রবীন্দ্রনাথের 'সভ্যতার সংকট' প্রবন্ধের প্রত্যাশিত মহামানবই বঙ্গবন্ধু: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ তার 'সভ্যতার সংকট' প্রবন্ধে জাতির সংকট মোচনে এক মহামানবের আগমন প্রত্যাশা করেছিলেন। সেই প্রত্যাশিত মহামানবই আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। বাঙালি তথা উপমহাদেশের ক্রান্তিলগ্নে সেই মহামানবের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গভীর অধ্যাত্মবিশ্বাসী এ দুই মহাপুরুষের চিন্তাভাবনা ও কর্মকাণ্ডে বাংলা ভাষা ও বাঙালির প্রতি ছিল অপরিসীম প্রেম।
প্রতিমন্ত্রী আজ বুধবার (১৮ মে) বিকালে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত সেমিনার ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। সেমিনারে 'রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা দর্শন' শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ। আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসর ও সাবেক তথ্য কমিশনার ড. খুরশীদা বেগম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান।
অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, রবীন্দ্রনাথ গতানুগতিক, জীবনের সঙ্গে সঙ্গতিহীন, যান্ত্রিক, পুঁথিগত শিক্ষাদান পদ্ধতির বিরোধী ছিলেন। তিনি পাঠদানের ক্ষেত্রে ভ্রমণ, প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ, গল্পের ছলে পাঠদান, বিতর্ক ও আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষা এবং প্রত্যক্ষ কাজের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছেন। বই পড়া আনন্দের একটা অংশ হিসেবে মনে করতেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথের দর্শনকে হৃদয়ে ধারণ করতেন। ১৯৬৬ সালের ছয়দফার কাউন্সিল অধিবেশন তিনি শুরু করেন 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি' দিয়ে। তখনই তিনি রবীন্দ্রনাথের এ গানটি ভবিষ্যৎ স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসাবে মনে মনে স্থির করেন। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ আনন্দের সঙ্গে শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। সেজন্য আমাদের নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা দিতে হবে আনন্দঘন পরিবেশে।
ড. আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেন, লেখাপড়ার সর্বোচ্চ পর্যায় হচ্ছে মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানো। আমাদের সেটিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। এসময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা ভালো ডাক্তার, প্রকৌশলী, আমলা, বিজ্ঞানী হচ্ছি- ভালো মানুষ কি হচ্ছি?
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন রবীন্দ্রসংগীতের বিশিষ্ট শিল্পী অনিমা রায়।
এপি/