দেশের অন্যতম প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পাঞ্জেরী পাবলিকেশনসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর)।
দীর্ঘ ২৮ বছরের পথ চলায় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানটির শুভনুধ্যায়ী হিসেবে থাকায় সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পাঞ্জেরী পাবলিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকাশক কামরুল হাসান শায়ক।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি স্বপ্ন বিনির্মাণে বিভোর হয়েছিলাম। বাংলাদেশের প্রকাশন সেক্টরের উন্নয়ন ও পরিবর্তনের স্বপ্নই পাঞ্জেরী পাবলিকেশনসের জন্মের প্রত্যয়। আমাদের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় মেধা, শ্রম ও সমর্থন দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন দেশের বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, পাঠক, শিক্ষার্থী ও এক ঝাঁক সহযোদ্ধা। তাদের প্রতি ভালোবাসা ও অশেষ কৃতজ্ঞতা।’
কামরুল হাসান শায়ক বলেন, ‘আমাদের এ পথচালায় সবার সহযোগিতা আমরা একান্তভাবে কামনা করছি। আজ পাঞ্জেরীর জন্মদিনে সবার প্রতি শুভেচ্ছা, প্রগাঢ় ভালোবাসা।’
১৯৯৪ সালের ১৯ নভেম্বর পাঞ্জেরী জন্ম হলেও ২০০০ সালে এটি লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে পাঞ্জেরী পাবলিকেশনস ২২ বছর পূর্তি হলো।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
ছাত্ররা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করলে বিএনপি স্বাগত জানানোর পাশাপাশি সহযোগিতাও করবে। কিন্তু সরকারে থেকে দল গঠন করলে দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না বলেও সতর্ক করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, ‘ছাত্ররা দল গঠন করলে স্বাগত জানাই। সরকারে কিছু থাকবে আবার কিছু লোক সরকারের সহায়তায় দল গঠন করবে এটা হতে পারে না। নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচন দিতে হবে। আর নয়তো জনগণ মেনে নেবে না।’
শনিবার রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের খেলার মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিল এবং দরিদ্রদের শীতবস্ত্র ও শাড়ি বিতরণ শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আপনারা দল করলে দল করেন। আমরা আপনাদের স্বাগত জানাব, সহযোগিতা করব। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা একটা সুষ্ঠু নির্বাচনে যাওয়ার জন্য কাজ করব। একই সঙ্গে আপনাদের অনুরোধ জানাব, অযথা কোনো সংঘাতমূলক কথা রাজনীতির মধ্যে না আনাই ভালো হবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘হাসিনা পালানোর কারণে আমরা এখন দম ছেড়ে নিশ্বাস নিতে পারতেছি। দেশে এখন আতঙ্ক নেই। ১৮ কোটি জনগণের বুকে পাথরের মতো বসে শাসন করেছে। হাসিনা আগেও ষড়যন্ত্র করেছে, দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে এখনো ভালো হয়নি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারতের আশ্রয়ে থেকে দেশ নিয়ে দুষ্টুমি করছে। হাসিনা অনেক মা-বাবার বুক খালি করেছে। এ নিয়ে হাসিনা কোনো অনুশোচনা করে নাই। ন্যূনতম সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিতে আমরা বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’
ফখরুল বলেন, ‘পলাতক হাসিনা সরকারের রুগ্ণ অর্থনীতির কারণে এখন বাজারদর বৃদ্ধি হয়েছে। দক্ষিণখানের গুমের শিকার মুন্নার মা-বাবার কান্না দেখে আমি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। পলাতক হাসিনা দেশে আয়নাঘর সৃষ্টি করে গুম-খুনের রামরাজত্ব কায়েম করেছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘পলাতক হাসিনা সরকারের উত্তরা এলাকার এমপি হাবিব হাসান এবং খসরু নিরীহ মানুষের জমি, বাড়িঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল করেছিল।’
বাংলাদেশের ‘দারিদ্র্য’ নিয়ে প্রতিবেদনে নিজ দেশেরই ছবি প্রকাশ করল ভারতীয় গণমাধ্যম। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, দেশের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। তাদের মধ্যে শহরে দারিদ্র্যের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ এবং গ্রামে সেই হার ২০ শতাংশের বেশি। এই তথ্য দিয়ে বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
‘জি ২৪ ঘণ্টা’ (Zee 24 Ghanta) প্রতিবেদনটি শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রকাশ করার পর গণমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়। পাশাপাশি দেশের সংবাদমাধ্যম ‘আজকের দৈনিক’ও ছবিটি যুক্ত করে গত শুক্রবার সংবাদ প্রকাশ করেছে। ছবিতে একদল শিশুকে থালা-বাটি হাতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির একটি প্রতিবেদনে ছবিটি পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি ২০২১ সালের ১৯ মার্চ প্রকাশিত হয়।
ভিডিও থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে কোভিড-১৯ চলাকালীন লকডাউন শিথিল হওয়ার পর ভারতের নয়াদিল্লিতে একটি বস্তির শিশুরা বিনা মূল্যে খাবার নিতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিল। ছবিটি একই তথ্যে ছবির স্টোরেজবিষয়ক ওয়েবসাইট গেটি ইমেজের ওয়েবসাইটেও পাওয়া যায়। এটি ২০২০ সালের ১৫ জুন প্রকাশিত হয়।
সুতরাং একদল শিশুর থালা-বাটি হাতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকার ছবিটি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০২০ সালে কোভিড-১৯ চলাকালীন ভারতের নয়াদিল্লিতে একটি বস্তির শিশুরা বিনা মূল্যে খাবার নিতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি বাংলাদেশের মানুষের দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসের বিষয়ে সংবাদ প্রতিবেদনে যুক্ত করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হিজাব র্যালি’। ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষে প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হিজাব র্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে র্যালির আয়োজন করে ‘প্রোটেস্ট এগেইনস্ট হিজাবোফোবিয়া ইন ডিইউ’ নামের একটি সংগঠন।
র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে টিএসসি হয়ে রাসেল টাওয়ার ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা অন্যান্য ক্ষেত্রে পোশাকের স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু যখন হিজাবের কথা আসে, তখন স্বাধীনতার সম্মানটা কেউ করে না। তাঁরা বলেন, হিজাব আমাদের অধিকার। আমাদেরকে আমাদের কাজ দিয়ে বিবেচনা করুন, পোশাক দিয়ে নয়।’
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিশকাতুল জান্নাত বলেন, ‘যেকোনো বিষয়ে জানার জন্য আমাদের তার পেছনের ইতিহাস জানা সব থেকে জরুরি। আমরা যেমন দেখেছি, জুলাই অভ্যুত্থানের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার প্রোপাগান্ডার শিকার হয়েছি, ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। তাই আমরা যদি আমাদের ইতিহাস না জানি তাহলে এই হিজাব ডে এটি আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, বিগত চার বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ বিশ্ব হিজাব দিবস ঘিরে কিছু কিছু ইভেন্ট করেছে। তবে সার্বিকভাবে এটা এখনো বাংলাদেশে পপুলার (জনপ্রিয়) না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী উম্মে ছালমাও এই হিজাব র্যালিতে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অনেক নিকাব–হিজাব পরিহিত আপু থাকলেও পরবর্তীতে আমরা কোনো নিকাব করা নারী নেতৃত্ব দেখতে পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘নিকাব করে নামাজ পড়বে, রোজা রাখবে, সংসার করবে, রান্না করবে এমন ধারণায় বিশ্বাসী আমাদের সমাজ। আমি মনে করি, আমরা হিজাব–নিকাব করেও দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজ যোগ্যতায় দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারি। এজন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। আপনার অধিকার আপনাকেই আদায় করে নিতে হবে।’
র্যালিটির অন্যতম আয়োজক স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদ নামে একটি সংগঠনের আহবায়ক জামালুদ্দিন খালেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাঁরা ফ্যাসিবাদের আমলে হিজাব–নিকাব পরিধান করেছেন, তাঁরা বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। শুধু হিজাব–নিকাবই নয়, যাঁরা দাড়ি–টুপি পরতেন, তাঁরাও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। পশ্চিমারা এগুলোকে একধরনের জঙ্গিবাদের চিহ্ন হিসেবে উপস্থাপন করেন। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্যই মূলত আমাদের এই প্রচেষ্টা।’
হিজাব র্যালি শেষ হলে রাজু ভাস্কর্যে এক সমাবেশে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে যাঁরা র্যালির উপস্থিতি বাড়িয়েছেন, তাদের মধ্য থেকে পাঁচজনকে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। তাছাড়া রোববার সকাল ৯টায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০০তম ব্যাচের উদ্যোগে হিজাব বিষয়ে সচেতনতার জন্য একটি সেমিনারও আয়োজন করা হবে। সেমিনারটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।