মোসাদ্দেকের মনে রাখার মতো প্রত্যাবর্তন
অমিত সম্ভাবনার ছাপ রেখে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে পথ চলা শুরু করেছিলেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। কিন্তু সেই পথ চলা তার মসৃন হয়নি। ব্যক্তিগত নানান জুট-ঝামেলায় পড়ে ২২ গজের নিজের স্বাভাবিকত ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি। ফলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন জাতীয় দলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করে আবার জাতীয় দলে ফিরলেও তা ছিল ক্ষনস্থায়ী। কারণ নিজেকে পাকাপোক্ত করার মতো নৈপুণ্য প্রদশর্ন করতে পারেননি। এভাবে চলছিল ২০১৬ সাল থেকে। আসা-যাওয়া পথের মিছিলে মোসাদ্দেক আবার জাতীয় দলে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে মে মাসে খেলেছে টেস্ট। উইন্ডিজ সফরে খেলেছেন টি-টোয়েন্টি। এবার দ্ধার খুলেছে একদিনের ম্যাচেও। উইন্ডিজের বিপক্ষে গায়ানায় দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে মোসাদ্দেক ডুকে পড়েন সেরা একাদশে। সময়ের হিসেবে ২০২১ সালেল ২০ জুলাই খেলেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচ। এবার ফিরেই নিজেকে মেলে ধরেছেন আপন মহিমায়। তবে তা ব্যাট হাতে নয়, বল হাতে। ১০ ওভারে বোলিং করে ৩৭ রান দিয়ে নিয়েছেন এক উইকেট।
নামের পাশে উইকেট মাত্র একটি হলেও তার সেই উইকেট ছিল ম্যাচের প্রথম। দ্বিতীয় ম্যাচেই উইন্ডিজকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করার মিশনে নামা বাংলাদেশ দল টস জিতে ম্যাচ জেতার অর্ধেক কাজটা করে রেখেছিল। বাকি ছিল ২২ গজে নৈপুণ্য দেখানো। অধিনায়ক তামিম ইকবাল টস জিতে বোলারদের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন। আর সে কাজটি তিনি শুরু করেছিলেন প্রত্যাবর্তন ম্যাচে মোসাদ্দেককে দিয়ে।
উইকেট আসি আসি করেও আসছিল না। স্ট্যাম্পিং মিছ। স্ট্যাম্পিং করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড মিছ। রান আউটও মিছ। রিভিউ নিয়ে নাসুমের উইকেট মিছ। এতো সবের মিছের পর মোসাদ্দেকই এনে দিয়েছিলেন প্রথম উইকেট। ২ ওভারের প্রথম স্পেলে সুবিধা করতে পারেননি। দিয়েছিলেন ১২ রান। এরপর ইনিংসের ১১ নম্বার ওভারে তামিম ইকবাল আবার তাতে আক্রমনে নিয়ে আসেন। আর এখানেই সফল হন মোসাদ্দেক। দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই তিনি কাইল মিলার্সকে বোল্ড করেন। এই সাফল্য তামিম ইকবাল তার হাতে থেকে আর বলে তুলে নেননি। টানা ৮ ওভার বোলিং করিয়ে কোটা শেষ করেন। ৮ ওভারের দ্বিতীয় স্পেলে মোসাদ্দেক রান দেন ২৫। তার বোলিং বিশ্লেষন ছিল ১০-০-৩৭-১।
দলে মোসাদ্দেককে নেয়া হয়েছিল দুইটি মিশন পূরনে। এক কন্ডিশনের কারণে একজন স্পিন বোলারের প্রয়োজনীয়তায় এবং দ্বিতীয়ত ব্যাটিং লাইন লম্বা করা। বল হাতে মোসাদ্দেক তার কাজটি ঠিকই করে গেছেন। কিন্তু ব্যাট হাতে তিনি হয়তো সে সুযোগ নাও পেতে পারেন। কারণ তার দেখিয়ে দেয়া পথে পরে বাংলাদেশের বোলাররা যেভাবে উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরেছেন, তাতে করে বাংলাদেশের সামনে খুব বড় টার্গেট হওয়ার সম্ভাবনা কমই। সে ক্ষেত্রে মোসাদ্দেকের ব্যাটিং করার সুযোগ নাও আসতে পারে। তার অগ্রগ্রামীরাই টার্গেট অতিক্রম করে ফেলতে পারেন।
এমপি/