শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

জীবন্ত কথ্য ইতিহাস

সাহিত্যের সূত্রপাত হয়েছে গল্প বলার মাধ্যমে। মানুষ যখন গুহায় বাস করত, তখনো মানুষ গল্প বলত। এমনকি মানুষ যখন ভাষা আবিষ্কার করেনি, তখনো ছবি এঁকে গল্প বলার চেষ্টা করত। মানব সভ্যতার বিকাশে গল্পের বিস্তৃতি এত সুদূরপ্রসারী যে, বলা যায় মানব সভ্যতার সূচনাই হয়েছে গল্প বলার মাধ্যমে। তেমনি সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা সাক্ষাৎকার। এটিও এক ধরনের গল্প। জীবনের ছবি আঁকা, গল্প-আড্ডায় তার প্রকাশ ঘটানো। সাক্ষাৎকারে যত সহজে ভেতরের মানুষটিকে তুলে ধরা যায়, তা অন্য কিছু দিয়ে সম্ভব নয়। প্রশ্ন-প্রতিপ্রশ্ন ও উত্তর-প্রতিউত্তর আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে পারিপার্শ্বিক, সামাজিক, রাষ্ট্রিক এবং ব্যক্তিগত নানা প্রসঙ্গ প্রকাশ পায়। স্মৃতি-বিস্মৃতিময় জীবনের অনেক কথাই উঠে আসে মনের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগে। এ সব কারণে সাক্ষাৎকারের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।

লেখক মতিন রায়হান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। বর্তমানে বাংলা একাডেমির গবেষণা সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগে কর্মরত। তিনি মূল কবিতার মানুষ। কবিতার সঙ্গে বসবাস। শব্দের ভেতর শব্দ দিয়ে বাক্য নির্মাণ করাই যার কাজ। এ ছাড়াও বিভিন্ন আঙ্গিকে রয়েছে তার পদচারণা। তার লেখা ‘আলাপে আড্ডায় কৃতীমুখ’ বইটিতে কৃতীমুখদের সঙ্গে আড্ডার কথাগুলো উঠে এসেছে। বইটিতে রয়েছে দেশের শিল্প-সাহিত্যের দশজন প্রথিতযশা ব্যক্তির জীবনের অন্তরঙ্গ গল্প। কথায় কথায় এ সব গুণীজন খুলে বসেছেন জীবনের আলো-ছায়া-রোদমাখা স্মৃতিময় দিনগুলোর ঝাঁপি। উঠে এসেছে তাঁদের জন্ম ও জন্মস্থান, মা-বাবার কথা, শৈশব-কৈশোর, শিক্ষাজীবন, বর্ণাঢ্য কর্মজীবন, ঘর-সংসারসহ জীবনের আনন্দ-বেদনার নানা প্রসঙ্গ।

কথোপকথন দিয়ে শুরু। একাগ্রতার সঙ্গে পুরো উত্তর শুনে, ভেতর থেকে আবার প্রশ্ন তৈরি করা— এটিই সাক্ষাৎকারের মূল ধরন। কিন্তু আজকাল সেটি হারিয়ে যাচ্ছে। একগাদা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়, কেউ কারো সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ নেই। কম্পিউটারের কিবোর্ড চেপে তার উত্তর পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যাতে একাত্ম্য তৈরি হয় না। সম্পর্ক মধুর হয় না। ভেতরের সুর আঁচ করা যায় না। ‘আলাপে আড্ডায় কৃতীমুখ’ বইটি সাক্ষাৎকারের প্রকৃত স্বরূপ তুলে ধরে। যেখানে কথাগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে।

