গেমিং ফোন নাকি ক্যামেরা ফোন, প্রয়োজনই প্রাধান্য
স্মার্টফোন জগতে চলছে এলাহী কান্ড। বাজারে টিকে থাকতে স্মার্টফোনে নিত্যনতুন ফিচার আনছে কোম্পানি গুলো। শুধু তা-ই নয়। স্মার্টফোনগুলো এখন একইসাথে ক্যামেরা, প্লেস্টেশন, কম্পিউটারের ভূমিকা পালন করছে। কারও চাই ভালো ক্যামেরার ফোন বা কারও চাই কাজের গতি। আবার গেমপ্রিয় তরুণ-তরুণীদের চাহিদা একটি গেমিং ফোন।
বাজারে এতসব স্মার্টফোনের ভিড়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ক্রেতারা বিভ্রান্তিতে পড়ে যান। এ স্মার্টফোনগুলোকে আমরা চার ভাগে ভাগ করতে পারি। ক্যামেরা ফোন, ব্যাটারি ফোন, অল ইন ওয়ান ফোন এবং গেমিং ফোন। বিভাগ ভেদে এসব ফোনের বৈশিষ্ট্য ও দাম ভিন্ন।
ক্যামেরা ফোন:
স্মার্টফোনে ক্যামেরা একটি অপরিহার্য ফিচার। ছবি তোলা যাদের শখ তাদের প্রথম আকর্ষণ ক্যামেরা ফোন। সব ফোনে ক্যামেরা থাকলেও ভালো রেজুলেশন ও সঠিক ইমেজ সেন্সরের ক্যামেরা সব ফোনে ব্যবহার করা হয় না। সাধারণত যেসকল ফোন ক্যামেরাকে প্রাধান্য দিয়ে বানানো হয় সেসকল ফোনে ভালো ক্যামেরা দেওয়া হয়। এসকল ফোনের মূল্য তুলনামূলক বেশি হয়। ক্যামেরা ফোনের অন্যান্য কাজের গতি বেশিও হতে পারে, কমও হতে পারে। এর ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, নাও হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে কেবল ক্যামেরাই প্রাধান্য পাবে। অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা থাকলে হুটহাট ক্যামেরা ফোন কিনে ফেলা যাবে না, সাথে অন্য বিষয়গুলোও দেখতে হবে। দেশের বাজারে শাওমি, স্যামসাংসহ বেশ কয়েকটি ফোনেই সবচেয়ে বেশি ১০৮ মেগাপিক্সেলের ইমেজ সেন্সর আছে।
ব্যাটারি ফোন:
এসব ফোনের মূল কাজ দীর্ঘক্ষণ সচল থাকা। সাধারণত বড় ব্যাটারির স্মার্টফোন গুলো আদতে অতটা স্মার্ট হয় না। এসকল ফোন আকৃতিতে বড় ও ভারী হয়। যারা দীর্ঘক্ষণ কাজের সূত্রে বাহিরে থাকেন তাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই এসব ফোন তৈরী করা হয়। বর্তমানে কম মূল্য থেকে উচ্চমূল্যের প্রায় সব স্মার্টফোনেই দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। তবে অন্যান্য ফিচার বিশেষ করে ক্যামেরা ও মডারেট ফোনগুলোর ব্যাটারির তুলনায় ব্যাটারি ফোনে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। এসকল ফোনের ক্যামেরাসহ অন্য ফিচার সুবিধা কম দেয়া হয়। দেশের বাজারের সবচেয়ে বড় ব্যাটারির ফোন হচ্ছে স্যামসাং এম ৫১। যার ব্যাটারি ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ার।
অল ইন ওয়ান ফোন:
এসব স্মার্টফোন হচ্ছে সকল কাজের কাজী। অল ইন ওয়ান ক্যাটাগরিতে প্রত্যেক কোম্পানি নিজেদের সেরা ফোনটি কে ফ্ল্যাগশিপ বা পতাকাবাহী হিসাবে ঘোষণা দেয়। এসকল ফোনের ক্যামেরা ভালো হয় একইসাথে কাজের গতি এবং ব্যাটারিও হয় দীর্ঘস্থায়ী। সাধারণত এসকল ফোনে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর ব্যবহার করা। এসব ফোনের মূল্য ফিচার অনুযায়ী ভিন্ন হয় এবং কোম্পানি ঘোষিত ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলোর দাম সর্বোচ্চ হয়। দেশের বাজারে যেসব ফ্ল্যাগশিপ ফোন রয়েছে সেগুলোর মধ্যে স্যামসাং গ্যালাক্সি যেড ফোল্ড থ্রি ও গ্যালাক্সি এস টুয়েন্টিওয়ান আল্ট্রা উল্লেখযোগ্য।
গেমিং ফোন:
তরুণ-তরুণীদের মূল আকর্ষণ থাকে গেমিং ফোনের দিকে। অল ইন ওয়ান ক্যাটাগরির স্মার্টফোনগুলোতেও গেমিং করা যায়। কিন্তু কোম্পানি ঘোষণা দিয়ে যেসব গেমিং ফোন বাজারে ছাড়ে সেগুলোতে গেমিং-এর জন্য আলাদা ফিচার থাকে। এসব ফোনে সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর ব্যবহার করা হয়, সহায়ক হিসাবে অধিক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন র্যাম ব্যবহার করা হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি দেওয়া হয়। তবে গেমিং ফোনগুলোর ক্যামেরা তুলনামূলক দুর্বল হয়। তাই ক্যামেরার অধিক প্রয়োজনীয়তা থাকলে গেমিং ফোন ক্রয় এড়িয়ে চলতে হবে।
প্রকৃত অর্থে ফোনের ভালো-খারাপ নির্ণয় করা মুশকিল। সব ফোনই ফিচার ভেদে ভালো-খারাপ হয়ে থাকে। একজন ব্যবহারকারীই জানেন তার কি কি প্রয়োজন। তাই ফোন কেনার আগে অবশ্যই দামের সাথে সমন্বয় করে ফোনের সকল ফিচার যাচাই-বাছাই করে স্মার্টফোন ক্রয় করা উত্তম।
/এএস