ইলন মাস্ক এক্স-(টুইটার) থেকে ‘ব্লক’ ফিচার বাদ দিচ্ছেন
নানা নাটকীয়তা শেষে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে মাইক্রো ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম টুইটার কিনে নেয়ার পর তা ঢেলে সাজিয়েছেন ইলন মাস্ক। এমনকি সামাজিক মাধ্যমটির নাম ও লোগো পরিবর্তন করে ফেলেছেন তিনি। এবার তিনি টুইটার তথা এক্স থেকে ব্লকিং ফিচার বাদ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এই ফিচার কোনো অর্থ প্রকাশ করে না উল্লেখ করে এক্সের প্রধান নির্বাহী ও বর্তমান মালিক ধনকুবের ইলন মাস্ক এ সিদ্ধান্ত জানান। তবে সরাসরি বার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে ব্লক করা যাবে।
অর্থাৎ নতুন এই পরিবর্তনের মানে হল এক্স ব্যবহারকারীরা কোনো অ্যাকাউন্টকে ব্লক না করতে পারলেও তারা সেই অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি কোনো মেসেজ বা বার্তা আসা ব্লক করতে পারবেন। বর্তমানে কোনো ব্যবহারকারী যদি একটি অ্যাকাউন্ট ব্লক করেন, তখন সেই অ্যাকাউন্টের পোস্ট যে ব্লক করেছেন সেই ব্লকারের অ্যাকাউন্ট থেকে দেখা যায় না এবং যে অ্যাকাউন্টকে ব্লক করা হয়েছে, সেই অ্যাকাউন্ট থেকেও ব্লককারীর পোস্ট দেখা যায় না। পাশাপাশি যে অ্যাকাউন্টকে ব্লক করা হয়েছে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে ব্লককারীকে কোনো মেসেজ বা বার্তা পাঠানো যায় না।
কিন্তু এই ফিচার উঠিয়ে নেয়া হলে ব্লক করার পরও ম্যাসেজ বা বার্তা বাদে বাকি সব পোস্ট দেখতে পাবেন ব্যবহারকারীরা।
টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি মাস্কের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘১০০%, শুধু মিউট হবে।’
তবে,মাস্কের এ সিদ্ধান্তকে ‘বড় ভুল’ বলে সম্বোধন করে এক এক্স ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘এ প্ল্যাটফর্মে অনেক ক্ষতিকর মানুষ আছেন, ব্যবহারকারীরা যাদের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে চান।’
এদিকে ব্লক করার সুবিধা সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের ফলে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর ও গুগল প্লে–স্টোরের মতো অ্যাপ্লিকেশন স্টোরগুলোর শর্ত লঙ্ঘিত হতে পারে।
এ দুটি স্টোরের একটি সাধারণ শর্ত হলো— সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাপগুলোকে ব্যবহারকারীদের হয়রানি ও লাঞ্ছনা থেকে সুরক্ষিত থাকার সুযোগ দিতে হবে।
এমন হতে পারে ব্লক করার সুবিধা সরিয়ে ফেললে এই স্টোরগুলো থেকে আর ‘এক্স’ ডাউনলোড করা যাবে না।
অন্যদিকে মাস্কের মালিকানা গ্রহণের পর এক্স থেকে বড় সংখ্যক বিজ্ঞাপনদাতা সরে এসেছে। এতে করে বিজ্ঞাপন থেকে মাইক্রো-ব্লগিং সাইটটির আয় প্রায় ৫০ ভাগ পর্যন্ত কমে গিয়েছে।
মাস্কের সেইফটি পলিসি পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে বহু সমালোচনাও রয়েছে। তবে এক্স এর বর্তমান সিইও লিন্ডা ইয়াকারিনো অবশ্য এটিকে সমস্যা হিসেবে মানতে নারাজ।
লিন্ডা ইয়াকারিনো বলেন, "টুইটারের (এক্স) ৯৯ ভাগেরও বেশি কন্টেন্ট ইউজার ও বিজ্ঞাপনদাতা প্ল্যাটফর্মটিকে বেশ 'স্বাস্থ্যকর' মনে করেন।" তবে এখানে 'স্বাস্থ্যকর' বলতে সর্বোপরি তিনি ঠিক কী বুঝাচ্ছেন এবং কোম্পানিটি এটি কীভাবে হিসেব করে সে সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছুই জানাননি লিন্ডা।
এদিকে ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে আগেই টাকা নেওয়া চালু করেছিল এক্স। এখন লোগো পরিবর্তনসহ এক্স এ নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি পোস্ট দেখা যায় না। ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট হলে দৈনিক ৬,০০০ পোস্ট দেখা বা পড়া যাবে। এদিকে আনভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট দিনে মাত্র ৬০০টি পোস্ট পড়তে বা দেখতে পারবে।