ওয়ানডেতেও অভিষেকে নাসুমের নজর কাড়া বোলিং
রঙিন পোষাকের ক্রিকেট দুনিয়ায় টি-টোয়েন্টির পর একদিনের ম্যাচেও দারুণ পথচলা শুরু করলেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অভিষেকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। রবিবার (১০ জুলাই) একদিনের ম্যাচে উইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক কোনো উইকেট না পেলেও ৮ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়েছেন। মেডেন ছিল তিনটি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেকেই নজর কাড়ার পর আর নাসুমকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এই ক্রিকেটে তার অভিষেক হয়েছিল নিউজিল্যান্ডের মতো কঠিন কন্ডিশনে। হ্যামিলটন টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ড করেছিল ৩ উইকেটে ২১০ রান। সেখানে নাসুম দিয়েছিলেন মাত্র ৩০ রান। উইকেট নিয়েছিলেন মার্টিন গাপটিল ও ফিল অ্যালেনের। যদিও ওই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ৬৬ রানে।
অভিষেকেই ইনিংসের শুরুতে নাসুমের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রথম ওভারের শেষ বলে নাসুম অ্যালেনকে আউট করেছিলেন বোল্ড করে। অ্যালেনের সেটিই ছিল প্রথম বল মোকাবেলা। এরপর মারমুখি গাপটিলকে আউট করেছিলেন দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম ওভারে।
ইনিংসে মাহমুদউল্লাহ যে পাঁচজন বোলারকে ব্যবহার করেছিলেন সেখানে সবচেয়ে কম ইকোনমি রেট ছিল নাসুমের ৭.৫০। দ্বিতীয় কম ইকোনমি ছিল মেহেদি হাসানের ৯.২৫। বাকি তিনজনেরই ছিল দশের উপরে। এই তিনজনই ছিলেন পেসার মোস্তাফিজ, শরিফুল ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এভাবেই নাসুম বিশ্ব ক্রিকেটে তার আগমনি বার্তা জানান দিয়েছিলেন বীরদর্পে। এরপর তিনি আজকের একদিনের ম্যাচে অভিষেকের আগে ২২ ম্যাচ খেলে ২৮ উইকেট নিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথম ওভারে উইকেট পাওয়াটাতে তিনি অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিলেন।
একদিনের ক্রিকেটে চলার পথে তিনি প্রথম ওভারে উইকেট না পেলেও এমন কি ৮ ওভার বোলিং করে উইকেট শূন্য থাকলেও মাহমুদউল্লাহর মতো একদিনের ম্যাচের অধিনায়ক তামিম ইকবালও ইনিংসের শুরুতে নাসুমের উপর আস্থা রেখেছিলেন। যে আস্থার প্রতিদান নাসুম দিয়েছেন অক্ষরে অক্ষরে পালন করে।
নাসুম তার ৮ ওভারের কোটা পূরণ করেন তিন স্পেলে। প্রথম স্পেল ৫-৩-৩-০। দ্বিতীয় স্পেল ১-০-২-০ এবং তৃতীয় স্পেল ২-০-১২-০। নাসুম হয়তো উইকেট পাননি সত্যি কিন্তু দুইবার তিনি উইকেট পেয়েও বঞ্চিত হয়েছেন। তার বল বুঝতে না পেরে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েছিলেন সামারা ব্রুকস ও নিকোলাস পুরান। নাসুমসহ ফিল্ডারদের সমস্বরে জোড়ালো আবেদনে আম্পায়ার তর্জনি তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু দুইবারই রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তারা।
নাসুম প্রথম ওভারে রান দেন মাত্র একটি। দ্বিতীয় ওভারে সামারা ব্রুকস আউট হয়ে বেঁচে যান। নাসুম এই ওভারে কোনো রান দেননি। তৃতীয় ওভারে ২ রান দেয়ার পর চতুর্থ ও পঞ্চম ওভার নেন টানা মেডেন। দ্বিতীয় স্পেলে ইনিংসের ১৩ নম্বর ওভার করতে এসে তিনি রান দেন একটি। তার দ্বিতীয় স্পেল ছিল এই এক ওভারের। শেষ স্পেল ছিল ২ ওভারের। ইনিংসে ২৭ ও ২৯তম ওভার করতে এসে তিনি রান দেন ১০ ও ২। এই স্পেলের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে তিনি নিকোলাস পুরানকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে উইকেট পাওয়ার আনন্দে মেতে উঠেন। কিন্তু পুরানও রিভিউ নিয়ে নাসুমতেক হতাশ করেন।
এদিন উইকেট না পাওয়াটা নাসুমের জন্য ছিল হতাশার, দূভার্গ্যের। তবে তিনি ৫ ওভারের প্রথম স্পেলে উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের যেভাবে রান করতে না দিয়ে চেপে ধরেছিলেন পরে তারা আর তা কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
এমপি/এসআইএইচ