‘ইতিহাস সংশোধিত হল’
ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির ভাস্কর্য স্থাপন
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীর ঐতিহাসিক ইন্ডিয়া গেটে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের আইকনিক নেতা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর গ্র্যান্ড হলোগ্রাম ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।
রবিবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভাস্কর্যটি উন্মোচন করেন।
এর আগে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী একটি টুইট বার্তায় ঘোষণা করেন, ইন্ডিয়া গেটে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর একটি বিশাল মূর্তি স্থাপন করা হবে। মূর্তিটি নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত এই একই জায়গায় নেতাজির একটি হলোগ্রাম আবক্ষ প্রদর্শিত হবে।
ইন্ডিয়া গেটের যেখানে এক সময় রাজা পঞ্চম জর্জের ভাস্কর্য ছিল, সেখানে এখন দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী নেতাজির ভাস্কর্য শোভা পাচ্ছে।
নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আইএনএ)’র নেতার ভাস্কর্যটি ভারতের প্রতি তার আত্মত্যাগের প্রতি কৃতজ্ঞতার একটি স্বীকৃতি।
বিভিন্ন মহল থেকে এই ভাস্কর্য স্থাপনকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর হলোগ্রাম ভাস্কর্যের উন্মোচনকে স্বাগত জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির এই উপস্থিতির মাধ্যমে সুদীর্ঘ সময় পর ইতিহাসের সংশোধন হল। সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকারী এই নেতার অবদানকে যথাযথভাবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে।’ সোমবার এক টুইট বার্তায় জয়শঙ্কর এ কথা বলেন।
পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দাবি করেছেন, তার সরকারের চাপের কারণেই ইন্ডিয়া গেটে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছে। পশ্চিম বাংলা সরকার সকল দলিল ও তথ্য পেশ করা সত্ত্বেও কেন্দ্র সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নেতাজির সকল ক্লাসিফাইড ডকুমেন্ট প্রকাশ না করায় তিনি কেন্দ্রের সমালোচনা করেন।
ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির ভাস্কর্য স্থাপনের মাধ্যমে তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করায় মহান নেতার মেয়ে অনিতা বসু সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
নেতাজির ভাইপো অর্ধেন্দু বসু সম্প্রতি এএনআই- কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘এটা একটা খুব ভাল পরিকল্পনা। কারণ সেখানে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত রাজা পঞ্চম জর্জে’র একটি ভাস্কর্য ছিল। আমি মনে করি- প্রধানমন্ত্রী মোদি নেতাজির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একদম দারুণ কাজটিই করেছেন। এতে তার পরিবারের সদস্যরা খুব খুশি।’
এই হলোগ্রাম ভাস্কর্যটি উন্মোচন করে মোদি ২০১৯, ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালের ‘সুভাষ চন্দ্র বসু জাপদা প্রবন্ধন পুরস্কার’ প্রদান করেন।
এই মহান মুক্তিযোদ্ধার জন্মবার্ষিকী পালন ভারতের রিপাবলিকান ডে’র অন্তর্ভুক্ত করার ফলে এ বছর ২৪ জানুয়ারির পরিবর্তে ২৩ জানুয়ারি থেকে ভারতে এই উদযাপন শুরু হয়েছে। ৩০ জানুয়ারি ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর হত্যার দিনে এই উদযাপন শেষ হবে।
১৮৯৭ সালে জন্মগ্রহণকারী নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ভারতের মুক্তি সংগ্রামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ঔপনিবেশিক শাসনের বিরোধীতা করে আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতা হিসেবে ব্রিটিশদের প্রতিরোধ করেন। তাঁর অন্তর্ধান এখনো রহস্য হয়ে রয়েছে।
বাসস/এপি/