বাজে ব্যাটিং প্রদশর্নীতে ইনিংস হারের মুখে বাংলাদেশ!
ফেইলার অব দ্যা পিলার অব সাকসেস। কিন্তু বাংলাদেশ দলের সাকসেস হওয়ার জন্য আর কত ব্যর্থ হতে হবে? ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হচ্ছেন। ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। আউট হওয়ার ধরন নিয়ে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। পরবর্তীতে শুধরে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যেই লাউ সেই কদুই থেকে যাচ্ছে। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট খেলার সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ব্যাটম্যানদের নানাভাবে সমালোচনা করেছেন। টেস্ট ক্রিকেট খেলা যে কঠিন তাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যেন ক্লাসের অবাধ্য ছাত্র।
শিক্ষকের কথা শুনতে তাদের ঠেকা পড়েছে। তারা যেটা ভালো বুঝে সেটাই করে থাকে। যে কারণে ছাত্র হিসেবে তাদের অগ্রযাত্রায় উন্নতি থাকে না। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও কোচের কথা শুনতে যেন বাধ্য হন। টেস্ট ক্রিকেট খেলতে নামলেই কেমন যেন একটা তাড়া অনুভব করেন। যে তাড়া থেকে তারা পিচে বেশি সময় থাকতে চান না। ভুলেই যান তারা খেলছেন টেস্ট ক্রিকেট। যে কারণে বারবার ভুল খেলে ব্যর্থ হওয়ার পরও শিক্ষা নিতে তাদের অনীহা বা নিজেদের সংশোধন করতে আগ্রহী নন। কী জবাব দেবেন তামিম ইকবাল তার আউট নিয়ে। জবাব কী দিতে পারবেন শুরুর ঝড় সামাল দিয়ে ইনিংসে মেরামত করার সময় নাজমুল ও সাকিবও তামিমের মতো আত্মাহুতি দেওয়া নিয়ে।
১৭৪ রানে পিছিয়ে থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে শুরু করতে না করেতই ৩ উইকেট নেই। রান মাত্র ৩২। ওভার খেলা হয়েছে মাত্র ৮.৫টি। সব কটি উইকেটই নেন কেমার রোচ। এ সময় বৃষ্টি এসে যেন বাংলাদেশের রক্ষাকবচ হয়। আম্পায়াররাও চা বিরতি দিয়ে দেন। শুরুর ধাক্কায় মনে হবে রোচ কিংবা উইন্ডিজের পেসারদের আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু চা বিরতির পর আবার খেলা শুরু হলে উইন্ডিজের বোলারদের সেই তোপ স্বাভাবিক হয়ে আসে। আসলে স্বাভাবিক করে নিয়ে আসেন বাংলাদেশের পরবর্তী ব্যাটসম্যানরা। নাম আসবে নাজমুল, লিটন, সাকিব, নুরল হাসানের। যে কারণে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা দিনের বাকি সময় ২৭.১ ওভার খেলে উইকেটের মড়ক ঠেকান ঠিকই, কিন্তু দলের হার এড়ানো আর সম্ভব হচ্ছে না। এখনো ইনিংস হারের শঙ্কা। বৃষ্টির কারণে খেলা আগেই বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৩২ রান। ইনিংস হার এড়াতে হলে এখনো করতে হবে ৪২ রান। উইকেটে আছেন নুরুল হাসান ১৬ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ০ রানে। চতুর্থ দিনের খেলা শুরু হবে আধ ঘণ্টা আগে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।
উইন্ডিজের বোলাররা ভালো বোলিং করেছেন। তার চেয়েও বাজে ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। শুরুর ধাক্কা সামলে পরে সিলসের বলে লিটনের উইকেট হারানোর পর নাজমুল ও সাকিবের ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশ দুর্গম রাস্তা পাড়ি দেওয়ার সংগ্রাম নেমেছিল। অনেকটা সফলও হতে চলেছিল। কিন্তু উইকেটে সেট হয়ে যাওয়ার পরও দুই জনেই অফ স্ট্যাম্পের বল তাড়া করতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। মাত্র ১৪ রানের ব্যবধানে দুই জনে আউট হয়ে যান। দুইজনকেই শিকার করেন আলজারি জোসেফ। জোসেফের অফ স্ট্যাম্পের বাইরে ওভারপিচ বল নাজমুল জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ডি সিলভার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরত আসেন। শেষ হয়ে যায় তার ৯১ বলে ৮ চারে সাজানো ৪২ রানের ইনিংস। এরপর নুরুল হাসানকে নিয়ে সাকিবের হাল ধরার কথা। অ্যান্টিগা টেস্টে দলের এ রকম বিপর্যয়ে তারা হাল ধরে ইনিংসে হার এড়াতে পেরেছিলে। এবারও ইনিংস হারের শঙ্কা। কিন্তু এবার আর পারেননি। জুটি গড়ার আগেই সাকিবও অনুসরন করেন নাজমুলকে। গুড লেন্থের বলটি ছিল অফ স্ট্যাম্পের সামান্য বাইরে। ৩২ বলে ১৬ রান করা সাকিব জায়গায় দাঁড়িয়ে অফ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন। বল ব্যাটের কানায় লেগে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাম্পেবেলের হাতে চলে যায়। প্রথম প্রচেষ্টায় না পারলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় তালুবন্দি করেন তিনি।
কেমার রোচ পরে আর কোনো উইকেট না পেলেও শুরুর এই ধাক্কায় বাংলাদেশের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। যেখান থেকে বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। চতুর্থ দিন খেলা গড়িয়েছে শুধু নামে মাত্র!
এমপি/এসএন