৬ শিল্পী আবৃত্তি পদক, ৫৬ জন স্মারক সম্মাননা পাচ্ছেন
বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসব ২৭ জানুয়ারি থেকে
‘জন্মের সুবর্ণে জাগো সম্প্রীতির স্বরে, মুক্তির ডাক দেয় পিতা আজও ঘরে ঘরে’- স্লোগানে প্রথমবারের মতো পাঁচদিনের ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসব’ শুরু হচ্ছে ২৭ জানুয়ারি। আয়োজন করেছে দেশের আবৃত্তি সংগঠনগুলোর ফেডারেশন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে ঘিরে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ এ উদ্যোগ নিয়েছে।
এ আয়োজনে প্রথমবারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় আবৃত্তি পদক’ প্রদান করা হচ্ছে। মুজিববর্ষ থেকে প্রতি বছর এই পদক প্রদান করা হবে। একই সঙ্গে দেশের আবৃত্তি শিল্পে ব্যক্তি ও সাংগঠনিক পর্যায়ে অবদানের জন্য ৫৬ জন শিল্পী-সংগঠককে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি স্মারক সম্মাননা প্রদান করা হবে।
২০২০ সাল থেকে মুজিববর্ষ শুরু হওয়ায় ওই বছর থেকেই এই পদক প্রদান করার ঘোষণা দেয় আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ। পদকের অর্থমূল্য দুই লাখ টাকা। প্রথম তিন বছরের পদক এক সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা হচ্ছে। আগামী বছর থেকে জাতির পিতার জন্মদিন ১৭ মার্চ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে। পদকের অর্থমূল্য দেবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় আবৃত্তি পদক’ পাচ্ছেন- ২০২০ সালের জন্য গোলাম মুস্তাফা (মরণোত্তর), ২০২১ সালের আশরাফুল আলম ও সৈয়দ হাসান ইমাম এবং ২০২২ সালের জন্য ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় ও কাজী মদিনা।
বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি স্মারক সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন-নাজিম মাহমুদ (মরণোত্তর), অধ্যাপক নরেণ বিশ্বাস (মরণোত্তর), ওয়াহিদুল হক (মরণোত্তর), রণজিৎ রক্ষিত (মরণোত্তর), হেমচন্দ্র ভট্টাচার্য (মরণোত্তর), কাজী আরিফ (মরণোত্তর), রামেন্দু মজুমদার, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, লিয়াকত আলী লাকী, ম. হামিদ, হারুন অর রশীদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কেয়া চৌধুরী, ডালিয়া আহমেদ, মীর বরকত, শিমুল মুস্তাফা, নিখিল সেন (মরণোত্তর), অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী, কামরুল হাসান মঞ্জু (মরণোত্তর), কাজী আবু জাফর সিদ্দিকী (মরণোত্তর), মৃণাল সরকার (মরণোত্তর), গোলাম কুদ্দুছ, আতাউর রহমান, ফয়জুল আলম পাপপু, সুবর্ণা মুস্তাফা, ড. বিপ্লব বালা, ইস্তেকবাল হোসেন, লায়লা আফরোজ, হাসান আরিফ, বেলায়েত হোসেন, কামাল লোহানী (মরণোত্তর), মোহাম্মদ কামাল, রূপা চক্রবর্তী, আসাদুজ্জামান নূর এমপি, মো. আহকাম উল্লাহ, রেজীনা ওয়ালী লীনা, সাগর লোহানী, ড. আবদুল মালেক, তারিক সালাহউদ্দিন মাহমুদ (মরণোত্তর), কাজী মাহতাব সুমন, মাসুদুজ্জামান, এনামুল হক বাবু, নিমা রহমান, মাহিদুল ইসলাম, প্রজ্ঞা লাবনী, ইকবাল খোরশেদ, খালেদ খান (মরণোত্তর), অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, রাশেদ হাসান, খান জিয়াউল হক (মরণোত্তর), গোলাম সারোয়ার, মীর মাসরুর জামান রনি, রফিকুল ইসলাম, আজহারুল হক আজাদ, এসএম মোহসিন (মরণোত্তর) ও ইশরাত নিশাত (মরণোত্তর)।
বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আহকাম উল্লাহ বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৭শে জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১১টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে উৎসব উদ্বোধন ও পদক প্রদান করবেন।
এই উৎসবে জেলা পর্যায়ের আবৃত্তি সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা স্থানীয় পর্যায় থেকে অনলাইনে এই ঐতিহাসিক আয়োজনে অংশ নেবেন। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী ৬৪ জেলায় একই সাথে স্থানীয় সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে উৎসবের অনুষ্ঠানমালা চলবে।
অনুষ্ঠানে আরও একটি নতুন সংযোজন হলো- আবৃত্তিতে গত তিন যুগ ধরে যেসব প্রতিষ্ঠান নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে, সে সব প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি স্মারক প্রদান করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি স্মারক প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
মো. আহকাম উল্লাহ আরও জানান, উদ্বোধনী দিনে ‘শত আবৃত্তিতে বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হবে।
পাঁচদিনব্যাপী উৎসবে প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনসহ জেলায় জেলায় দলীয় ও একক আবৃত্তি পরিবেশিত হবে। এজন্যে ইতোমধ্যে সারা দেশের ২৯৭টি সংগঠন নিবন্ধন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সোহরাব হোসেন তালুকদার, যুগ্ম-সম্পাদক আজহারুল হক আজাদ, মীর মাসরুর জামান রনি, মাসুদুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আহসানউল্লাহ তমাল, অনুষ্ঠান সম্পাদক শহীদুল ইসলাম নাজু, প্রকাশনা সম্পাদক জি এম মোর্শেদ, অর্থ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক শিরিন ইসলাম, নির্বাহী সদস্য প্রশান্ত অধিকারী প্রমুখ।
এপি/