১১তম দিনের অনুষ্ঠানমালা
‘বিদ্রোহী’র মতো ৭ই মার্চের ভাষণও শিল্পময়তায় উত্তীর্ণ
অমর একুশে বইমেলার ১১তম দিন শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মূল মঞ্চে বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় ‘বিদ্রোহী কবিতার শতবর্ষ’ এবং ‘বিদ্রোহী কবিতা ও ৭ই মার্চের ভাষণ’ শীর্ষক আলোচনা।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর [তাঁর অনুপস্থিতিতে লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন সাহেদ মন্তাজ] এবং অধ্যাপক রাশিদ আসকারী। আলোচনায় করেন অনিরুদ্ধ কাহালী, শিহাব শাহরিয়ার এবং তপন বাগচী। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা।
‘বিদ্রোহী : অবতীর্ণ এক কাব্যশিল্প’ শীর্ষক প্রবন্ধে সৌমিত্র শেখর বলেন, ‘‘বিদ্রোহী’ যে-কোনো সময় বসে রচনা করা যায় না; অন্য কবি লিখতে পারেন না; যিনি ‘বিদ্রোহী’ লিখেছেন তিনিই আর একটি ‘বিদ্রোহী’ বা এর মতো কিছু লিখতে পারেন না। এ এক বিস্ময়-মহাসৃষ্টি; এ সৃষ্টি সময়রহিত; এটি অবতীর্ণ কাব্যশিল্প!’’
‘‘নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ’’ শীর্ষক প্রবন্ধে রাশিদ আসকারী বলেন, ‘‘নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালির জাতিসত্তার বিকাশে এক যুগলবন্দি অপরিহার্যতা। বহুত্ববাদিতা, পারস্পরিক সম্পৃক্ততা, যোগাযোগ, আত্মনির্ভরতা এবং আত্মঅন্বেষার এই যুগে বাঙালির সামাজিক ও জাতিগত বিকাশে নজরুলের কালজয়ী কবিতা ‘বিদ্রোহী’ যেমন ভূমিকা রাখতে পারে, তেমনি ছদ্ম-জাতীয়তাবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে যুগে যুগে বাঙালি জাতিকে সঠিক পথের দিশা দিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের কোনো তুলনা নেই।’’
আলোচকরা বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মতো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণও কাব্যিক শিল্পময়তায় উত্তীর্ণ। এই দুই অমর সৃষ্টিকর্মেই দুঃশাসনের শেকল ভেঙে নির্যাতিত মানুষের মুক্তির আহ্বান স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘোষিত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, বাংলা ভাষা তথা বিশ্বে মানুষের কল্যাণে যত শিল্প ও সফল কবিতা রচিত হয়েছে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা তার মধ্যে অন্যতম। আত্মপোলব্ধি ও আত্মপরিচয়ের সন্ধানে আমাদের বারবার ফিরে যেতে হয় নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা ও বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের কাছে।
লেখক বলছি
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি হারিসুল হক ও রাশিদ আসকারী।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
মূল মঞ্চে সাংস্কৃতিক পর্বে আজকের অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি শাহজাদী আঞ্জুমান আরা, হাসানাত লোকমান এবং আসাদুল্লাহ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মাসুম আজিজুল বাশার, সুকান্ত গুপ্ত এবং সায়েরা হাবীব। সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল মোঃ জাহিদুর রহমানের পরিচালনায় নাটক ‘অভিশপ্ত আগস্ট’।
ভাষাশহিদ মুক্তমঞ্চের অনুষ্ঠান
বিকেল ৩টায় এই মঞ্চে শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ। স্বরচিত কবিতাপাঠে অংশ নেন ২৫জন কবি। এই মঞ্চে তিনটি নতুন গ্রন্থ উন্মোচিত হয়। বিকেল ৪টায় প্রদর্শিত হয় হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত চলচ্চিত্র আগুনের পরশমণি।
শনিবারের অনুষ্ঠান
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে বইমেলার ১২তম দিন। মেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বেলা ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়েছে।
বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে অমর একুশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিশ্বজিৎ ঘোষ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন খালেদ হোসাইন, আহমাদ মোস্তফা কামাল এবং ফারহান ইশরাক। সভাপতিত্ব করবেন মফিদুল হক।
সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এপি/