শুক্রবার, ৫ জুলাই ২০২৪ | ২১ আষাঢ় ১৪৩১
Dhaka Prokash

দেশে ফিরেছেন ৪৩ হাজার ৮৩ হাজি, মৃত্যু বেড়ে ৫৮

ফাইল ছবি

সৌদি আরব থেকে পবিত্র হজ পালন শেষে এখন পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন ৪৩ হাজার ৮৩ হাজি। এ বছর হজে গিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি হাজির মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮ জনে।

বুধবার (৩ জুলাই) ভোরে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বুলেটিনে বলা হয়, পবিত্র হজ পালন শেষে এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৮৩ জন হাজি দেশে ফিরেছেন। সৌদি থেকে ১০৯টি ফ্লাইটে এসব হাজি বাংলাদেশে এসেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ৪১টি, সৌদি এয়ারলাইনস ৪২টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

হজ শেষে গত ২০ জুন থেকে দেশে ফেরার ফ্লাইট শুরু হয়। ওইদিন বাংলাদেশ বিমানের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ৪১৭ জন হাজি নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট অব্যাহত থাকবে।

এদিকে চলতি বছর হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৫৮ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৪৫ জন এবং নারী ১৩ জন। তাদের মধ্যে মক্কায় ৪৬ জন, মদিনায় চারজন, মিনায় ছয়জন ও জেদ্দায় দুইজন মারা গেছেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৫ হাজার ২২৫ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) হজযাত্রী সৌদি আরবে গেছেন। আগামী বছর (২০২৫) বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটা দিয়েছে সৌদি আরব।

এদিকে, চলতি বছর প্রখর তাপপ্রবাহ ও অসহনীয় গরমের জেরে হজ করতে গিয়ে সৌদি আরবে রেকর্ড মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫৮ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।‌ এর মধ্যে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে ১৭ জন, বাকি ৪১ জন হজের আনুষ্ঠানিকতার শুরুর পর মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সবার পরিচয় প্রকাশ করেছে হজ পোর্টাল।

সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি হজ করতে গিয়ে যদি মারা যান, তাহলে তার মরদেহ সৌদি আরবে দাফন করা হয়। নিজ দেশে আনতে দেওয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না। মক্কায় হজ যাত্রী মারা গেলে মসজিদুল হারামে নামাজে জানাজা হয়।

Header Ad

নওগাঁয় আড়াই শতাধিক গ্রাহকের ১২ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় জগৎসিংহপুর সূর্যমুখী বহুমুখী উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি সমবায় সমিতির কর্মকর্তারা গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। গ্রাহকদের অভিযোগ, সমিতির কর্মকর্তারা আড়াই শতাধিক গ্রাহকের প্রায় ১২ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন।

বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুর ১২ টায় নওগাঁ পৌরসভার জগৎসিংহপুর এলাকায় সমিতিটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধন শেষে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা সমিতির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মুকুল হোসেনের বাড়ির সামনে ভিড় করেন।

প্রতারিত গ্রাহকেরা বলছেন, নওগাঁ পৌরসভার জগৎসিংহপুর গ্রামে ২০১৯ সালে জগৎসিংহপুর সূর্যমুখী বহুমুখী উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি সমিতি প্রতিষ্ঠা করা হয়। নওগাঁ জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে সমিতিটি নিবন্ধন নেন জগৎসিংহপুর গ্রামের বাসিন্দা ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মুকুল হোসেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে অবৈধভাবে ব্যাংকের আদলে মাসিক ও বার্ষিক আমানত প্রকল্প, স্থায়ী বিনিয়োগ ও স্থানী আমানত নামে বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে টাকা জমা রাখতে শুরু করে। টাকা জমা রেখে গ্রাহকদের প্রতি মাসে মুনাফা দিতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। ধীরে এর গ্রাহক সংখ্যা ও আমানতের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এভাবে গত পাঁচ বছরে আড়াই শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে ১২ কোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নেয় সংস্থাটি। জগৎসিংহপুর সূর্যমুখী বহুমুখী উন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মুকুল হোসেন ও সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন।

ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠার পর শুরুর দিকে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে আমানতের বিপরীতে গ্রাহকদের লভ্যাংশের টাকা নিয়মিত দিয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু দুই-তিন মাস ধরে মেয়াদপূর্ণ হওয়ার পরেও সংস্থার লোকজন গ্রাহকদের আমানত ফেরত ও লভ্যাংশের টাকা জমা দিতে টালবাহানা করতে থাকে। আমানতের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য গ্রাহকের চাপ দিতে থাকলে গত ২ জুলাই মুকুল হোসেন, দেলোয়ারসহ সমিতির অন্যরা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। এখন আমানতের টাকা ফেরতের জন্য প্রতিদিনই গ্রাহকেরা সমিতির কার্যালয় ও সমিতির সভাপতি মুকুল হোসেনের বাড়ির সামনে ভিড় করছেন।

টাকা ফেরতের দাবিতে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা নওগাঁ পৌরসভার বটতলী-বোয়ালিয়া সড়কের জগৎসিংহপুর মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এতে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের মধ্যে সিরাজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, শফিকুল ইসলাম, ওয়াসিম খান, আনিছুর রহমান, জতন কুমার সরকার, আবু হান্নান সরদার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

ভুক্তভোগী আনিছুর রহমান বলেন, তিনি অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। সূর্যমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মুকুল হোসেন ও তিনি একই ব্যাটালিয়নে দীর্ঘ দিন চাকরি করেছেন। পূর্ব পরিচিত হওয়ায় মুকুলের কথায় বিশ্বাস করে মুনাফা লাভের আশায় ছয় মাস আগে ২৪ লাখ টাকা সূর্যমুখী সমবায় সমিতিতে স্থায়ী আমানত হিসেবে জমা করেন। প্রতি মাসে লাখে আড়াই হাজার টাকা করে মুনাফা দেওয়ার শর্তে তিনি ওই টাকা জমা দেন। টাকা জমা দেওয়ার পর থেকেই লভ্যাংশ দেওয়া নিয়ে সমিতির লোকজন টালবাহানা শুরু করে। এর মধ্যেই গত ২ জুলাই থেকে মুকুল ও তাঁর সহযোগীরা সমিতির কার্যালয়ে তালা দিয়ে লাপাত্তা। তাঁদেরকে ফোনেও পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা।

মুকুল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তাঁর স্ত্রী সিথী বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গ্রাহকের কাছ থেকে আমানতের টাকা জমা দিয়ে তাঁর বিপরীতে উচ্চহারে মুনাফা দিতে গিয়ে আমার স্বামী লোকসানের মধ্যে পড়ে গেছেন। অপরিকল্পিতভাবে সমিতি পরিচালনা করায় এখন তাঁর সব পুঁজি নাই হয়ে গেছে। গ্রাহকের চাপ সহ্য করতে না পারায় তিনি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এখন গ্রাহকেরা গত কয়েক দিন ধরে আমার বাড়ি ঘিরে রেখেছে। আমাদের বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না। আমার ছেলেকে মারধর করেছে। দোষ করলে আমার স্বামী করেছে, আমাদের কি দোষ।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ বলেন, ‘গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে সূর্যমুখী সমবায় সমিতি নামের একটি সমিতির কর্মকর্তাদের লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার বিষয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমিতির কোনো সদস্য এ ব্যাপারে আমার কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি আমি নিজে তদন্ত করব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রতারণায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র বিপৎসীমার ৮৮ সেমি ওপরে, পানিবন্দি ৩০ হাজার পরিবার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

অতিবর্ষণ ও উজানের ঢলে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৮৮ সেমি ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৮ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে করতোয়া নদীর পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। ফলে এসব নদ-নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট, ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩০ হাজার পরিবার। তবে কমেছে তিস্তার পানি।

শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেল ৩ টায় গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্য মতে- গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানির উচ্চতা ১৪ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৮৮ সেমি ও ঘাঘট নদীর পানি ১৫ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৮ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। করতোয়া নদীর পানি ২১ সেমি বৃদ্ধি পেলেও তা বিপৎসীমার ১৩৯ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা নদীর পানি ১৩ সেমি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৫৬ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলায় ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ মিলিমিটার।

জানা যায়, গত কয়েক দিনের অতিবর্ষণ ও উজানের ঢলে জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি দ্বিতীয় দফায় বাড়তে শুরু করে। পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট দোকান-পাট ও ঘর-বাড়ি। এলাকার মচির, ভূট্টাসহ বিভিন্ন ফসলাদি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩০ হাজার পরিবার।

গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা, এই চার উপজেলায় বন্যায় ২৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। বিপৎসীমার ওপরে থাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত সদরের কামারজানি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। পানিবৃদ্ধির ফলে এসব এলাকার ঘরবাড়িগুলোতে পানি উঠতে শুরু করেছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এসব এলাকার পানিবন্দী মানুষরা গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ছেন। কয়েকটি এলাকায় ভাঙ্গনও দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন আতঙ্কে লোকজন ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে অন্যত্র। এদিকে তিস্তার পানি কমতে থাকায় সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া, তারাপুরের প্লাবিত এলাকা জেগে উঠতে শুরু করেছে।

সাঘাটার ভরতখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ উল্যাবাজার এলাকায় যমুনার পানির চাপে বাঁধের অন্তত ৩০ ফিট এলাকা ধ্বসে যায়। এতে তিন ইউনিয়নের কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। হঠাৎ করে বাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে পড়ায় এসব এলাকার বিস্তৃর্ণ জমির পাট, কাউন, তীল ও শাকসবজিসহ বর্ষাকালীন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদি পশু নিয়ে নিয়ে বিপাকে পড়েছে বন্যা কবলিতরা।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

এদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় সদরসহ সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭০টি ও ১০ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা রয়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, অতি বর্ষণ ও উজনের ঢলে গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বাড়ছে। এরমধ্যে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে। তবে কমেছে তিস্তার পানি। সব ধরণের ঝুঁকি মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত রয়েছে।

জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, শুকনা খাবার, জি আর চাল, ক্যাশ মজুদ রয়েছে। ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য নৌকা, স্পীড বোট প্রস্তুত রয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ইউনিয়ন ভিত্তিক বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র। প্রতিটি উপজেলায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রচার প্রচারণা চলমান রয়েছে।

টাঙ্গাইলে পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ, নদীপাড়ের মানুষের মানবেতর জীবনযাপন

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারি বর্ষণে টাঙ্গাইলের যমুনা নদীসহ জেলার সব নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরফলে লোকালয়ের নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি প্রবেশ করছে। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৩৮ সেন্টিমিটার সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার এবং ঝিনাই নদীর পানি কালিহাতীর জোকারচর পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

শুক্রবার (০৫ জুলাই) সকালে টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অপরদিকে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার ভূঞাপুর, গোপালপুর, টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, নাগরপুর ও মির্জাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে লোকায়গুলো পানি প্রবেশ করছে। ইতোমধ্যে ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী বাজারে খালে আংশিক কিছু পানিতে তলিয়ে গেছে এবং চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

সরেজমিন উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, অস্বাভাবিকহারে পানি বৃদ্ধির কারণে ফসলি জমি ও অসংখ্য ঘরবাড়িতে পানিতে তলি গেছে। এতে করে গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। অনেকের বাড়িতে দেখা দিয়ে বিশুদ্ধ পানির সংকট। অনেকে আবার পলিথিন কাগজের ছাউনি তুলে রাস্তার পাশে মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং অনেকে তাদের স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন।

এছাড়া পানি বৃদ্ধির ফলে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে চিতুলিয়াপাড়া, মাটিকাটা, পাটিতাপাড়া, কোনাবাড়ী, জয়পুর, রেহাইগাবসারা, ভদ্রশিমুল, চর শুশুয়া, বাসুদেবকোল, রুলীপাড়া, রাজাপুরসহ আরও বিভিন্ন এলাকা। এরমধ্যে পাটিতাপাড়া ও মাটিকাটা এলাকায় ১০ থেকে ১৫ টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে এবং ভাঙন অব্যাহত থাকায় আরও অনেকের বসতভিটা ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে।

নিকরাইলের মাটিকাটা, কোনাবাড়ী ও পাটিতাপাড়া এলাকার ভাঙনের শিকার ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, পানি ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরফলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ইতোমধ্যে অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে এবং থাকার জন্য অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, কিছু কিছু স্থানে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করছে প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু তাতে কোনো কাজে আসছে না। বন্যার আগে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো জিও ব্যাগ ফেলা বা স্থানী বাঁধ দিতো তাহলে এভাবে ভাঙতো না।

