নির্মিত হলো ডকু ফিল্ম ‘হাজংদের জীবন সংগ্রাম’
ছবি: সংগ্রহ
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধসহ নানা সময়ে আদীবাসী হাজং জনগোষ্ঠীর ভূমিকা ইতিহাসে বিশেষ জায়গা করে আছে। সংস্কৃতিজন সুজন হাজং-এর 'হাজংদের জীবন সংগ্রাম' কবিতা অবলম্বনে এবার নির্মাণ হলো ডকু ফিল্ম ‘হাজংদের জীবন সংগ্রাম’। এটি পরিচালনা করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি।
জানা যায়, গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে হাজং জাতিগোষ্ঠী খুব দাপটের সঙ্গে বসবাস করেছেন, লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। ঐতিহাসিক ‘হাজং বিদ্রোহ’, ‘তেভাগা আন্দোলন’, ‘টঙ্ক আন্দোলন’ ইত্যাদির নেতৃত্বের সারিতে হাজংদের ছিল ভূমিকা অগ্রণী।
হাজং সম্প্রদায় বাংলাদেশ ও ভারতের আদিবাসী। বাংলাদেশের নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলায় এবং শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলা, ঝিনাইগাতী উপজেলায়, ময়মনসিংহ জেলার উত্তর অঞ্চলে এবং সিলেট জেলায় তাদের বসবাস। হাজং জনগোষ্ঠীর লড়াই-সংগ্রাম, জীবনযাপন নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘হাজংদের জীবন সংগ্রাম’।
এ প্রসঙ্গে নির্মাতা বলেন, ‘ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ভারত ভাগ, মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তীতে নিজেদের টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম ইত্যাদি ক্ষেত্রে হাজং জনগোষ্ঠীর সাহসী ভূমিকা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারী হাজংদের জীবন খুব কাছ থেকে দেখার চেষ্টা করেছি বিগত দুই বছর, সম্প্রতি ডকুফিল্মটির চিত্রধারণ আমরা সম্পন্ন করেছি।’
সুজন হাজং বলেন, আমার লেখা ‘হাজংদের জীবন সংগ্রাম’ কবিতাটিতে বীরাঙ্গনা শহীদ হাজংমাতা রাশিমণির আত্মত্যাগ, নারীর সম্ভ্রম রক্ষা, হাজংদের সুদীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য, তাদের বিলীয়মান সমৃদ্ধ সংস্কৃতির কথা, দুঃখ ও বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছি। ডকুফিল্মটিতে প্রান্তিক হাজং সম্প্রদায়ের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, টংক আন্দোলন, জমিদার প্রথা উচ্ছেদ, হাতি খেদা আন্দোলন, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের বীরত্ব ও সাহসিকতার গল্প নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি সুনিপুণভাবে চিত্রায়িত করেছেন।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি বিরিশিরি, নেত্রকোণার প্রযোজনায় নির্মিত ডকু ফিল্ম আগামী ৩১ জানুয়ারি ২০২২ হাজংমাতা ‘শহীদ রাশিমণি দিবসে বিশেষ প্রদর্শনী আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে সংশ্লিষ্টদের। ডকু ফিল্মটির চিত্রগ্রহণ করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক কমল চন্দ্র দাস ও আশিক মাসুদ।