প্রস্তুত হচ্ছে শহীদ মিনার, ভাষা আন্দোলনের থিমে রঙিন দেয়ালচিত্র
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে প্রস্তুত করা হচ্ছে শহীদ মিনার। ধোঁয়া-মোছার পাশাপাশি, দৃষ্টিনন্দন করতে চলছে সাজসজ্জার কাজ। এ ছাড়া, ভাষা আন্দোলনের থিমকে সামনে রেখে শহীদ মিনারের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে তুলির আঁচড়ে ফুটে তোলা হচ্ছে নান্দনিক দেয়াল চিত্রে।
রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা ঘুরে দেখা যায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি। এ ছাড়া, শহীদ মিনারে জনসাধারণের প্রবেশে বাধা প্রদান করা হয়। শহীদ মিনারের চারপাশ জুড়ে দেওয়া হয়েছে ব্যারগেড। জানা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) ৮০০ সদস্য নিরাপত্তার কাজে কাজ করবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, নিরাপত্তার জন্য পলাশী থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে নজরদারি করা হবে। এ ছাড়া, শহীদ মিনারে আসা মানুষকে সার্চ করার জন্য আর্চওয়ে থাকবে। কোনো ব্যাগ কিংবা জিনিস নিয়ে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে উন্মুক্ত পরিবেশে এবার শহীদ মিনারে আসবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর সর্বস্তরের মানুষ শহীদ মিনারে আসবেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও আমাদের সহযোগিতা করছে। ২০ ফেব্রুয়ারি ৩টা থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। তিন ভাগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২০ তারিখ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা, ২১ তারিখ সকাল ৬টা থেকে পরের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত কাজ করবে নিরাপত্তা বাহিনী।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এক প্রেস ব্রিফিং করেন। অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে এ ব্রিফিং হয়।
এ সময় ঢাবি উপাচার্য বলেন, রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের বেদীতে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রীবর্গ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা।
এরপর পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন তিন বাহিনীর প্রধানরা, সন্মানিত ভাষা সৈনিকরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সন্মানিত সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অনুষদের ডিনরা ও হলের প্রাধ্যক্ষরা। এরপর সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের জন্য শহীদ মিনার উন্মুক্ত থাকবে।
এ ছাড়া, করোনা মহামারিতে গত দুই বছর সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন ও ব্যক্তি পর্যায়ে দুইজন একসঙ্গে শহীদ মিনারের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের অনুমতি পেতেন। তবে এবার সেই বিধিনিষেধ থাকছে না।
এমএমএ/