টি-টোয়েন্টি সিরিজে জয় উপহার দিতে চান তাসকিন
আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে সাদা পোষাকে বাংলাদেশের সময় মোটেই ভালো যাচ্ছে না। খুবই বাজে সময় পার করছে। যদিও বছরটা শুরু হয়েছিল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউ জিল্যান্ডকে হারানোর মাধ্যমে। কিন্তু এই শেষ। এরপর শুধুই ব্যর্থতার বৃত্তে আটকা। লৌহা আর চুম্বক যেমন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে থাকে, তেমনি হার শব্দটা বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে অঙ্গাঙ্গিভাবে জাড়য়ে আছে। কিছুতেই আলাদা করা যাচ্ছে না।
এ সব ব্যর্থতার মাঝে তবুও শান্তনার প্রদীপ হয়ে জ্বলছে পেসারদের সাফল্য। এক একটি বাজে হারের মাঝেও পেসাররা তাদের সেরাটা ঢেলে দিয়ে দলকে ‘অক্সিজেন’ দিয়ে যাচ্ছেন।
সর্বশেষ উইন্ডিজ সফরেও দুই টেস্টে বাজে হারের বিপরীতে পেসাররা ছিলেন আলোকিত।
পেসারদের এ রকম আলোকিত ভুবনের মাঝে কিন্তু ছিলেন না এ মহূর্তে দলের সেরা পেসার তাতকিন আহমেদ। মূলত ইনজুরিই তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝ পথে ছিটকে গিয়েছিলেন দল থেকে। তারপর থেকেই তিনি দলের বাইরে। একে একে মিস করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে শেষ টেস্ট এবং ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুইটি ও উইন্ডিজ সফরে দুইটি। আবার তিনি মাঠে ফিরবেন উইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে। সর্বশেষ খেলোয়াড় হিসেবে তিনি উইন্ডিজ সফরে দলের সঙ্গে গিয়ে যোগ দিয়েছেন।স্বতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন প্রায় তিন মাস পর। তাকে পেয়ে দলের পেস আক্রমণ আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে সন্দেহ নেই।
যে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তাসকিন ছিটকে পড়েছিলেন, সেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে দলের সঙ্গে পেস বোলিং কোচ হিসেবে যোগ দিয়ে কাজ করছেন প্রোটিয়াদের সাবেক গতি তারকা অ্যালান ডোনাল্ড। কিন্তু তার সান্নিধ্য তাসকিন পাননি। এবার সেন্ট লুসিয়া থেকে পাওয়া শুরু করেছেন। সেন্ট লুসিয়া টেস্ট একদিন আগেই শেষ হয়ে যাওয়াতে কাল কয়েকজন ক্রিকেটার, যারা টেস্ট দলে ছিলেন না, তাদের নিয়ে ডমিঙ্গো, জেমি সিডন্স আর ডোনাল্ড ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে অনুশীলন করেন। এ সময় তাসকিনকে নিয়ে আলাদাভাবে সময় কাটান ডোনাল্ড। তানকিনের কাছ থেকে তিনি সর্বোচ্চ সেরাটা নিংড়ে নিতে চান। অনুশীলন শেষে ডোনাল্ডে প্রসঙ্গে টেনে এনে শেষে তাসকিন বলেন, ‘আমি ওর (ডোনাল্ড) সঙ্গে কথা বলছিলাম যে আমি ইনজুরি থেকে এসেছি এখন আমার কাজটা কী হবে? ও আমাকে এটাই বুঝাতে চাচ্ছিল যে, দেখ তুমি যে টাইপের বোলার, তোমার কাজ হচ্ছে গতি আর আগ্রাসন। কিছু সময় তুমি অনেক রান দেবে, কিছু সময় তুমি একাই উইকেট নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দেবে-কিন্তু তোমার দায়িত্ব থেকে তুমি নিজেকে সরাবে না। তোমার যেটা কাজ, সেটাতে তুমি নজর দাও। দিন যত যাবে, রিদম আরও ভালো হবে। আমরা আরো কাজ করব সামনে।’
দীর্ঘদিন পর আবার অনুশীলণে ফিরতে পেরে খুবই খুশি। তাসকিন বলেন,‘আল্লাহর রহমতে খুবই ভালো লাগলো যে প্রায় তিন মাস পরে টিমের সঙ্গে পুরোপুরি অনুশীলন করলাম। ফিল্ডিং-বোলিং-ব্যাটিং সবই করলাম। প্রথমে একটু জড়তা লাগছিল। পরে যখন শুরু করলাম, সবই ভালো হয়েছে। অনুশীলন যখন শেষ করলাম, তখন খুবই ভাল লাগছে।
টেস্ট সিরিজ হারলেও তাসকিন টি-টোয়েন্টি সিরিজে দেশবাসীকে জয় উপহার দিতে চান। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের শেষ টেস্ট সিরিজটা ভালো যায়নি। সামনে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর ওডিআই সিরিজ। যে ভুলগুলো হয়েছে, সে ভুলগুলো নিয়ে ভবিষ্যৎয়ে কাজ করতে হবে। ঐটা নিয়ে বসে থাকা যাবে না। এই মুহূর্তে আমরা টি-টোয়েন্টি সিরিজটার দিকেই তাকিয়ে আছি। সামনে আমরা টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়ে সবাই পরিকল্পা করব। চেষ্টা করব ভালো খেলে দেশকে জয় উপহার দিতে।’
উইন্ডিজের বিপক্ষে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর এ বছরের বাকি সময় বাংলাদেশকে সবচেয় বেশি খেলতে হবে এই ফরম্যাটে। এশিয়া কাপ হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এর আগে নিউ জিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে ত্রিদেশয়ি টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
এ নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘সামনে থাকা প্রত্যোকটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বা সিরিজই এখন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । কারণ, সামনে এশিয়া কাপ আছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। টি-টোয়েন্টির বড় বড় ইভেন্টের খেলা আছে। এখন আসলে প্রত্যোকটা ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জয়ের জন্যই খেলব। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারি। নিজেদের উন্নতি করতে পারি, আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারি বেশি বেশি জয় পেয়ে।
এটাই লক্ষ্য থাকবে, যাতে সেরাটা খেলে সামনের দিনগুলোতে নিজেদেরকে আলো ভালোভাবে প্রস্তুত করতে পারি বিশ্বকাপের জন্য।
এমপি/এমএমএ/