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নিকরাইল ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল হক মাসুদ বলেন, নিকরাইলে অধিকাংশ এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে এবং সারপলশিয়া, মাটিকাটা, পাটিপাতাপাড়া, কোনাবাড়ী ও সিরাজকান্দি গ্রামে পানির স্রোতে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। এসব এলাকায় কিছু কিছু স্থানে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। এছাড়া বন্যায় এখন পর্যন্ত এই ইউনিয়নে প্রায় ১ হাজার ২০০ টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব মানুষের তালিকা করে ইউএনও বরাবর পাঠানো হবে।

গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন চকদার বলেন, কষ্টাপাড়া, খানুরবাড়ী, স্থলকাশি, চিতুলিয়াপাড়া, কয়েড়া, রুহুলীসহ কয়েকটি এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে এবং এসব এলাকায় সাড়ে ৪ শতাধিক পরিবারের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যে গোবিন্দাসী বাজার পানিতে তলিয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকার জন্য জিও ব্যাগের চাহিদা, পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহযোগিতার জন্য আজ সকালে ইউএনও মহোদয়ের কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

অর্জনা ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম খান মাহবুব বলেন, আমার ইউনিয়নটি পুরোটাই দুর্গম চরাঞ্চল। এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন এবং অনেকের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক ভাঙন অব্যাহত। এছাড়া পোকা-মাকড়ের আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইউএনওর সাথে যোগাযোগ করে ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দি পরিবারের জন্য সহযোগিতার জন্য আবেদন করা হচ্ছে।

গাবসারা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম শাপলা আকন্দ বলেন, কালিপুর, মেঘারপটল, রেহাইগাবসারা, চন্ডিপুর, জয়পুর ও রুলীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার কৃষকের তিল, পাটসহ অন্যান্য ফলস তলিয়ে গেছে। এ পর্যন্ত ১০-১৫ টি ঘরবাড়ি বিলীন এবং পানিবন্দি আড়াই'শ পরিবারের মানুষ। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পুরো চর পানিবন্দি হয়ে যাবে। এলাকায় নিয়মিত খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুনুর রশীদ জানান, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকাগুলো পানি প্রবেশ করেছে এবং কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এনিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে। এসব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ইতোমধ্যে তালিকা করা হচ্ছে এবং দ্রত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় আড়াই শতাধিক গ্রাহকের ১২ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য
গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র বিপৎসীমার ৮৮ সেমি ওপরে, পানিবন্দি ৩০ হাজার পরিবার
টাঙ্গাইলে পানিবন্দি কয়েক হাজার মানুষ, নদীপাড়ের মানুষের মানবেতর জীবনযাপন
মাভাবিপ্রবিতে কোটা বাতিল আন্দোলনে উত্তাল ক্যাম্পাস
যুক্তরাজ্যের ভোটে টানা জয়ে বাজিমাত যুক্তরাজ্যে বাঙালি চার নারীর
দাবি আদায়ে আন্দোলনে অনড় কোটাবিরোধীরা
আইজিপি পদে আরো এক বছর থাকছেন আবদুল্লাহ আল মামুন
বেঁচে থাকতেই ৫০০ মানুষকে নিজের 'চল্লিশা' খাওয়ালেন মারফত আলী
অপহরণ নাটক: সেই রহিমা-মরিয়মদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের ২ সেনা ও ৩১ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ
যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে টানা পঞ্চম জয় পেলেন রুশনারা আলী
‘ক্যারিয়ার অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পাচ্ছেন শাহরুখ খান
ছাদখোলা বাসে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বর্ণাঢ্য বরণ, প্রচণ্ড ভিড়ে শ্বাসকষ্টের সমস্যা!
যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে লেবার পার্টির নিরঙ্কুশ জয়
নাগরভিটা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
কবরস্থানে জায়গা না দেওয়ায় ঘরের বারান্দায় মায়ের দাফন
টানা চতুর্থবার জিতলেন বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক
টাইব্রেকারে ইকুয়েডরকে হারিয়ে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা
দিনাজপুরে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে শিশুসহ নিহত ৫
ইউরোপ যেতে নৌকা ডুবে প্রাণ হারালেন ৮৯ অভিবাসী