বাংলাদেশের কব্জায় উইন্ডিজ
গায়ানার উইকেট বলে ম্যাচ জেতার অর্ধেক কাজ করে দেয় টস জয়। প্রথম ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও বাংলাদেশ টস জিতে ম্যাচ জেতার অর্ধেক কাজটা সেরে রেখেছে। এমন ধীর গতির উইকেটে টস জিতে বোলারদের হাতে বল তুলে দিতে যেকোনো অধিনায়কই খুব পছন্দ করবেন। তামিম ইকবালও তাই করেছেন। আর বোলাররা দিয়েছেন তার উত্তম প্রতিদান। উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের উইকেটে চুম্বকের মতো আটকে রেখে রানই করতে দেননি। মাত্র ৩৫ ওভারে ১০৮ রানে গুটিয়ে যায় উইন্ডিজ। ঘরের মাঠে এটি তাদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগে তারা ২০১৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অলআউট হয়েছিল মাত্র ৯৮ রানে। আবার যেকোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে দেশের বাইরে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় সেরা বোলিং। এর আগে তারা কলম্বোতে ২০০৪ সালে শ্রীলঙ্কাকে অলআউট করেছিল ১০৫ রানে।
২২ গজে নামার আগে অধিনায়ক তামিম ইকবাল প্রথম খেলা খেলেন বাইরে। প্রথম ম্যাচের মতো নেন সাহসী সিদ্ধান্ত। প্রথম ম্যাচে এনামুল হক বিজয়কে না নিয়ে নাজমুল হক শান্তকে নেন এবং সেরা একাদশে রাখেন ছয় ব্যাটসম্যানকে। এই ম্যাচে তিনি কন্ডিশন দেখে একজন পেসার কম খেলিয়ে একজন স্পিনার বেশি খেলানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই সঙ্গে ব্যাটসম্যানের সংখ্যাও লম্বা করা। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে তামিমকে নিতে হয়েছে কঠিন সিদ্ধান্ত। বাদ দেন তাসকিনকে। একাদশে ফিরিয়ে আনেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। তামিমের এই সিদ্ধান্তকে অর্থবহ হয়ে উঠে উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের রান করার সংগ্রামে নেমে ব্যর্থ হলে।
প্রথম ম্যাচ তিন পেসারের সঙ্গে ছিলেন দুই স্পিনার। কিন্তু উইন্ডিজ কাবু হয়েছিল দুই স্পিনার নাসুম আর মিরাজে। নাসুম কোনো উইকেট না পেলেও মিরাজ চার উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা। এই ম্যাচে মোসাদ্দেক যুক্ত হওয়াতে স্পিনারের সংখ্যা বেড়ে হয় তিন। আর এই তিন জনে মিলে উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের ঘূর্ণির মাঝে ফেলে দেন। ১০ উইকেটের আটটি তারা তিনজনে ভাগাভাগি করে নেন। একটি ছিল রান আউট আর একটি নেন পেসার শরিফুল।
তিন স্পিনারের মাঝে সবচেয়ে দুর্ধর্ষ ছিলেন নাসুম আহমেদ। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচ খেলতে নেমে তিনি যেন ব্যাটসম্যানদের জন্য যমদূত হয়ে উঠেন। তার বলে রানই নিতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। ১০ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে নেন তিন উইকেট। তার শিকার ছিলেন শাই হোপ (১৮) শামারহ ব্রুকস (৫) ও অধিনায়ক নিকোলাস পুরান (০)। মিরাজ এই ম্যাচেও নেন চার উইকেট। ৮ ওভারে ২৯ রানে দেন তিনি। তিনি একে একে আউট করেন ব্রান্ডন কিং ( ১১), শেফার্ড (৪), জালজারি জোশেফ (০) ও গুডাকেশ মোটিকে ( ৬)। মোসাদ্দেকের প্রথম উইকেট এনে দিয়েছিলেন কাইল মিলার্সকে ১৭ রানে আউট করে। এদের উইকেট পাওয়ার পাঝে রভম্যান পাওয়েলকে (১৩) আউট করে।
প্রায় এক বছর পর একদিনের ম্যাচে আবার ফিরে মোসাদ্দেক ১০ ওভারে ৩৭ রানে নেন এক উইকেট। তিনজনে মিলে ২৮ ওভারে রান দেন ৭৫। তাদের ১২০ বলে কোনো রান নিতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। সবচেয় বেশি ডট বল দেন নাসুম ৪৮টি। এরপর মোসাদ্দেক ৪০টি। মিরাজে ডট বলের সংখ্যা ছিল ৩২টি।
এমপি/এসএন