‘ইউক্রেন বিশ্ব রাজনীতির নিছক খেলায় পরিণত হয়েছে’
অসম যুদ্ধে ইউক্রেন বিশ্ব রাজনীতির নিছক খেলায় পরিণত হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রাজধানীতে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের (এসআইপিজি) সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: কার লাভ, কার ক্ষতি’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় এই যুদ্ধের প্রভাব এবং জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে বলেন, এই যুদ্ধে বৈশ্বিক মিলিটারি-ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লাভবান হবে এবং মানবতা হারবে। জাতিসংঘের সনদ ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনগুলো এখানে মানা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার দীর্ঘস্থায়ী সমস্যার ফলাফল হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, এই অসম যুদ্ধে ইউক্রেন বিশ্ব রাজনীতিতে নিছক একটি খেলার পাত্রে পরিণত হয়েছে।
যুদ্ধের নামে মানুষ হত্যা কখনই কাম্য নয় মন্তব্য করে অধ্যাপক হেলাল মহিউদ্দিন ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে অ-ইউরোপীয় শরণার্থীরা যে বর্ণবাদের মুখোমুখি হচ্ছে সেটি বন্ধ করার আহ্বান জানান।
আগের সমস্ত সংকটের মতো, এই যুদ্ধের ভয়াবহতাও নারী ও শিশুদের ওপরই পড়বে মন্তব্য করে ড. ইশরাত জাকিয়া সুলতানা বলেন, এ ধরনের সংকটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নারী-শিশুদের রক্ষার জন্য এখনো কোনো সামগ্রিক বৈশ্বিক কৌশল নেই।
পশ্চিমা মিডিয়ায় যুদ্ধের খবরে অসঙ্গতি এবং পক্ষপাতের ওপর দৃষ্টিপাত করে প্রথম আলোর কূটনৈতিক প্রতিবেদক রাহীদ এজাজ বলেন, ইউক্রেন সঙ্কট ঘিরে যে তথ্যযুদ্ধ চলছে সেই যুদ্ধে কোনো পক্ষ জিতবে তা এখনই বলা কঠিন। শুধুমাত্র প্রচলিত মিডিয়ার ওপর নির্ভর না করে অন্যান্য মিডিয়া যেমন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তথ্য খোঁজার ওপর জোর দেন তিনি।
এসআইপিজি’র সিনিয়র ফেলো ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কিয়েভের শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনই পুতিনের প্রধান লক্ষ্য। পুতিন এই যুদ্ধ বন্ধ করবেন না যদি না ইউক্রেন ঘোষণা করে যে তারা কখনো ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেবে না।
সিপিএসের সমন্বয়ক ও এনএসইউ’র রাষ্ট্র ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুল ওহাব সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন। সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক তৌফিক এম হক।
সেমিনারে শিক্ষাবিদ, গবেষক, বিশিষ্ট ব্যক্তি, কূটনীতিক, সাংবাদিক এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরইউ/আরএ/