৩০০ রানে পাকিস্তানের ইনিংস ঘোষণা, বাংলাদেশের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ঢাকা টেস্টের প্রথম তিন দিনের দুই দিনেরও বেশি সময় খেলাই হয়নি বৃষ্টি ও আলোর স্বল্পতার কারণে। চতুর্থ দিনও এক ঘন্টা ২০ মিনিট নষ্ট হয়েছে ভেজা আউট ফিল্ডের কারণে। এ রকম অবস্থায় টেস্টের কোনো প্রাণই থাকে না। গতিপথ ড্র-ই লেখা হয়ে যায়। কিন্তু বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ হওয়াতে পাকিস্তান ফলাফলের দিকে নজর দিয়েছে। যে কারণে পাকিস্তান আজ খুব বেশি সময় ব্যাট করেনি।
চা বিরতির আগেই ৪ উইকেটে ৩০০ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায়। ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দল যথারীতি পড়েছে ব্যাটিং বিপর্যয়ে। স্পিনার সাজিত খান একাই উইকেটে পর উইকেট নিয়ে চলেছেন। চা বিরতির আগেই মাত্র ১০.১ ওভার খেলে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে। সংগ্রহ মাত্র ২২ রান। চা বিরতির পরও বিপর্যয় অব্যাহত ছিল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৪৮। নাজমুল হোসেন শান্ত ২৩ ও সাকিব আল হাসান ৩ রানে ব্যাট করছেন।
ওপেনিংয়ে নতুন জুটি পাঠিয়েও ফায়দা হয়নি। অভিষিক্ত মাহমুদুল হাসান জয় কোন রান না করেই ফিরে গেছেন ৭ বলে খেলে। স্পিনার সাজিদ খানের বলে স্লিপে বাবর আজমের হাতে ধরা পড়েন। একটু পরে সাজিদ খান আবার শিকার করেন আরকে ওপেনার সাদমান ইসলামকে (৩)। পয়েন্টে তার ক্যাচ নেন হাসান আলী। দলপতি মুমিনুল ঝুঁকিপূর্ন রান নিতে গিয়ে হাসান আলীর ডাইরেক্ট থ্রোতে রানআউট হয়ে যান ব্যক্তিগত ১ রানে। মুশফিক ৫ রান করে সাজিদের বলে মিড উইকেটে ফাওয়াদ আলমের হাতে ধরা পড়েন। আগের টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাসকেও (৬) ফিরিয়ে দেন সাজিদত খান নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে।
কন্ডিশনের কারণে দিনের শুরু থেকেই বাংলাদেশের দুই পেসার বেশ ফায়দা পাচ্ছিলেন। পাকিস্তানের ইনিংস ঘোষণাও মনে হয়েছিল তারা পেসারদের থেকে ফায়দা নিতেই ইনিংস ঘোষণা করেছে। কিন্তু বাবর আজম এক প্রান্তে পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদীকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করালেও অপরপ্রান্তে নোমানকে দিয়ে শুরু করেন স্পিন আক্রমণ। অবাক করার বিষয় ছিল তৃতীয় ওভারে তিনি শাহীন শাহকে সরিয়ে স্পিনার সাজিদ খানকে আক্রমণ নিয়ে আসেন। শুরু হয় দুই প্রান্ত থেকে স্পিন আক্রমণ। সাজিদ খানতো নিজের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই সাফল্য পেয়ে যান মাহমুদুলকে ফিরিয়ে দিয়ে।
পাকিস্তান ইনিংস ঘোষণা করেছে ৩০০ রানের পাশাপাশি ফাওয়াদ আলমের ফিফটির সাথে সাথেই। খালেদের করা ইনিংসের ৯৮.৩ ওভারের সময় ফাওয়াদ ১ রান নিয়ে নিজের হাফ সেঞ্চুরি করেন। একই সাথে পাকিস্তানের ৪ উইকেটে ৩০০ রানও পূর্ন হয়। সাথে সাথে পাক দলপতি বাবর আজম ইনিংস ঘোষণা করেন। এ দিন পাকিস্তান ৩৫.১ ওভার খেলে রান যোগ করে ১২২। ফাওয়াদ আলম ৫০ ও মোহাম্মদ রিজওয়ান ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন। চর্তুথ দিন এবাদত ও খালেদ একটি করে উইকেট নেন। প্রথম দিন দুইটি উইকেট পেয়েছিলেন স্পিনার তাইজুল।
চতুর্থ দিন পাকিস্তানের ব্যাটিং ছিল অনেকটা প্রথম দিনের কার্বন কপি। প্রথম দিন টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর প্রথম সেশনেই ২ উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে চাপে রেখেছিল বাংলাদেশ। পরে দলপতি বাবার আজম ও আজহার আলী হাল ধরে আর কোনো উইকেটের পতন হতে দেননি প্রথম সেশনে। এই জুটি দ্বিতীয় সেশনেও কোনো উইকেট পড়তে দেননি। আজ চতুর্থ দিনও পাকিস্তান প্রথম সেশনেই হারায় আগের দিনের অপরাজিত ২ ব্যাটসম্যানকে। বাবার আজম ৭৬ ও আজহার আলী ৫২ রানে ফিরে যান। এরপর ফাওয়াদ আলম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান জুটি বেঁধে প্রথম সেশনে কোনো উইকেট পড়তে দেননি। এমনকি ইনিংস ঘোষণার আগ পর্যন্তও তারা ছিলেন অবিচ্ছিন্ন।