র্যাগিংয়ে আহত করা হয়েছে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাগরকে
লেখা ও ছবি : আতোয়ার রহমান, প্রতিনিধি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
১২ মার্চ, শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহের ত্রিশালের বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (জাককানইবি)’র অগ্নিবীণা হলের ২০৪ নম্বর কক্ষে চারুকলা বিভাগের তিন ছাত্রের হাতে মারাত্মক র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-’২১ শিক্ষাবর্ষের সঙ্গীত বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র সাগর চন্দ্র দে। মাথা ও মুখমন্ডলে গুরুতর আঘাত পেয়ে এখন ময়মনসিংহ মেডিক্যোল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন সাগর।
সাগরের হল অগ্নিবীণার প্রভোস্ট কল্যানাংশু নাহা বলেছেন ‘আমি ১২ মার্চ সারাদিন অসুস্থ ছাত্র সাগরের শয্যাপাশে ছিলাম। তার সিটি স্ক্যান ও এক্স-রে রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা আশঙ্কামুক্ত বলে আমাদের নিশ্চিত করেছেন। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে তার খোঁজ রাখছি। তাকে আহত করার সমাধানে দ্রুতই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশা করছি।’
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়টির অগ্নিবীণা হলের আবাসিক ছাত্র ও সঙ্গীত বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র সাগর চন্দ্র দে’কে র্যাগিংয়ের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস।
এই অত্যন্ত অন্যায় ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল ১৩ মার্চ, রোববার, সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়টির কলা অনুষদ ভবনটির মূল ফটক আটকে দেন তার বিভাগের ছাত্র, ছাত্রীরা। তারা সেখানে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন ও প্রতিবাদে শ্লোগান দিতে থাকেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সেখান থেকে সাগরকে র্যাগিংয়ের প্রতিবাদে বিচার চেয়ে মিছিল নিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। আন্দোলনকারী ছাত্র, ছাত্রীরা দুপুর ১টা ৩০ মিনিট পযন্ত টানা অবস্থান ধর্মঘট পালন করে সেখানেও।
সঙ্গীত বিভাগের প্রতিবাদী ছাত্র, ছাত্রীরা বলেছেন, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের উপর যারা হামলা করেছে তারা সন্ত্রাসী। আমাদের সাগরকে তারা মেরে আহত করে দিয়েছে। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বারবারই তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদশন করে চলছে। আমাদের দাবি, এবার তাদের কোনো প্রকার ছাড় যেন দেওয়া না হয়। আমরা সবাই নির্যাতনকারীদের স্থায়ী বহিষ্কার চাই।’
আন্দোলন চলাকালে তাদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক তপন কুমার সরকার, আহত ছাত্র সাগরের অগ্নিবীণা হলের প্রভোস্ট কল্যানাংশু নাহা, সহকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ইরফান আজিজ, আসাদুজ্জামান নিউটন ও চন্দন কুমার পাল।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তপন কুমার সরকার বলেছেন, ‘আমরা তোমাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করছি ও এই অন্যায় ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেছেন, ‘হল প্রশাসন এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন।’
ওএস।