টেস্টের উন্নতিতে বিসিবির দাওয়াই ‘ম্যাচ ফি’ বৃদ্ধি
২২ গজে টেস্টে ক্রিকেটে কিছুতেই কিছু হচ্ছে না বাংলাদেশে দলের। পরিকল্পনায় নানা পরিবর্তন এনেও ফায়দা হচ্ছে না। জয় হয়ে উঠেছে সোনার হরিণ। হার হয়েছে নিত্যসঙ্গি। কিন্তু এভাবে আর কতোকাল? টেস্ট ক্রিকেটে পথ চলা শুরুর ২২ বসন্ত পূর্ণে হয়েছে ২৬ জুন। কিন্তু নেই দৃশ্যমান সে রকম কোনো উন্নতি। মাঝে মাঝে আসে এক একটি জয়। তাই নিয়ে চলে চর্বিত চরণ? দেখে মনে হবে বিশ্বজয়! কিন্তু পরের ম্যাচেই আবার যখন আগের জায়গা ফিরে যায়, তখন সবাই নেমে আসেন মাটিতে। ২২ বছরে এ রকম উদাহরণ আছে ভুরি ভুরি। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডকে হারানোর পর সে কি উদযাপন। কিন্তু নিজেদের আর জয়ের মাঝে ধরে রাখতে পারেনি। একই অবস্থা হয়েছে এ বছর শুরুতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে নিউ জিল্যান্ডকে হারানোর পরও। ৮ উইকেটে জেতা ম্যাচটি ছিল ক্রিকেট বিশ্বের বিষ্ময়। কিন্তু এরপর আবার সেই আগের জায়গাতেই ফিরে গেছে বাংলাদেশে। হারে হারে জর্জরিত। এক একটি হারে এমনই বিশাল ব্যবধান, বাংলাদেশ যে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জিতেছিল তা বেমালুম সবাই ভুলতে বসেছেন। এই অবস্থা থেকে উত্তোরন পেতে বিসিবি এখন নতুন পথের সন্ধানে। আপতত তারা টনিক হিসেবে বেছে নিয়েছে ক্রিকেটারদের আর্থিক বিষয়টিকে। ম্যাচ ফি বাড়ানোর কথা ভাবছে বিসিবি। আজ মিরপুরে সাংবাদিকদের বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘ম্যাচ ফি হয়ত বেড়ে যাবে। আরও কি কি করতে পারি সেই চিন্তাভাবনা আছে । ‘বর্তমানে প্রতি টেস্টে এক একজন ক্রিকেটার ম্যাচ ফি হিসেবে পেয়ে থাকেন ৬ লাখ টাকা। ২০২০ সালে তাদের সর্বশেষ ম্যাচ ফি বাড়ানো হয়েছিল। তখন ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছিল ৬ লাখ টাকা। এবার কতো বাড়ানো হয় তা দেখতে হবে। যেহেতু উদ্দীপনা বাড়াতে ম্যাচ ফি বৃদ্ধির উদ্যোগ, তাই ধারনা করা হচ্ছে বেশ ভালোই বাড়বে।
টেস্টের বর্তমান ব্যর্থতা থেকে রক্ষা পেতে বিসিবি ইতিমধ্যে তিন সদস্যের ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে দিয়েছে। এই কমিটি ঈদের পর করবে সভা। সেখান থেকে আসবে নতুন কোনো দিক নির্দেশনা। জালাল ইউনুস বলেন, ‘টেস্টে আমরা ওভাবে পারফর্ম করছি না। দক্ষিণ আফ্রিকায় সেভাবে ভালো করতে পারিনি, ওয়েস্ট ইন্ডিজেও ভালো করতে পারিনি। আমরা এটা নিয়ে অনেক উদ্বিগ্ন। সভাপতি সাহেব ওয়ার্কিং গ্রুপ করেছেন। সবাইকেই এটা নিয়ে ভাবতে হবে। ক্রিকেট অপারেশন্স, গেম ডেভেলপমেন্ট, হাই পারফরম্যান্স, এইজ গ্রুপ কমিটির চেয়ারম্যানরা শিগগিরই মিটিংয়ে বসব, হয়ত ঈদের পরপরই। দীর্ঘমেয়াদী একটা পরিকল্পনা করতে হবে। টেস্টে কীভাবে আরও ভালো করা যায়, টেস্ট খেলোয়াড়দের জন্য কি কি সুবিধা বা ব্যবস্থা নেওয়া যায় এদিকে আরও বেশি নজর দিতে চাই। যাতে টেস্টে আগ্রহ আরও বাড়ে। একটা টেস্ট দলে যারা খেলবে তাদের যেন পূর্ণ মনোযোগ এখানে থাকে। অনেকে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বেশি খেলতে চায়। যারা বেশি আগ্রহী, নিবেদিত এদের জন্য কি করা যায় এগুলো নিয়ে বসতে চাচ্ছি। এটার জন্যই ওয়ার্কিং গ্রুপের কথা বলেছেন ।’
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলেছে ১৩৪টি। জয় মাত্র ১৬টিতে। যার অর্ধেকই দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। হারের ক্ষেত্রে পূরণ করেছে সেঞ্চুরি (১০০টি)। ড্র করেছে ১৮টিতে।
এমপি