১৪তম দিনের অনুষ্ঠানমালা
ফরিদা পারভীনের ‘অচিন পাখি’র পরিবেশনা
অমর একুশে বইমেলার ১৪তম দিন সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘আনিসুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, শামসুজ্জামান খান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গোলাম মুস্তাফা এবং এম আবদুল আলীম। আলোচনায় করেন সারওয়ার আলী ও সাইমন জাকারিয়া। সভাপতিত্ব করেন মুনতাসীর মামুন।
‘আনিসুজ্জামান : নিষ্ঠাবান গবেষক, অঙ্গীকারাবদ্ধ সমাজ-চিন্তক’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করে গোলাম মুস্তাফা বলেন, ‘আনিসুজ্জামানের গবেষণা শুধু বুদ্ধিবৃত্তির চর্চায় সীমিত নয়, এগুলোর সামাজিক উপযোগিতা ও গুরুত্বও অনস্বীকার্য। আমাদের জীবন-সমাজ-রাষ্ট্রে যেসব দ্বন্দ্ব নানা সময়ে প্রকট হয়েছে, তিনি সেগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং সেই দ্বন্দ্বগুলোর যুক্তিসঙ্গত মীমাংসায় উপনীত হওয়াকে তাঁর কর্তব্য বলে মনে করেছেন। এ-কারণেই তাঁর পাণ্ডিত্য ও গবেষণা বিদ্যায়তনিক সীমাবদ্ধতা ছাপিয়ে আমাদের জাতীয় জীবনের পাথেয় হয়ে উঠেছে।’
‘স্মরণ : রফিকুল ইসলাম, শামসুজ্জামান খান’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করে এম আবদুল আলীম বলেন, ভাষাসংগ্রামী-নজরুল গবেষক রফিকুল ইসলাম এবং ফোকলোরবিদ শামসুজ্জামান খান বাংলাদেশের সাহিত্য-সংস্কৃতির অঙ্গনে উজ্জ্বল দুটি নাম। আপন কর্ম-সাধনায় তাঁরা কীর্তিমান হয়েছেন। বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্য এবং বাঙালি সংস্কৃতির পঠন-পাঠন, গবেষণা এবং উৎকর্ষ সাধনে তাঁরা যে অবদান রেখে গেছেন, তা অতি গৌরবের।
আলোচকরা বলেন, আনিসুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম এবং শামসুজ্জামান খান- এই তিন মহীরুহ তাঁদের চেতনা ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ড দ্বারা আমাদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তচিন্তার অধিকারী এই তিন মনীষী বাঙালি জাতিসত্তাকে অন্তরে ধারণ করেছিলেন। স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রায় তাঁদের চিন্তাচেতনা ও দর্শন আমাদের পথ দেখাবে।
মুনতাসীর মামুন বলেন, আনিসুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম ও শামসুজ্জামান খান- তিনজনই সারাজীবন বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় নিবেদিত ছিলেন। তবু সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ছিল অবিচ্ছিন্ন। ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়াই ছিল তাঁদের জীবনের আদর্শ, সংগ্রাম ও স্বপ্ন। সামাজিক ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই তিন কীর্তিমান বাঙালিকে আমাদের স্মরণ করতে হবে।
লেখক বলছি
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন হরিশংকর জলদাস এবং মোহিত কামাল।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
মূল মঞ্চে আজকের অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি বদরুল হায়দার, হাসনাইন সাজ্জাদী এবং হানিফ খান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আহসানউল্লাহ তমাল, সাফিয়া খন্দকার রেখা, ডা. আওরঙ্গজেব আরু এবং মিজানুর রহমান সজল। সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘অচিন পাখি’ এবং মো. সাইফুল ইসলামের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উজান’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আবু বকর সিদ্দিক, আজগর আলীম, আলম দেওয়ান, রাজিয়া সুলতানা, সমীর বাউল, শান্তা সরকার, সুধীর মন্ডল। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বেণু চক্রবর্তী (তবলা), নির্মল কুমার দাস (দোতারা), আনোয়ার সাহদাত রবিন (কী-বোর্ড) এবং গাজী আবদুল হাকিম।
মঙ্গলবারের অনুষ্ঠান
মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলার ১৫তম দিন। মেলা চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্মরণ : জামিলুর রেজা চৌধুরী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আব্দুল কাইয়ুম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মোহাম্মদ কায়কোবাদ, মাসুদুল হক ও মুনির হাসান। সভাপতিত্ব করবেন আইনুন নিশাত।
সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এপি/