অনুবাদ সাহিত্য পুরস্কার পেলেন আলম খোরশেদ ও রওশন জামিল
বাংলা ট্রান্সলেশন ফাউন্ডেশন দুই গুণীর হাতে তুলে দিলো অনুবাদ সাহিত্য পুরস্কার-২০২১। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বিকালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা বিভাগে পুরস্কৃত হলেন খ্যাতিমান অনুবাদক আলম খোরশেদ। অনুবাদ সাহিত্য পুরস্কার বিভাগে বর্ষসেরা অনূদিত বই বিভাগে পুরস্কৃত হলেন অনুবাদক রওশন জামিল তাঁর অনূদিত আলেক্সান্ডার দ্যুমার উপন্যাস ’কালো টিউলিপ’র জন্য।
অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত অনুবাদকদের হাতে আজীবন সম্মাননার জন্য ১ লক্ষ ও বর্ষসেরা অনূদিত বইয়ের জন্য ৫০ হাজার টাকার অর্থ সম্মানী তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও তাঁদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও উত্তরীয় তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা ট্রান্সলেশন ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক অনুবাদক আনিসুজ জামান। প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন কথাসাহিত্যিক, কবি ও অনুবাদক মাসরুর আরেফিন। সভাপতিত্ব করেন অনুবাদক অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস। তিনি পুরস্কার নির্বাচন কমিটিরও সভাপতি ছিলেন।
স্বাগত বক্তব্যে অনুবাদক আনিসুজ জামান বলেন, একটি দেশের সাহিত্য একই সঙ্গে সমৃদ্ধ ও আন্তর্জাতিক হয়ে ওঠে অনুবাদের মাধ্যমে। এমনকি জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ইতিহাস-দর্শনেও পৃথিবী সমৃদ্ধ হয়েছে অনুবাদের মধ্য দিয়ে। তাই, আমরা দেখতে পাই, অনুবাদকর্মকে (ট্রান্সলেশন ইন ও ট্রান্সলেশন আউট উভয় ক্ষেত্রেই) যে জাতি যত বেশি গুরুত্ব দিয়েছে সে জাতি তত বেশি অগ্রসর হয়েছে।
আনিসুজ জামান আরও বলেন, বাংলাদেশের অনুবাদকরা পর্যাপ্ত সামাজিক, সাহিত্যিক ও অর্থনৈতিক স্বীকৃতি পান না। দেশের অনুবাদকদের উৎসাহ প্রদান করতে বাংলা ট্রান্সলেশন ফাউন্ডেশন ‘বর্ষসেরা অনূদিত বই’ ও ‘অনুবাদক আজীবন সম্মাননা’ প্রতি বছর প্রদান করবে। প্রতি বছর প্রকাশিত অনূদিত গ্রন্থ থেকে একটি বইকে পুরস্কৃত করা হবে। এবং একজন অনুবাদককে দেশের অনুবাদ-সাহিত্যে তাঁর সামগ্রিক অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি একটি অনুবাদ পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হবে।
প্রধান আলোচক মাসরুর আরেফিন বলেন, অনুবাদ সাহিত্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রত্যাশা অনুযায়ী কোনো কাজ আমরা করতে পারিনি। এখনো অনেক ক্লাসিক সাহিত্য অনুবাদ হতে বাকি আছে। আমরা এই ফাউন্ডেশনের দিকে তাকিয়ে থাকব, সেই সঙ্গে আমি নিজেও সব ধরনের সহযোগিতা করব।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, আমরা বহুদিন থেকে এ রকম একটি প্লাটফরম প্রত্যাশা করে এসেছি। বাংলাদেশে অনুবাদ সাহিত্য নিয়ে মানুষের আগ্রহ থাকলেও উচ্ছ্বাস খুব কম। তবে এখন তরুণরা উঠে আসছেন, অনুবাদকদের যোগ্য সম্মান তারা দিতে শিখছেন। আমরা এই প্লাটফরমের মধ্য দিয়ে অনুবাদ সাহিত্যের সামগ্রিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারি।
অনুষ্ঠানে অনুবাদ সাহিত্য পত্রিকা ‘যুক্তস্বর’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এবং চর্যাপদের গান পরিবেশন করে ভাবনগর ফাউন্ডেশনের সাধুসঙ্গ।