বিসিবির পাঁচ ঘন্টার সভার ফলাফল?
মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে কোনো কিছু থাকুক আর না থাকুক গ্রেটার ইন্টারেস্টে সাংবাদিকরা সেখানে প্রতিদিনই যান। সংবাদ সংগ্রহ করে থাকেন। বিসিবির ঘটমান অনেক কিছু জানার পাশাপাশি ঘটতে যাওয়া অনেক কিছুও থাকে অনেকের নখদর্পনে। কিন্তু বিসিবির আজকের চতুর্থ সভার খবর জানতেন না তাদের অনেকেই। বিসিবির মিডিয়া বিভাগ থেকে আজ সকালে জানানো হয় সভার খবর। সভা শুরু হবে বেলা আড়াইটায়। সেই সভা পরে শেষ হয়ছে সাতটার পর। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ ঘন্টার বৈঠকে তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ন কিছু সিন্ধান্ত আসেনি। উইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে সিরিজে সাকিবের না খেলার বিষয়ে অনানুষ্ঠানিক ছুটি যাওয়া, টেস্ট দলে থেকে নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়ার পর সেন্ট লুসিয়া টেস্টে না খেলা মুমিনুলকে আবার সেই উইন্ডিজে ‘এ’ দলের সঙ্গে পাঠানোর বিষয় নিয়ে বিসিবির ভাবনা, ঘরোয়া লঙ্গার ভার্সন ক্রিকেটকে আরো অর্থবহ করে তুলার জন্য কাজ করা এ সব বিষয়ে আলোচনা হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ সব বিষেয় নিয়ে কথা বলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
সাকিবের ছুটির বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে ও রকমভাবে আমার কথা হয়নি। সাকিব যাওয়ার আগে অন্যদের থেকে জেনেছি, ও টেস্ট খেলবে না। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে। তারপর আমার সঙ্গে যখন বসল, তখন বললো টেস্ট খেলবে। খেললও তো এবং ওকে অধিনায়ক করা হলো। আমি এটা শুনেছি, ও জালাল ভাইকে বলেছে, ওয়ানডে সিরিজ নাও খেলতে পারে। আগেই বলে গেছে। ও এখন পর্যন্ত বোর্ডে আর এটা নিয়ে কথা বলেনি। আজ-কাল ওর সঙ্গে কথা বললেই আমি বুঝতে পারব। আনুষ্ঠানিকভাবে বোর্ডকে কিছু বলেনি। তবে ওটা আনুষ্ঠানিক ধরতেও পারেন। ও মৌখিকভাবে বলেছে জালাল ভাইকে। ছুটি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দেখি..আসলে কি অবস্থা দাঁড়ায়।’
মুমিনুলকে জাতীয় দলে আবার ফেরানোর প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমি মনে করি, জাতীয় দলের যারা অফফর্মে আছে তারা যদি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে আবার ওখানে যেতে পারত তাহলে খুব ভালো করতো। বিশেষ করে যারা আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি খুব ভালো ক্রিকেটার কিন্তু রানে নেই। উদাহরণ, মুমিনুল। আমি নিশ্চিত মুমিনুল ফিরে আসবে। এতোগুলো টেস্ট সেঞ্চুরি করলো। এতো ভালো একজন ক্রিকেটার। আমরা তাকে শুধু টেস্ট ক্রিকেটারই বলে দিলাম এবং সে টেস্টে অধিনায়কও হলো। হঠাৎ করে প্রায় এক বছর বা ১০ ম্যাচে রান পাচ্ছে না। আমার ধারণা সে যদি একটু ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলে তাহলে ফিরে আসবে। একটা একটু সময়ের ব্যাপার।’ উইন্ডিজ সফরে ‘এ’ দলের হয়ে মুমিনুলকে পাঠানো বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই মুমিনুলকে সেখানে (ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ‘এ’ দলের সফর) পাঠানোর চিন্তা তো থাকবেই। এগুলো তো আমার বলা কঠিন। আমি তো নির্বাচক, ম্যানেজমেন্ট, কোচিং স্টাফদের কারো সঙ্গে কথা বলিনি। স্বাভাবিকভাবেই মনে হচ্ছে, এটা তো ওর জন্য দারুণ সুযোগ হতে পারে।’
উইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে সিরিজের তিনটি ম্যাচ বিশ্বকাপের সুপার লিগের অংশ নয়। যে কারণে সাকিবের না খেলার সিন্ধান্ত। এ রকম সিরিজে দলের অন্য যে সব সিনিয়র ক্রিকেটার আছেন, যেমন তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের ছুটি দিয়ে অন্যদের পরখ করে নেয়ার বিষয়ে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আমি তা মনে করি না (সিনিয়রদের ছুটি কোনো বাজে ইম্প্রেশন তৈরি করবে)। র্যাকিংয়ের অংশ নয়, সেসব জায়গায় সিনিয়র ক্রিকেটাররা যদি ছুটি চায় তাহলে ভালো। এমনিতে আমরাও নতুন ছেলেদের সুযোগ করে দেওয়ার সুযোগ পাই। এটা তো আমাদের উপর নির্ভর করে না। আগে জানতে হবে ওদের জায়গায় খেলোয়াড় আছে কিনা। সব কিছু চিন্তা করে তারপর। আমাদের ভাবনায় আছে, ওদের তো একটু ব্রেক দরকার। কিভাবে দেব? সামনের বছর পাঁচটা টেস্ট ম্যাচ। পরের বছর ১৪ টেস্ট। ১৪টা টেস্ট ম্যাচ খেলা এক বছরে। একটা দলের, যাদের বেশিরভাগ খেলোয়াড় আবার ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিও খেলে। আমরা তো এখন থেকেই চিন্তা করছি কী হবে। কীভাবে সেটা ম্যানেজ করবে।’
নাজমুল হাসান পাপন ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে আরও অর্থবহ করে তুলতে চান। তিনি বলেন, ‘ঘরোয়া ক্রিকেট বিশেষ করে লংগার ভার্সনকে আরো কিভাবে কি (উন্নত) করা যায় কিনা সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটা ওয়ার্কিং কমিটি বসে তিনটা প্রোপোজাল তৈরি করছে। আমাদের কাছে দেবে। এরপর আমরা সেগুলো প্রস্তাবনাগুলো দেখব।'
এমপি/এএস