ওবায়েদ উল হক উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম চলচ্চিত্রকার। বর্ষীয়ান এই চলচ্চিত্র ও সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব তার নির্মিত সিনেমা ও জীবনের গল্প শুনিয়েছেন অন্তরঙ্গ আড্ডায়। সিনেমার সঙ্গে শিল্প-সাহিত্যের সম্পৃক্ততা ইতিহাস তুলে ধরেছেন। রাগ-ক্ষোভ-বেদনার সুর রয়েছে। পাওয়া না পাওয়ার ব্যথা বড়ই নিষ্ঠুর; কিন্তু এ নিষ্ঠুরতাও মধুর হয়ে ওঠে, যখন মানুষ তার অন্তরের কথাগুলো প্রকাশ করতে পারেন। বের করতে পারেন মনের ভেতরে জমানো দুঃখ। তার সঙ্গে আলোচনায় হিন্দু-মুসলিমের দাঙ্গার চিত্র উঠে এসেছে। এগুলো কথা প্রসঙ্গে। ১৯৪৬ সাল। রায়ট চলছে। যে রায়টের সাক্ষী ছিলেন তিনি। সে কথা বলতে গিয়ে ওবায়েদ উল হক জানান, ‘কী জঘন্য রায়ট! চোখের সামনে মানুষ মরতে দেখলাম। গা শিউরে ওঠে এখনো। রায়টের জন্য ছবির কাজ বন্ধ ছিল তিন মাস। তখন ছবির সামান্য কাজ বাকি। দাঙ্গা শেষ হওয়ার পর আবার শুরু হলো ছবির কাজ।’

বাংলাদেশের চিত্রকলার ইতিহাসে পথিকৃৎ শিল্পী সফিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে আড্ডার কথাও এ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে। আধুনিক কবিতার পুরোধা কবি আবুল হোসেন; তৎকালীন ভারত উপমহাদেশের নানা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রসর ব্যক্তিত্ব রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী কলিম শরাফী: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, দার্শনিক, প্রাবন্ধিক সর্বোপরি সজ্জন মানুষ সরদার ফজলুল করিম; মুসলিম নারীসমাজের প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা বেগম-এর সম্পাদক নূরজাহান বেগম; একুশের প্রথম কবিতা ‘কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি’র স্রষ্টা মাহবুব উল আলম চৌধুরী: আমাদের চিত্রকলার ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য কাইয়ুম চৌধুরী, উদ্ভিদ জিনতত্ত্ব বিজ্ঞানী ও প্রথিতযশা আলোকচিত্রী নওয়াজেশ আহমদ এবং নিবেদিতপ্রাণ ফোকলোর সংগ্রাহক মোহাম্মদ সাইদুরের সাক্ষাৎকার।
যাদের কথা এখানে উঠে এসেছে, তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে দীপ্যমান। বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি নির্মাণে সবাই বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তাদের অধ্যবসায়, কর্ম, রাজনৈতিক ক্রিয়াশীলতা, ব্যক্তিগত জীবনাচরণ আমাদের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছে। এ দেশের স্বাধিকার চেতনা, শিক্ষা ও সৃজনশীলতা বিকাশেও তাদের অবদান অনস্বীকার্য। যারা এ বইয়ে স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল হয়ে আছেন, তাদের কেউই আজ আর বেঁচে নেই। পৃথিবীর নির্মম সত্য মৃত্যুকে বেছে নিতে হয়েছে। কিন্তু নিজেদের কর্মের মাঝেই তারা বেঁচে থাকবেন। যে কারণে তাদের জীবনচরিত নিয়ে যে আলোচনা হয়েছিল, সেগুলো মলাটবদ্ধ করেছেন মতিন রায়হান।

শিল্পী সফিউদ্দিন আহমেদ ছিলেন শহুরে ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন শিল্পকলার পুরোধা ব্যক্তি। শিল্পের নানাদিক নিয়ে ছিল গবেষণা। কাজের মধ্য দিয়ে বাংলার রূপ তুলে ধরা। বাংলার সৌন্দর্যকে হারিয়ে না দেওয়ার যে আবেগ তার ভেতরে বিদ্যমান ছিল, তা এ সাক্ষাৎকারটি পাঠ করলে উপলব্ধি করা যায়। নিভৃতচারী ও সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন তিনি। শিল্পীসত্তা ও ব্যক্তিসত্তার সৌন্দর্য ফুটে উঠে তার কর্মে। তিনি ছাত্রজীবনে সাঁওতালদের জীবনচরিত নিয়ে ছবি আঁকতেন। সাঁওতাল গ্রাম তার ছবি আঁকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ১৯৩৭ সাল। সে সময় তিনি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বিহারের সাঁওতাল এলাকায় অনেক ছবি এঁকেছেন। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘১৯৩৭ সালে পুজোর ছুটি শুরু হলে আমরা সাঁওতাল এলাকায় যাই। সেই যে যাওয়া শুরু হয়েছিল তা অব্যাহত ছিল ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত। কোনো ছুটি শুরু হলেই বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে চলে যেতাম দেওগর, জেসিডি, গিরিডি, চাইবাসা বা দুমকায়।...’ এ যে ইতিহাসের টানাপড়েনেরই চিত্র, যা এখানে উঠে এসেছে। সফিউদ্দিন আহমেদ ভাষা আন্দোলন নিয়ে স্কেচ এঁকেছেন। তার আঁকাআঁকিতে চোখের অভিব্যক্তি প্রকাশ ঘটত। মূলত প্রকৃতিকে নানা রঙে ও মাধ্যমে চিত্রায়িত করতেন। যা এ গ্রন্থে উঠে এসেছে।

দেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী, সংস্কৃতসেবী ছিলেন কলিম শরাফী। ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে ছিল যার শক্ত অবস্থান। জেল খেটেছেন দিনের পর দিন। জেল-জুলুম-হামলা-মামলা নিয়েই তার জীবন চক্র বহমান ছিল। এ সব পুরোধা ব্যক্তিদের জীবনের কতটুকুইবা আমরা জানি!

১৯৪৩ সাল। তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। পড়াশুনা অসমাপ্ত ছিল। কিন্তু সেটিকে একপাশে রেখে রাজনীতিক জীবন শুরু করেন। দেশে তখন চরম দুর্ভিক্ষ। মানুষ খাবার পাচ্ছে না। অনাহারে মৃত্যু দেখাটা বড়ই কষ্টকর। নিরন্ন মানুষের হাহাকারের ধ্বনি পৌঁছে যায় কলিম শরাফীর কাছে। তিনি ছুটে যান অসহায়ের কাছে। খাবার, অন্ন-বস্ত্র জোগানের ব্যবস্থা করার জন্য নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। রাতদিন খেটেখুটে অসুস্থ হয়ে পড়েন এই ব্যক্তিত্ব। আবারও ঘুরে দাঁড়ানো। পড়াশুনায় খানিকটা মনোনিবেশ করা। গান গাওয়া। সংগঠন গড়ে তোলা। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনে নিজেকে সামিল করাই যেন তার জীবনের লক্ষ্য। তিনি ছিলেন মূলত সংগঠক। একের পর এক সংগঠন গড়ে তোলা। ‘গণনাট্য সংঘ’, ‘প্রান্তিক’- এসব সংগঠন তার হাতে গড়া। তিনি ছিলেন গণ-সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর উপদেষ্টা ও সভাপতি। ঢাকার ভেতরে গড়ে তুলেছিলেন সংগীত শিক্ষালয়। সেসব ইতিহাসই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে। সেখানে যেমন রাজনৈতিক জীবন প্রাধান্য পেয়েছে, তেমনি ব্যক্তি জীবনের কথাও রয়েছে।

এ ছাড়াও যাদের জীবনচরিত এখানে উঠে এসেছে, তারা প্রত্যেকেই স্বমহিমায় উদ্ভাসিত। জীবনকে উদযাপন করেছেন। জীবনের ধ্যানজ্ঞানই ছিল কর্ম। যে কর্ম পরিচয়ই তাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। এ রকম একটি বই সাহিত্য জগতে সংকটকালীন খুব গুরুত্বপূর্ণ। যখন ইতিহাসকে ভুলতে বসেছে, ইতিহাসের দায়ভার নেওয়ার মানসিকতা থমকে গেছে; তখন এ রকম ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের জীবনচরিত-কর্ম-রাজনীতি-অর্থনীতি এবং সমাজ সম্পর্কে তাদের ধ্যানজ্ঞান সামনে তুলে ধরাটা জরুরি। মতিন রায়হান যে কাজটি সাবলীলভাবেই উপস্থাপন করেছেন।

‘আলাপে আড্ডায় কৃতীমুখ’ বইটিতে মানুষ জীবনের অর্থ খুঁজে পাবে। অর্থবিত্তের বাইরে যে জীবনের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে, সেটি উপলব্ধি করা যাবে। যখন আমরা সরদার ফজলুল করিমের দারস্থ হই, তখন দেখি তার সাহিত্যের কী মান। তিনি তো মূলত স্মৃতিকথামূলক বই লিখতেন, অথচ তা তো আমাদের ইতিহাসেরই অংশ। এ বইয়ে আরও পরিষ্কারভাবে তার মতাদর্শিক অবস্থান ফুটে উঠেছে। যার জেলজীবনই ছিল স্মরণীয়। ঢাকা সেন্ট্রাল জেল ছিল তাদের বিকাশের অন্যতম মাধ্যম। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলে সহকর্মীদের গ্রেফতার, তাদের ওপর হামলা-মামলা প্রতিবাদে তাদের স্ট্রাইক, জেল ভাঙার ইতিহাস তো তারাই রচনা করেছে। যে ইতিহাসকে ফেলে রেখে সামনে এগুনো যায় না। এ ছাড়াও তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, লেখালেখি এবং মানুষের প্রতি দায়বোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এ গ্রন্থে।

