সেলিম আল দীন পাঠাগার আলো ছড়াচ্ছে সখীপুরে
পাঠাগার হচ্ছে মানুষের পরম নির্ভরযোগ্য বন্ধু ও পথপ্রদর্শক। এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সামনে রেখে বাংলা নাটকের গৌড়জন সেলিম আল দীনের নামে টাঙ্গাইলের সখীপুরের কচুয়া গ্রামে একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বইবান্ধব সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ‘বই পড়ি নিজেকে গড়ি’ স্লোগান ধারণ করে অনেক আগে থেকেই পাঠাগারের কার্যক্রম চললেও সম্প্রতি টিনের আধাপাকা ঘর করা হয়েছে নিজস্ব জমিতে। সপ্তাহে সাতদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে পাঠাগারটি। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই পাঠাগার।
রবীন্দ্র রচনাবলীসহ পাঠাগারে রয়েছে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, সাময়িকীসহ কয়েক হাজার বই। গ্রামীণ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে পাঠাগারটি গড়ে উঠেছে। খেলাধুলাসহ নানাবিধ সুযোগ সুবিধাও রয়েছে পাঠকের জন্য। পাঠক যাতে সমসাময়িক বিষয়ে সম্যক ধারণা পেতে পারে এজন্য দেশ-বিদেশে খবরাখবর, অনুষ্ঠানাদি দেখার জন্য পাঠাগারে আছে টেলিভিশন। পাশেই রয়েছে ‘পাঠকের কফি হাউজ’, খোলাপ্রান্তর। সম্পূর্ণ বিনা খরচে পাঠক এখানে বই পড়তে পারবেন। এমনকি বাড়িতেও নিয়ে যাওয়া যাবে। তবে নির্দিষ্ট সময়ে তা ফেরত দিতে হবে।
পাঠাগারের একটি ডিজিটাল রূপ দেওয়া হবে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পাঠাগার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য শেয়ার করা হচ্ছে। পাঠাগারের ফেসবুক পেজের লিংক হচ্ছে www.facebook.com/selimaldinpathagar.
পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক ও কলামিস্ট ড. হারুন রশীদ বলেন, ‘আমরা এখানে একটি কালচারাল ইউনিভার্সিটি গড়ে তুলবো। তারই অংশ হিসেবে একটি সাংস্কৃতিক বলয় সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা এবং রবীন্দ্রোত্তর কালের শ্রেষ্ঠ নাট্যকার সেলিম আল দীনের নামে এই পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তিনি এ এলাকায় এসেছেন। এখানকার মান্দাই নৃ-গোষ্ঠী নিয়ে ‘বনপাংশুল’ নামে নাটক লিখেছেন।
আমরা পাঠাগারের মাধ্যমে তার স্মৃতি ধরে রাখতে চাই। তথ্যপ্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের যুগে নতুন প্রজন্ম মোবাইল ও ফেসবুকমুখী হচ্ছে। তাদের বইমুখী করার চ্যালেঞ্জ নিয়েই পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে একটি শিশুপার্কও প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
পাঠাগার থেকে মেধাবৃত্তি, শিশু-কিশোর, পাঠকের লেখা নিয়ে ‘রোদ্দুর’ নামে সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশসহ নানামুখী সৃজনশীল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে এর কর্মপরিধি আরও বাড়বে বলে জানান পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ড. হারুন রশীদ। তিনি বলেন, বইপ্রেমী পাঠকের কোলাহলে মুখরিত থাকুক পাঠাগার প্রাঙ্গণ। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতাও কামনা করছেন তিনি।