র মিলে নেচেছিলাম। সেখানে র্যাগিংয়ের কথা কেন এলো তা তো জানি না।’
এ বিষয়ে জানতে রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাকে কল দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। হল প্রাধ্যক্ষকে সমাধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
/এএস