চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবছর পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে আগামী ১২ অথবা ১৩ মার্চ। তবে রমজান শুরুর সময় ১২ মার্চ ধরে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি নির্ধারণ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১৪৪৫ হিজরির রমজান মাসের সেহরি ও ইফতারের এ সময়সূচি চূড়ান্ত করে। সময়সূচি অনুযায়ী, ১২ মার্চ প্রথম রমজানে ঢাকায় সেহরির শেষ সময় ভোর ৪টা ৫১ মিনিট ও ইফতারের সময় ৬টা ১০ মিনিট।
এ বছরের রমজানের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি-
সময়সূচিতে বলা হয়েছে, ১ রমজান চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। সেহরির সময় সতর্কতামূলকভাবে সুবহে সাদিকে তিন মিনিট আগে ধরা হয়েছে এবং ফজরের ওয়াক্ত শুরু সুবহে সাদিকের তিন মিনিট পরে রাখা হয়েছে। সূর্যাস্তের পর সতর্কতামূলকভাবে ৩ মিনিট বাড়িয়ে ইফতারের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশের অন্যান্য বিভাগ ও জেলার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয় থেকে প্রকাশ করা হবে।
সারা দেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে আগামী রোববার (২৮ এপ্রিল) খুলছে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে সব প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। এদিকে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্লাসের সময় কমিয়ে আনা হয়েছে।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আক্তারুন্নাহার স্বাক্ষরিত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, চলমান তাপদাহের কারণে কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারগুলোর শ্রেণি কার্যক্রম চালুর বিষয়ে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৮ এপ্রিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চলমান থাকবে। এক পালায় (শিফটে )পরিচালিত বিদ্যালয়গুলো প্রতিদিন সকাল ৮ থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে। আর দুই পালায় বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম পালা সকাল ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এবং দ্বিতীয় পালা পৌনে ১০টা থেকে থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলমান থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা আরও হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আর তাপদাহ সহনীয় পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি বন্ধ থাকবে।
শীতল আবহাওয়া ও বৃষ্টির আশায় নওগাঁয় ইসতিসকার নামাজ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দেশে বইছে তীব্র তাবদাহ ও খরা। তীব্র তাবদাহে ফসলি জমির মাঠ-ঘাট ফেটে চৌচির। নওগাঁয় গত কয়েকদিন থেকে সর্বোচ্চ ৩৭ থেকে ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছেন। প্রচণ্ড গরমে ওষ্ঠাগত প্রাণীকুল। ফসলি জমিতে শ্রমিকরা কাজ করতে গিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা। রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমে গেছে।
রোদ থেকে বাঁচতে মোটা কাপড় পরিধান করছে। কেউ কেউ রোদে চশমা ও ছাতা ব্যবহার করছে। স্বস্তি পেতে বার বার পানি পান করতে হচ্ছে। গাছের নিচে আশ্রয় নিচ্ছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস থেকে সুখকর কোন বার্তা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
চলমান আবহাওয়া থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে গরমের তাপমাত্রা কমে শীতল আবহাওয়া ও বৃষ্টির আশায় নওগাঁয় শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইসতিসকা) আদায় করা হয়েছে। এদিন সকাল ৮টার দিকে নওগাঁ শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাঁহ নওযোয়ান মাঠে নামাজের ইমামতি ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মওলানা আ.ন.ম আকরাম হোসাইন।
প্রায় সহস্রাধিক মুসল্লি নিয়ে নামাজ আদায় করা হয়। মোনাজাতের আগে দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শীতল আবহাওয়া ও বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেন উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ।
ইসতিসকা শব্দের অর্থ পানি বা বৃষ্টি প্রার্থনা করা। সালাতুল ইসতিসকা অর্থ বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ। শারিয়তের পরিভাষায় অনাবৃষ্টির সময় আল্লাহর রাসুলের সুন্নত অনুসরণ করে খোলা প্রান্তরে নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে বৃষ্টি প্রার্থনা করাকে সালাতুল ইসতিসকা বা ইসতিসকার নামাজ বলা হয়।
নামাজে অংশ নেওয়া নওগাঁ পৌরসভার মেয়র নজমুল হক সনি বলেন, বেশ কিছুদিন থেকে জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাবদাহ বইয়ে চলছে। অসহ্য গরমে জনজীবন হাঁসফাঁস অবস্থা। কোথায় গিয়ে স্বস্তি মিলছে না। শীতল আবহাওয়া ও বৃষ্টির জন্য প্রার্থনার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় ইসতিসকা নামাজে অংশ নিয়েছে। নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ জমিন শীতল করে দিবেন। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ কামনা করা হয়। আল্লাহ চাইলে এ নামাজ কবুল করে রহমতের বৃষ্টি দিয়ে মানুষ, প্রাণীসহ সকলকে শান্তিতে থাকার পরিবেশ করে দেবেন।