বর্ষসেরা লিটন, পপুলার চয়েজে সেরা সাবিনা
লিটন কুমার দাসকে পেছনে ফেলে দর্শক ভোটে পপুলার চয়েজ পুরস্কার জিতেছেন নারী সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তার আগে তিনি জিতে নেন ২০২২ সালের বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার। একইভাবে লিটনও ২০২২ সালের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জিতেছিলেন। তাহলে কি সাবিনার কাছে লিটন হেরে গেছেন?
পুরস্কার জিতে সাবিনা খাতুন বলেন, ‘যে কোনো পুরস্কারই আমাদেরকে আরও ভালো করার অনুপ্রেরণা জোগায়। বিএসপিএর এই পুরস্কার পেয়ে আমি খুশি। আগামীতে আরও ভালো করার জন্য এই পুরস্কার আমাকে অনুপ্রাণিত করবে।’
ক্রিকেট বাংলাদেশের মানুষের ধ্যান-জ্ঞান। তাদের সাফল্যে বাংলার জনগণ ঘর ছেড়ে বের হয়ে আসেন। সে রকমই ঘটনার জন্ম দিয়েছিলেন সাবিনা খাতুনরা ২০২২ সালে নারী সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। তাদের বরণ করে নিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরে মানুষের ঢল নেমেছিল। ছাদখোলা বাসে দেওয়া হয়েছিল সংবর্ধনা। পরে একের পর এক সংবর্ধনার বৃষ্টিতে সিক্ত হয়েছিলেন সাবিনারা। সাবিনার সাফল্য তাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু তারপরও ২০২২ সালে ক্রিকেটে বাংলাদেশের দলগত কিছু সাফল্য ছিল। কিন্তু সেই দলগত সাফল্যোর বাইরে লিটন দাসের সাফল্য ছিল ঈর্ষণীয়। তাইতো বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক ও সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন সংগঠন বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির বর্ষসেরা পুরস্কারে লিটন-সাবিনার লড়াই বেশ জমে উঠেছিল।
দর্শক ভোটে সেরা সাবিনা হলেও জুরি বোর্ডের বিবেচনায় বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ পুরস্কার ঘোষণা তখনো বাকি। সেখানে লিটন-সাবিনার পাশাপাশি নাম ছিল আর্চার নাসরিন আক্তারের। এখানে শুরুতেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল দ্বিতীয় রানারআপ হিসেবে নাসরিনের নাম ঘোষণা করলে লড়াই আরও ভলোভাবে জমে উঠে লিটন ও সাবিনার মাঝে। তার আগে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী দর্শকদের কাছে জানতে চান কে হতে পারেন সেরা? সেখানে আওয়াজ উঠে লিটন দাসের নাম। পরে তিনি নিজ মুখেই ঘোষণা করেন বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ হিসেবে লিটন দাসের নাম।
পরে লিটনের হাতে ট্রফি, সার্টিফিকেট ও এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং বিশেষ অতিথি স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্চন চৌধুরী পিন্টু।
বর্ষসেরা পুরস্কার জিতে লিটন দাস বলেন, এরকম একটা পুরস্কার পাওয়া ভাগ্যের এবং সম্মানের। আমরা দেশের জন্যই খেলি। এরকম পুরস্কার আমাদেরকে আরও ভালো খেলার জন্য অনুপ্রাণিত করে। দোয়া করবেন, পরেরবার যেন আরও ভালো করতে পারি। পুরস্কারের মঞ্চে আবার আসতে পারি।
হোটেল সোনারগগাঁওয়ে বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির এই বর্ণাঢ্য আয়োজনে ক্রীড়াঙ্গনের তারকাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল। জমকালো এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন অব এশিয়ার (এআইপিএস এশিয়া) ভাইস প্রেসিডেন্ট মোবারক আলবোয়াইন ও সেক্রেটারি জেনারেল আমজাদ আজিজ মালিক, বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির সভাপতি সনৎ বাবলা, সাধারণ সম্পাদক সামন হোসেন।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, এই অনুষ্ঠানে আমি আগেও এসেছি। দিন দিন এই অনুষ্ঠানের কলেবর আরও বড় হচ্ছে। জাঁকজমকপূর্ণ হচ্ছে। বিএসপিএ বাংলাদেশের ক্রীড়া সংবাদিকতাকে একটা নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তারা এশিয়ার ক্রীড়া সাংবাদিক সংগঠন হয়েছে। এই অর্জনে আমিও গর্বিত।
বিশেষ অতিথি স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব অঞ্জন চৌধুরী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই পুরস্কারের পৃষ্ঠপোষকতা করছি। দিন দিন এই আয়োজনের পরিধি আরও বাড়ছে। আগামীতেও আমরা এ আয়োজনে বিএসপিএর পাশে থাকব।
২০২২ সালের পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন:
বর্ষসেরা ক্রিকেটার (পুরুষ): লিটন দাস, বর্ষসেরা ক্রিকেটার (নারী): নিগার সুলতানা জ্যোতি, বর্ষসেরা ফুটবলার (পুরুষ): রবসন দি সিলভা রবিনিয়ো (ব্রাজিল), বর্ষসেরা ফুটবলার (নারী): সাবিনা খাতুন, বর্ষসেরা আর্চার: নাসরিন আক্তার, বর্ষসেরা হকি খেলোয়াড়: আশরাফুল ইসলাম, বর্ষসেরা অ্যাথলেট: ইমরানুর রহমান, বর্ষসেরা কোচ: গোলাম রব্বানী (বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল), উদীয়মান ক্রীড়াবিদ: নাফিজ ইকবাল (টেবিল টেনিস), সিফাত উল্লাহ গালিব (ব্যাডমিন্টন), তৃণমূলের সংগঠক: আমিরুল ইসলাম (কুষ্টিয়ার সাঁতার কোচ), বিশেষ সম্মাননা: সুমিতা রানী (হার্ডলার), সেরা সংস্থা: বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন ও বিশেষ সংবর্ধনা: সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী দল ও ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট দল।
এমপি/এসজি