মানুষ তো প্রতিনিয়ত মানুষের ইতিহাস জানতে চায়। তার সৃষ্টির মোহনার ইতিহাস জানতে চায়, সেটি জানানোর দায়ভার কেউ না কেউ নেন। মতিন রায়হান ঠিক সে কাজটিই করেছেন। যেটি ইতিহাসের বড় একটি অংশজুড়ে থেকে যাবে। একজন ব্যক্তির ত্রুটি-বিচ্যুতি, তার ভেতরের সুপ্ত প্রতিভা সমস্ত কিছুই উপলব্ধি করা যায় যদি তিনি তা লিখে বা বলে যান।মানুষ তো প্রতিনিয়ত মানুষের ইতিহাস জানতে চায়। তার সৃষ্টির মোহনার ইতিহাস জানতে চায়, সেটি জানানোর দায়ভার কেউ না কেউ নেন। মতিন রায়হান ঠিক সে কাজটিই করেছেন। যেটি ইতিহাসের বড় একটি অংশজুড়ে থেকে যাবে। একজন ব্যক্তির ত্রুটি-বিচ্যুতি, তার ভেতরের সুপ্ত প্রতিভা- সব কিছুই উপলব্ধি করা যায় যদি তিনি তা লিখে বা বলে যান। বইটিতে ব্যক্তির একান্ত ভুবন থেকে শুরু, দেশের রাজনীতি-অর্থনীতি এবং তাদের কর্মযজ্ঞের ইতিহাস পাওয়া যাবে। যাতে সে সময়কাল সহজেই ধরা যাবে। আমরা ধরতে পারব ব্রিটিশ আমল-ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ। এতে প্রকাশিত হয় মানুষের জীবনেতিহাস। এর রেশ ধরেই আমরা খুঁজতে পারব ব্রিটিশ আমলে সে সময়ে সরদার ফজলুল করিমে জেলসঙ্গী কারা ছিলেন কিংবা কলিম শরাফীর সঙ্গে সত্যেন সেনের বন্ধুতা কতটুকু ছিল। এগুলোই ইতিহাস।

ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সন্ধানও মিলে না। হয় তিনি লিখে যাননি কিংবা কেউ দায় নিয়ে লেখেননি। আবার কখনো কিছুটা পাওয়া গেলেও তা অসম্পূর্ণ। কথোপকথনে সে বিষয়টি পূর্ণাঙ্গতা পায়, ব্যক্তিকে যখন একের পর এক বিষয় জিজ্ঞাসা করা হয়, তখন তার ভেতর থেকে গল্পের ফুলঝুড়ি বের হয়ে আসে। একের পর এক ইতিহাস টেনে কথা চলতে থাকে। এ যেন শেষ হওয়ার নয়।

এখানে প্রকাশিত হয়েছে সূচিবদ্ধ ব্যক্তিবর্গের অন্তরের কথা। হৃদয়ের ভেতরে যে কথাগুলো জমাট বেঁধে ছিল, সেগুলো প্রস্ফুটিত হয়ে ফুটেছে। যার গুরুভার নিয়েছিলেন মতিন রায়হান। ঘরোয়া মেজাজে শিল্পী-সাহিত্যিক-পণ্ডিত ব্যক্তিরাও কতটা নিজেকে খুলে বসতে পারেন, তা এ রকম বই পাঠ করলে উপলব্ধি করা যায়। প্রেম-বিয়ে-খুনসুটি এবং ভাঙাগড়ার যে মেলবন্ধন তা ঘটিয়েছে এ অমলিন ইতিহাস। যে ইতিহাসকে ইতিহাসের কাছে রেখে যাওয়ার দায়বদ্ধতা থেকেই এমন বই রচিত।

মতিন রায়হানের ‘আলাপে আড্ডায় কৃতীমুখ’ বইটি প্রকাশ করেছে কথাপ্রকাশ। বইটির গায়ের মূল্য ৩০০ টাকা।

আরএ/

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি