মঙ্গল শোভাযাত্রা: রঙিন কাগজে মোড়ার অপেক্ষা
রাজধানী ঢাকায় বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ বরণের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ মঙ্গল শোভাযাত্রার সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বিকালে অনুষদ অঙ্গনে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত।
এবারের শোভাযাত্রার আয়োজন করছে যৌথভাবে ২২তম ও ২৩তম অনুষদের শিক্ষার্থীরা। প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আফসান ঢালী অনন্যা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি বলা যায় ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়ে গেছে। আমরা আশাবাদী যে, মঙ্গলবারের বাকি সময় এবং বুধবার মিলে আমরা বাকি কাজ সম্পন্ন করতে পারব।’
বৃষ্টির শঙ্কা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই আশংকা প্রতি বছরই থাকে। সে কারণে প্রস্তুতিও থাকে। বিশেষ করে আমাদের বড় বড় স্ট্রাকচারগুলো যেন বৃষ্টিতেও নষ্ট না হয়, সেজন্যে সেগুলো প্রয়োজনে যেন ঢেকে দেওেয়া যায় সে মাপের ত্রিপল আছে।
জানতে চাইলে ২২তম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী নূর মুনজেরীন রিমঝিম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় চারটি স্ট্রাকচারে আজ আঠা দিয়ে কাগজ সাঁটানো হচ্ছে। আঠা শুকিয়ে কাগজ আটকে গেলে আগামীকাল বুধবার এর উপর নির্ধারিত রঙিন কাগজ সাঁটানো হবে। তাতেই পূর্ণতা পাবে বড় স্ট্রাকচারগুলো। আমরা আশা করছি বুধবারে রাতের মধ্যেই এই কাজগুলো সম্পন্ন হয়ে যাবে।’
প্রসঙ্গত গত ৩১ মার্চ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে চারুকলা অনুষদ।
এদিকে রাজধানীতে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে নিরাপত্তা বিষয়ে গণমাধ্যমের সংগে কথা বলেছে পুলিশ প্রশাসন। এই নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘২০০১ সালকে মাথায় রেখে বাড়তি নিরাপত্তা নেয়া হচ্ছে। রিসেন্টলি কিছু বন্ধু রাষ্ট্র জঙ্গিদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ দিচ্ছে।’
বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের কারণ উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘উপমহাদেশে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ধারণা করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু রেডিক্যালাইজড সংগঠনের তৎপরতা লক্ষ্য করছি। সে কারণেই আমাদের বাড়তি নিরাপত্তা।’
উল্লেখ্য ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলার সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) জঙ্গিদের বোমা হামলায় ১০ জন নিহত ও অনেকে আহত হন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা কোনো হামলার আশঙ্কা করছি না। যেহেতু নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতে কোনো কিছুই উড়িয়ে দিচ্ছি না। লোন উলফ একটা ছুরি বা ব্লেড নিয়ে হামলা করে, এটাতো একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।’
তিনি বলেন, ‘রমনার বটমূলে প্রবেশে চেকপোস্ট থাকবে। চেকপোস্টে চেক না করে কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না। কোনো যানবাহন এই এলাকায় চলবে না। রমনা এলাকায় ডগ স্কোয়াড সুইপিং করেছে, সন্ধ্যায় করা হবে এবং আগামীকালও করা হবে। পুরো চত্বরে সিসিটিভি থাকবে।’
ইভ টিজিং রোধে সাদা পোশাকে পুলিশের উল্লেখযোগ্য সদস্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে থাকবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার। তিনি বলেন, ‘নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল থাকবে রমনার লেকে।’
এমএ/এমএমএ/