খালেদের তিন উইকেট প্রাপ্তিতেই স্বস্তি!
মাত্র ৮৩ রানে এগিয়ে। এই রান নিয়ে আর যাই হোক জেতার আশা করা যায় না। বড়জোরে লড়াই করা যায়। কয়েকটি উইকেট নিয়ে কমিয়ে আনা যায় হারের ব্যবধান। এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না। হয়তো তাই। কিন্তু বাংলাদেশ বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চিও ছাড়তে রাজি নয়। তাইতো উইন্ডিজের ভীত কাঁপিয়ে দিয়েছে। ৮৪ রান করার লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে খালেদের ভয়ংকর গোলার সামনে পড়ে ছটফট করতে থাকেন ব্যাটসম্যানরা। খালেদ তার প্রথম ওভারেই তুলে নেন দুই উইকেট। পরের ওভারে আরো একটি। উইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় তিন উইকেট মাত্র ৯ রান। এর ফলে উইন্ডিজ ইনিংস শুরু করার আগে যে ১৭ ওভার খেলার সুযোগ পেয়েছিল, তাতে করে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারলে আধ ঘন্টা সময় বাড়িয়ে দিয়ে আজই খেলা শেষ করে দেয়ার যে পরিকল্পনা ছিল, তা আর হচ্ছে না। তাদের রান তিন উইকেটে ৪৯। জিততে হলে করতে হবে আরো ৩৫ রান। বাংলাদেশের প্রয়োজন অবিশ্বাস্য সাত উইকেট। ক্যাম্পবল ২৮ ও ব্লাকউড ১৭ রান নিয়ে চতুর্থ দিন আবার ব্যাট করতে নামবেন। দুই জনে যেভাবে ক্রিজে সেট হয়ে গেছেন, তাতে করে চতুর্থ দিন উত্তেজনার পারদ ছড়ানোর সম্ভাবনা কমই।
প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৩ রান করে অলআউট হওয়ার পর বাংলাদেশের বোলাররাই দলকে খেলায় ফিরিয়ে এনেছিলেন উইন্ডিজকে ২৬৫ রানে অলআউট করে। এবার তাদের হাতে ব্যাটসম্যানরা পূঁজি দিয়েছেন মাত্র ৮৩ রানের। এই রান নিয়ে যতোটুকু সম্ভব লড়াই করা যায় তার চেয়ে বেশি করে দেখাচ্ছেন তারা। উইন্ডিজের তিন উইকেট তুলে নিয়ে তাদের সহজে জয়ের পথে কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছেন। খালেদের এমন আগুন ঝরানো বোলিংয়ের পর শুধুই আফসোস বাড়বে স্কোর বোর্ডের দিকে তাকিয়ে। ইস ব্যাটসম্যানরা যদি আরো কিছু রান এনে দিতে পারতেন স্কোরবোর্ডে?
খালেদ তার প্রথম বলেই অধিনায়ক ব্রেথওয়েটকে ফিরিয়ে দেন ১ রানে। উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহান ঝাঁপিয়ে পড়ে চমৎকার ক্যাচ ধরেন। এই ব্রেথওয়েট প্রথম ইনিংসে চুম্বকের মতো ক্রিজে আটকে ছিলেন। ২৬৮ বল খেলে ৯৪ রান করেছিলেন। এবার তার ভিত্তিতে বাংলাদেশের বোলাররা স্বস্তি পান। খালেদ তার সেই ওভারেরই পঞ্চম বলে ফিরিয়ে দেন রেইফারকে ২ রানে। খালেদের এক্সটা বাউন্স বল খেলবেন কি খেলবেন না এই দ্বিধায় পড়ে ছেড়ে দিয়ে গিয়ে বিলম্ব করে ফেলেন। বল তার গ্লাভসে লেগে নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে জমা পড়ে।
খালেদ তার পরের ওভারের পঞ্চম বলে শিকার করেন শূন্য রানে বোনারকে বোল্ড করে। চার ওভারে ৯ রানে তিন উইকেট নিয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠে বাংলাদেশের শিবির। উত্তেজনার পারদ বাড়তে থাকে। প্রতি বলে বলে উইকেটর জন্য বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আওয়াজ শুনা যেতে থাকে। ১০ রান হয়নি। আরেকটি উইকেট হয়ে যাবে। ২০ রান হয়নি উইকেট একটা দরকার। হয়ে যাবে। কিন্তু পরে আর হয়নি। ওপেনার ক্যাম্পবেলের সঙ্গে ব্লাকউড জুটি বাঁধার পর ধীরে ধীরে বাংলাদেশের বোলারদের চাপ কমাতে থাকেন। সাকিব উইকেট পাওয়ার আশায় এবাদতের আগে মিরাজকে আক্রমণে নিয়ে আসেন। কিন্তু তাতে পরে আর কোনো সাফল্য আসেনি। ক্যাম্পবল ও ব্লাকউডের মনোসংযোগে চিড় ধরানো যায়নি। জুটিতে রান এসেছে ৪০।
বাংলাদেশের হয়ে খালেদ ৫ ওভারে ১৪ রান দিয়ে নিয়েছেন তিন উইকেট। এ ছাড়া মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৭ রান দিয়েছেন। মিরাজ, এবাদত ও সাকিব ২ ওভার করে বোলিং রান দিয়েছেন যথাক্রমে ১০, ১৪ ও ৩।
এমপি/এএস