শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের জন্মদিন আজ
অবিসংবাদিত জাতীয় নেতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদের অন্যতম প্রবক্তা ও উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ শেরেবাংলা আবুল কাশেম (এ কে) ফজলুল হকের ১৪৯তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৮৭৩ সালের আজকের এই দিনে ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরের সাতুরিয়া গ্রামের মিঞা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু, হোসেন সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানীসহ বড় বড় রাজনীতিবিদদের কাছে তার পরিচিতি ছিল হক সাহেব নামে।
এই মহান নেতা ছেলেবেলা থেকেই ছিলেন প্রখর মেধাবী। ইংরেজি-গণিত-আইনসহ নানা বিষয়ে নেন শিক্ষা। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর, যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী, অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, কলকাতা সিটি করপোরেশনের প্রথম মুসলিম মেয়র এবং আইনসভার সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনেও তার অবদান ছিল। ১৯৪০ সালে তিনি ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি ২১ দফা দাবিরও প্রণেতা ছিলেন।
এ কে ফজলুল হক ছিলেন অবিভক্ত বাংলার সাধারণ মানুষের নেতা। তবে জনপ্রিয় হন শেরেবাংলা নামে। এক সময় ভারতবর্ষে রাজনীতির কেন্দ্রে ছিলেন তিনি।
সাধারণ মানুষের নেতা হিসাবে, তাদের দুঃখ দুর্দশায় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। বিশ শতাব্দির শুরুর দিকে, বাঙালি মুসলিমরা শিক্ষা দীক্ষায় পিছিয়ে থাকলেও, তিনিই সরব হয়ে ওঠেন। রাখেন অগ্রণী ভূমিকা।
মুসলিম লীগ গঠনেও অনন্য ভূমিকা রেখেছেন এই মহান নেতা। ১৯৩৫ সালে তিনি কলকাতার মেয়র, ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত ফজলুল হক অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী এবং ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন তিনি।
অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায়, কৃষকদের কথা চিন্ত করে ও কৃষকের দুঃখ মোচনে ঋণ সালিশি আইনসহ কয়েকটি আইন পাস করেন তিনি। ব্রিটিশ রাজ্যের ফর্মুলা অনুযায়ী, দুই বাংলার বিভক্তিতে ভেঙে যায় শেরে বাংলার হৃদয়। তিনি চাননি বাংলার বিভক্তি।
দেশভাগের পর কিছু সময়, রাজনীতি থেকে সরে এসে, আইন পেশায় বেশি নিয়োজিত হন। তাতেও মন থিতু হয়নি। ভাষা আন্দোলনের পরই আবার সরব হন রাজনীতির মাঠে। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়ের মধ্যে দিয়ে হন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
১৯৬২ সালে ১৭ এপ্রিল না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বাংলার বাঘ, দুঃখী মানুষের নেতা, কৃষকের নেতা এ কে ফজলুল হক।
আরএ/