বাংলাদেশের দারুণ প্রত্যাবর্তন
দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ-এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশের বোলাররা উইন্ডিজকে খুব বেশি দূর এগুতে দেননি। দলের প্রধান পাঁচ বোলার মোস্তাফিজ-খালেদ-এবাদত-সাকিব-মিরাজ মিলে উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়ে উইন্ডিজকে খুব বেশি দূর যেতে দেননি। ১৬২ রানের লিড নিতে দিয়ে অলআউট করেছে ২৬৫ রানে। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করেছিল ১০৩ রান।
একটা সময় উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা পিচে সুপার গ্লু আঠার মতো আটকে ছিলেন। অনেক চেষ্টা করেও বাংলাদেশের বোলাররা না তাদের আউট করতে পারছিলেন, না তারা রান সংগ্রহ করছিলেন। রান সংগ্রহের গতি ছিল খুবই দূর্বল। আর উইকেট পড়ছিল ফাঁকে ফাঁকে। এতে করে স্বাগতিকরা নিজেদের অবস্থান ক্রমেই পোক্ত করে নিচ্ছিল। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন ছিল বাংলাদেশের হতাশার চাদরে মোড়া। কিন্তু দ্বিতীয় সেশন থেকেই ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। এরপর আর স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানদের মাথা তুলেই দাঁড়াতেই দেয়নি। ৬৮ রানে তুলে নেয় সাত উইকেট।
বাংলাদেশ মূলত খেলায় ফিরে আসে সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠা অধিনায়ক ব্রেথওয়েটকে সেঞ্চুরি করতে না দিয়ে ৯৪ রানে আউট করে। এরপরই হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ে তাদের ব্যাটিং লাইন। উইন্ডিজের চার পেসার মিলে বাংলাদেশের সবগুলো উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন, সেখানে বাংলাদেশের পেসার ও স্পিনাররা সমানভাবে ভাগাভাগি করে নেন। এবাদত ও খালেদ দুইটি করে এবং মোস্তাফিজ একটি আর মিরাজ চারটি ও সাকিব একটি।
ব্রেথওয়েটকে আউট করেছিলেন খালেদ। এরপর বাকি কাজ সারেন মিরাজ চার উইকটে নিয়ে। দ্বিতীয় সেশনে তিনি নেন দুই উইকেট। দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ তিন উইকেট তুলে নেওয়ার পর শেষ সেশনে বাকি চার উইকেট তুলে নিতে খুব বেশি সময় নেয়নি। মাত্র ৮.৫ ওভারে ৩৪ রানে পড়ে চার উইকেট। ব্রেথওয়েটের পর মাথা চাড়া দিয়ে উঠা ব্লাকউড ১২১ বলে ক্যারিয়ারের ১৬তম হাফ সেঞ্চুরি করার পর ৬৩ রানে তাকে ফিরিয়ে দেন ব্রেথওয়েটকে আউট করা সেই খালেদই। এক্সটা কাভারে ঝাঁপিয়ে পড়ে তার ক্যাচ ধরেন মিরাজ। তবে তাকে আউট করার আগেই মিরাজ আলজারি জোসেফকে এবং এবাদতকে কেমার রোচকে কোনো রান না করতে দিয়েই আউট করেন। এরপর মিরাজ শেষ ব্যাটসমান হিসেবে আউট করেন সিলসকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে।
উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের খেলা ১১২.৫ ওভারের মাঝে বাংলাদেশের তিন পেসার মিলে করেন ৬৮ ওভার। সবচেয়ে বেশি ২৮ ওভার করেন এবাদত। তিনি ৬৫ রান দিয়ে নেন দুই উইকেট। খালেদ ২২ ওভারে ৫৯ রানে নেন দুই উইকেট। তার দুইটি উইকেটই ছিল মহামূল্যবান। দুই হাফ সেঞ্চুরিয়ান অধিনায়ক ব্রেথওয়েট৬ (৯৪) ও ব্লাকউড (৬৩)। মোস্তাফিজ ১৮ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নেন এক উইকেট। বাকি ৪২.৫ ওভারের মাঝে মিরাজ ২২.৫ ওভারে ৫৯ রান দিয়ে নেন চার উইকেট। সাকিব ২১ ওভারে এক উইকটে নিতে রান দেন ৪৮। এ ছাড়া নাজমুল হোসেন শান্ত এক ওভার বোলিং করে কোনো রানও দেননি, উইকেটও পাননি।
এমপি/এএস