দেখা যাবে নতুন উদ্বোধনী জুটি
আটলান্টিক মাহাসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে বাংলাদেশ দলের কয়েকজন ক্রিকেটার বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনেক ধকল সহ্য করে দল শেষ পর্যন্ত নিরাপদেই সেন্ট লুসিয়া থেকে ডোমিনিকায় গিয়ে পৌঁছাতে পেরেছে। জানা গেছে ক্রিকেটাররা সবাই এখন সুস্থ।
বৃহস্পতিবার রাতেই তারা একটি ডিনারে অংশ নেন। পরের দিন শুক্রবার সবাই অনুশীলনের জন্য প্রস্তুতও ছিলেন। কিন্তু সাইক্লোনের প্রভাবে বৃষ্টি হওয়াতে টাইগাররা কোনো অনুশীলনও করতে পারেননি। জিম করেই তাদের অনুশীলন সারতে হয়েছে। কাজেই উইকেট কেমন হবে তা আর আন্দাজ করা সম্ভব হয়নি দলনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। একেবারে ম্যাচর দিন গিয়ে (যদি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে) উইকেট সম্বন্ধে আন্দাজ করতে হবে।
এ মাঠে আবার অতীত পরিসংখ্যান আজকের ম্যাচে খুব একটা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মনে করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। কারণ ২০১৭ সালে প্রলংকরী হারিকেন মারিয়ার কারণে ডোমিনিকার উইন্ডসর পার্ক স্টেডিয়াম লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল। পরে সংস্কার করে আবার খেলার উপযোগী করে তোলা হয়। যা আজকের ম্যাচ দিয়ে আবার নতুন করে পথচলা শুরু করবে। এ মাঠে অবশ্য বাংলাদেশ দলের ২০০৯ সালে দুইটি একদিনের ম্যাচ খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে। জিতেছিল ৫২ রান ও ৩ উইকেটে। সেই দলের মাত্র দুই ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহজ আছেন এই দলে। তখন সাকিব ছিলেন অধিনায়ক, এখন মাহমুদউল্লাহ।
তবে এটিকে অনেক পুরোনো উল্লেখ করে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘ভালো স্মৃতি মনে করতে সবসময় ভালো লাগে। সাকিব আর আমি আজ এ নিয়ে আলাপ করছিলাম।এটি সব সময় ভালো অনুভূতি দেয়। কিন্তু এখন সম্পূর্ণ ডিফারেন্ট। উইকেট ভিন্ন হতে পারে। উইকেট ভালো হলে ভালো। আমাদের যেকোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।'
এদিকে উইকেট সম্বন্ধে নেই বাংলাদেশ দলের কোনো ধারণা। আাবার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সময়টাও ভালো যাচ্ছে না। গত বিশ্বকাপ থেকেই দুর্যোগের মাঝ সময় যাচ্ছে। সর্বশেষ খেলা ১০ ম্যাচে জয় মাত্র একটিতে। প্রতিটি ম্যাচেই ছিল ব্যাটিং ব্যর্থতার মহামারি। তা এমনই প্রকট ছিল যে একটি মাত্র ম্যাচে দেড়শ রানের বেশি করতে পেরেছিল। দুইটি ম্যাচে ছিল শতরানের নিচে।
এখানে প্রতিটি ম্যাচেই উদ্বোধনী জুটি বাংলাদেশকে বেশি ভুগিয়েছে। তা সংক্রামিত হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল টপ অর্ডার থেকে মিডল অর্ডার হয়ে লোয়ার অর্ডার পর্যন্ত। এ ১০টি ম্যাচে বাংলাদেশ পাঁচ জোড়া জুটি নামিয়েও সফল হতে পারেনি। এক প্রান্তে মোহাম্মদ নাঈম শেখ থাকলেও অপর প্রান্ত বারবার পরিবর্তন হয়েছে। এমনকি সাকিব আল হাসান পর্যন্ত ইনিংসের উদ্বোধন করেও সফল হতে পারেননি। আজ আবার নতুন জুটি দেখা যেতে পারে। তেমনটিই ইঙ্গিত করেছেন মাহমুদউল্লাহ। মোহাম্মদ নাঈম শেখ ব্যর্থতার কারণে দলেই নেই। নতুন করে এসেছেন এনামুল হক বিজয়। তাকে দেখা যাবে নতুন করে ভরসা পাওয়ার সন্ধানে মুনিম শাহরিয়ার সঙ্গে।
সম্ভাব্য নতুন এ উদ্বোধনী জুটি নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘মুনিম এখনও দলে নতুন। বিজয় অনেকদিন পর মাত্র এল। ওদের ভালো সময় দিতে হবে। টিম ম্যানেজমেন্ট ও আমার দায়িত্ব ওরা যেন নিশ্চিন্তে খেলতে পারে। ওরা যেন সঠিকভাবে সুযোগ পায়। এটা নিশ্চিত করা জরুরি। আমার তরফ থেকে আমি এটা চেষ্টা কর। আশা করি ওরা সুযোগ পাবে, নিজেদের খেলাটা খেলতে পারবে ও ভালো করবে।’
এরপর একে একে আসতে পারেন লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ, শেখ মেহেদি হাসান। অধিনায়ক বলেন, 'সাকিব, লিটন আছে। আমি আছি। আফিফ, সোহান, মোসাদ্দেক আছে। শেখ মেহেদি আছে। আমি মনে করি আমাদের ব্যাটিং গভীরতা ভালো।'
বাংলাদেশ দুই পেসার আর তিন স্পিনার নিয়ে খেলতে পারে। সেক্ষেত্রে সাকিব শেখ মেহেদি সঙ্গে নাসুম আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও ইনজুরি কাটিয়ে এই ম্যাচ দিয়ে আবার ফিরতে যাওয়া তাসকিন সামলাবেন বোলিং আক্রমণ। মাহমুদউল্লাহ বলেন, 'আমাদের বোলিং আক্রমণ খুবই ভালো। বৈচিত্র্য আছে। আশা করি চ্যালেঞ্জিং সিরিজ হবে।'
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দল নিয়মত ভালো করতে না পারা নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আমি এ জিনিসটা দুইভাবে দেখি। আমরা হোম কন্ডিশনে অনেক বেশি ধারাবাহিক। একই সময়ে অ্যাওয়ে ম্যাচে যখন যাই উন্নতির ঘাটতি এখনও আছে। এখানে আরও ভালো হতে হবে, এই জিনিসটা আমি স্বীকার করি। বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় আছে যারা এখনো তরুণ, অনভিজ্ঞ। ওদের সময় দিতে হবে। বিশ্বকাপের আগে আমরা আরো ১০-১২টি ম্যাচ খেলব। ওরা যেন যথেষ্ট সুযোগ পায়। ওরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ওদের জন্যও ভালো, দলের জন্যও ভালো।'
এমপি/এসএন