বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
অফিস কক্ষে নিয়মিত গান শোনেন কর্মকর্তা, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ
নিয়মিত অফিস রুমটিতে উচ্চশব্দে হিন্দি গান বাজান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)’র প্রশাসনিক কর্মকর্তা নীহার কান্তি বিশ্বাস। তিনি মার্কেটিং বিভাগে অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এর আগে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি পদন্নোতি পেয়ে অফিসার হয়েছেন।
শিক্ষার্থী ও তার সহকর্মীদের দাবি, শুধু গান নয়, অফিস চলাকালে নিয়মিত হিন্দি সিনেমা দেখাও তার প্রতিদিনের অভ্যাস।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাকেটিং বিভাগের বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীকে গালিগালাজসহ অসদাচরণ প্রদর্শনের অভিযোগ রয়েছে তার বিপক্ষে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রারকে নীহার কান্তি বিশ্বাসের বিপক্ষে এই অসদাচরণগুলোর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
তার একটি ঘুমানোর ছবিও তোলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় রুমে কাজের সময়।
আন্তর্জাতিক সম্পক বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই ছাত্র জানিয়েছেন, মার্কেটিং বিভাগের বই কুড়িয়ে পেয়ে জমা দিতে গেলে তাদের সঙ্গে উচ্চস্বরে বাকবিতন্ডাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি নেতিবাচক কথা বলেছেন তিনি সর্বশেষ। সেই শিক্ষার্থী ও তার বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের সদস্যটিকে তিনি মানসিক নির্যাতন করেছেন।
তারা অফিস রুমে গান বাজানো ও অসদাচরণের প্রতিবাদ জানালে একপর্যায়ে তিনি তাদের ওপর চড়াও হন। নীহার কান্তি বিশ্বাস ক্ষিপ্ত হয়ে বলেছেন, ‘আমার অফিসে আমি গান শুনি। যা ইচ্ছে তাই করব। আমি নীহার। গোপালগঞ্জ আমার বাড়ি। কেউ আমার কিছু করতে চাইলে করুক। শিক্ষার্থী, সাংবাদিক-এগুলো দেখবার সময় আমার নাই।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা সামনের রুমের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান তাপস বালাকে তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য নিয়ে আসলে এই কর্মকর্তা তার সামনেও গান শোনা অব্যাহত রাখেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীটি নাম প্রকাশ না করে বলেছেন ‘৮ ফেব্রুয়ারি আমাদের ভাইভা চলছিল। শেষে ফেরার পথে মার্কেটিং বিভাগের একটি বই কুড়িয়ে পেয়েছি। জমা দিতে গেলে ঐ বিভাগের অফিসে গেলে এই অফিস কর্মকর্তা নীহার কান্তি বিশ্বাস আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। হুমকি দিয়েছেন। আমরা দুজনে নিরাপত্তার জন্য রেজিষ্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
নীহার কান্তি বিশ্বাস যে বিভাগে কাজ করেন সেই মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র শিক্ষার্থী নবী বলেছেন, ‘নীহার বিশ্বাস আমাদের বিভাগের প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে এক বিরক্তিকর নাম। তিনি প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সাথে খারাপ ব্যবহার করেছেন। করেন। সবসময় তিনি স্থানীয়ভাবে তার ক্ষমতা দেখানোর চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে আমাদের শিক্ষকরা অবহিত।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নীহার কান্তি বিশ্বাস বলেছেন, ‘গণমাধ্যমে আমি কোনো মতামত দিতে চাই না। আমার অফিসে আমি গান শুনি কী না শুনি-এর জবাবদিহিতা কেন আমাকে দেওয়া লাগবে? এ নিয়ে আমি রেজিস্ট্রারের সাথে বুঝব।’
মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান তাপস বালা এই বিষয়ে বলেছেন, ‘আমাদের বিভাগের এই অফিস কর্মকর্তার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগপত্র দিয়েছে-এ আমি জানতে পেরেছি। সিসিটিভির ফুটেজ ও রেজিস্ট্রারের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো: মোরাদ হোসেন বলেছেন, ‘ভুক্তভোগী শিক্ষর্থীদের পক্ষে অভিযোগপত্র জমা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপাচার্য ড. এ.কিউ.এম. মাহবুব স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
ওএস।