মায়ার্সের সেঞ্চুরিতে চাপে বাংলাদেশ
উৎসবমুখর পরিবেশে জমজমাট আয়োজনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিন সেন্ট লুসিয়া টেস্টে শেষ পর্যন্ত হতাশার চাঁদরে মোড়া দ্বিতীয় দিন গেছে বাংলাদেশের। প্রথম দিন যতটুকু পিছিয়ে ছিল, দ্বিতীয় দিন কাইল মায়ার্সের সেঞ্চুরিতে আরো গভীরভাবে পিছিয়ে পড়েছে। মায়ার্স এখনও অপরাজিত ১২৬ রানে। উইন্ডিজ এগিয়ে ১০৬ রানে। আজ তৃতীয় দিন বাংলাদেশের সেই পিছিয়ে পড়াকে উইন্ডিজ আরো এগিয়ে পাহাড় সমান চাপে ফেলতে পারে! মায়ার্সের সঙ্গে ২৬ রানে ব্যাট করছেন জসুয়া ডি সিলভা। উইন্ডিজের সংগ্রহ পাঁচ উইকেটে ৩৪০। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করেছিল ২৩৪ রান।
দ্বিতীয় দিন ৯০ ওভার খেলা হয়েছে। সেখানে ১২ বল ব্যতীত গোটা দিনই ছিল বাংলাদেশের জন্য হতাশার। এই ১২ বল ছিল লাঞ্চের আগে। যেখানে বাংলাদেশ ১ রানের ব্যবধানে উইন্ডিজের ৩ উইকেট তুলে নিয়েছিল। ফলে উইন্ডিজের সংগ্রহ পরিণত হয়েছিল ১ উইকেটে ১৩১ রান থেকে ৪ উইকেটে ১৩২। তখনও তারা পিছিয়ে ১০২ রানে। মনে হয়েছিল উইন্ডিজ লিড নিতে পারবে না। বাংলাদেশকে লিড এনে দেবেন বোলাররা। কিন্তু বিধি বাম। দিনের পরে দুই সেশন শুধুই হতাশায় কেটেছে বাংলাদেশের। এ সময় তারা স্বাগতিকদের উইকেট নিতে পেরেছে মাত্র একটি। রান জমা হয় ২০৩ রান। দ্বিতীয় সেশনে বিনা উইকেটে ১১১ ও শেষ সেশনে ১ উইকেটে ৯২ রান।
১২ বলে বাংলার আকাশে আলোর ঝিলকানি দেওয়া দিনটিকে এমন হতাশায় পরিণত করেন কাইল মায়ার্স, ব্লাকউড ও ডি সিলভা। চতুর্থ উইকেট জুটিতে মায়ার্স ও ব্লাকউড ১১৬ ও ষষ্ট উইকেট জুটিতে মায়ার্স ও ডি সিলভা অবিচ্ছিন্ন থেকে ৯২ রান যোগ করেন। ১২ বলে ১ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানোর পর বিপদে পড়তে যাওয়া উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা দলকে ঠিকই সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। কিভাবে টেস্ট খেলতে হয়, কিভাবে ত্রাতা হতে হয় তা এই তিন ব্যাটসম্যান করে দেখিয়েছেন। দ্বিতীয় সেশন হতাশায় কাটার পর শেষ সেশনের শুরুতেই মেহেদী হাসান মিরাজ ব্লাকউডকে আর কোনো রান করতে না দিয়েই ব্যক্তিগত ৪০ এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে জুটি ভাঙ্গেন। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। এ সময় মনে হয়েছিল এবার বুঝি খেলায় ফিরতে পারবে বাংলাদেশ কিন্তু এসবই ছিল সান্তনার। কারণ জসুয়া ডি সিলভা এসে জুটি বাঁধার পর আরো ঘাড় চেপে বসেন। দিন শেষে ২৬ রানে অপরাজিত থাকা এই ব্যাটসম্যান বল খেলেছেন ১০৬টি। অপর প্রান্তে শুরু থেকেই কিছুটা আক্রমণাত্বক খেলতে থাকা কাইল মায়ার্স ১৫০ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তার ইনিংসে ছিল ১৩ চার ও ২ ছক্কা। মায়ার্সের আগের সেঞ্চুরিও ছিল এই বাংলাদেশের বিপক্ষেই। তবে তা ছিল ডাবল সেঞ্চুরি।
২০২১ সালে চট্টগ্রামে তিনি অভিষেক ম্যাচেই হাঁকিয়েছিলেন ম্যাচ জয়ী অপরাজিত ২১০ রান। বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ৩৯৪ রান উইন্ডিজ ৫৯ রানে ৩ উইকেট হারানোর পরও অতিক্রম করেছিল এই মায়ার্সের ব্যাট ভর করেই।
বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ৬৮ ও খালেদ ৭৭ রানে ২টি এবং শরিফুল ৬৭ রানে ১টি করে উইকেট নেন। এদিন বাংলাদেশ দল ৮০ ওভার পরে নতুন বল না নিয়ে ২ ওভার পরে নতুন বল নেয়। কিন্তু তাতেও কোনো সাফল্য আসেনি।
এমপি/এসআইএইচ