এবার মানাসলু আহরণে যাবেন নিশাত মজুমদার
মানাসলু পৃথিবীর ৮ম উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ। এই পর্বতের উচ্চতা ৮১৬৩ মিটার। হিমালয়ে অবস্থিত এ পর্বত আরোহণের স্বপ্নপূরণে একের পর এক পর্বতপ্রেমীরা বিভিন্ন সময়ে মানাসলু আরোহণের উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রথমবারের মতো একটি জাপানি দল ১৯৫৬ সালে ৯ মে সফলভাবে মানাসলুয় আরোহণ করেন।
বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্ট আরোহী নারী নিশাত মজুমদার এবার মানাসলু অভিযানের পরিকল্পনা করেছেন। তার সঙ্গে যাবেন প্রজ্ঞা পারমিতা রায়। এ আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এসেছে ওরিয়ন।
শনিবার (২৭ আগস্ট) এক অনুষ্ঠানে তাদের হাতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হকের সভাপতিত্বে পতাকা অর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— ইউসেফ বাংলাদেশের চেয়ারপার্সন পারভীন মাহমুদ, ওরিয়ন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আশফাকুল আলম।
জানা গেছে, অভিযাত্রী নিশাত মজুমদার ও প্রজ্ঞা পারমিতা রায় ২৯ আগস্ট নেপালের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন। অতঃপর কাঠমান্ডু থেকে পৌঁছাবেন মানাসলু পর্বতের পাদদেশে বেশি শাহার নামের একটি স্থানে। সেখান থেকে শুরু হবে ট্রেকিং। প্রজ্ঞা পারমিতা রায় উক্ত পর্বতের বেইজ ক্যাম্প পর্যন্ত আরোহণের মাধ্যমে তার যাত্রা শেষ করে দেশে ফিরে আসবেন এবং নিশাত মজুমদার মানাসলুপর্বতের শীর্ষবিন্দুস্পর্শ করতে এগিয়ে যাবেন।
পতাকা অর্পণের পর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তরুণদের বিশেষ করে নারীদের বাধা অনেক কিন্তু সাফল্যের হাতছানি জয় করার জন্য পুরো বিশ্ব আছে। সেটা মাথায় রেখে নিজেদের তৈরি করতে হবে। কোনো বাধা না মেনে এগিয়ে যাওয়ার অনন্ত প্রেরণা সেটি যেন তাদের মধ্যে থাকে। মেয়েদের সব দিকে অভিযাত্রা চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের বঙ্গবন্ধু মুজিব ছিলেন, আছেন, থাকবেন। যিনি আমাদের জয়ী হতে শিখিয়েছেন। সব বাধা অতিক্রম করে স্বপ্নকে জয় করা শিখিয়েছেন। সবক্ষেত্রে সাহস নিয়ে তরুণদের এগিয়ে যেতে হবে। অন্যরা যাদের পথ হয়ত ভিন্ন ভিন্ন, সবাই পাশে দাঁড়াবেন। যে পতাকা নিশাতের হাতে তুলে দিলাম সেই পাতাকা মানাসুল পর্বতে উড়বে তারপর নিশাত মজুমদার নিরাপদে দেশে ফিরে অভিজ্ঞতা শোনাবেন।
বাংলাদেশের মেয়েরা পর্বতারোহণসহ খেলাধুলায় দিনের পর দিন পিছিয়ে পড়ছে। রক্ষণশীল মনোভাব বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক অসংগতির দরুন এ দিকটি বরাবরের মতো অবহেলিত থেকে যাচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে মেয়েদের জন্য বৃহত্তর ক্ষেত্র ও সুযোগ তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য, যার মাধ্যমে সামাজিক অমূলক ট্যাবু ভেঙে তারা এগিয়ে আসতে পারে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্ট আরোহী নারী নিশাত মজুমদার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ২০১২ সালে এভারেস্ট আরোহণের পর থেকে তৃণমূল পর্যায়ে স্কুল-কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই প্রচেষ্টাতেই পর্বতারোহীদের সংগঠন 'অভিযাত্রী'-র একটি উদ্যোগ ‘ওরিয়ন ট্রেক উইথ নিশাত’।
এসএম/আরএ/