সবার সামনে ভুল প্রমাণের সুযোগ
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। হারে হারে জর্জরিত। এক একটি হার বেশ মোটা দাগে। দেখতে বিব্রত লাগে। অথচ টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পথ চলার ২২ বছর হতে চলেছে। এখনও হাঁটি হাঁটি পা পা করে এগুচ্ছে। তবে চলতি বছরে যখন নিউ জিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে আট উইকেটে জিতেছিল, তখন ক্রিকেট বিশ্ব অবাক হয়েছিল। অনেকেই ভেবেছিলেন সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশর উড্ডয়ন শুরু হয়েছে। এখন শুধুই এগিয়ে যাওয়ার পালা। কিন্তু এ সবই ছিল ভুল ধারণা।
ক্রাইস্টচার্চে পরের টেস্টেই বাংলাদেশ ফিরে যায় আগের সেই চিরচেনা রূপে। হেরেছিল ইনিংস ও ১১৭ রানে। সেই হারের ক্ষত অব্যাহত থাকে পরবর্তী সিরিজগুলোতেও। দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও বাংলাদেশ বাজেভাবে হারে। সেই ক্ষত দূর করতে আনা হয় নেতৃত্বে পরিবর্তন। মুমিনুল সরে দাঁড়ান দলের পাশাপাশি নিজে ভালো করতে না পারার কারণে। দায়িত্ব বর্তায় সাকিবের উপর। এটি ছিল তৃতীয়বারের মতো তার টেস্ট নেতৃত্ব পাওয়া।
আজ অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে শুরু হবে তার নতুন করে পাওয়া সেই নেতৃত্ব। নামবেন টস করতে। দুই টেস্টের সিরিজ আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। এবার সাকিব বদলে দিতে চান সেই ব্যর্থতার ডালি! দাঁড়ি টানতে চান সেখানে। গাইতে চান সাফল্যোর গান।
বুধবর প্রথম টেস্টকে সামনে রেখে অ্যান্টিগাতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘টেস্টে সাম্প্রতিক সময়ে ভালো খেলিনি। এখন সুযোগ সবাইকে ভুল প্রমাণ করার। আমরা আসলেই ভালো করতে পারি। সেখান থেকে সামনে যেতে পারি। এ ম্যাচে ভালো করতে পারলে সিরিজের জন্য ভালো শুরু হবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১৮ টেস্ট খেলে হেরেছে ১২টিতে। জিততে পেরেছে মাত্র চার টেস্টে। দুইটি টেস্ট ড্র হয়েছে।
কীভাবে ভালো করা সম্ভব তার থিউরিও সাকিব বাতলে দিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ভালো করতে হবে। তা করতে না পারলে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বেশি। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। তাই তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রথম ইনিংসে কেমন ব্যাটিং করি। শুরুতে ব্যাটিং বা বোলিং যাই করি না কেন, তেমন কোনো পার্থক্য হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি ভালো করছেন। আমাদের সব কিছুর জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। ছেলেরা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।’
এই ভালো করার জন্য সাকিব চেয়ে আছেন সতীর্থদের দিকে। তিনি যদি পাঞ্জেরি হন, তাহলে তার যোদ্ধা মিরাজ-জয়-রাজা-সোহানরা। তিনি বলেন, ‘জয় (মাহমুদুল হাসান) দক্ষিণ আফ্রিকায়, নিউজিল্যান্ডে ভালো করেছে। এটি আরেকটি চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। সে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য সত্যিই ভালো করতে পারে। রাজা (রেজাউর রহমান) নতুন পেসার। তার দিকে তাকাতে পারি। আরও কয়েকজন ছেলে আছে। মিরাজ দলে ফিরেছে, এটা আমাদের জন্য বড় বুস্ট। সোহান ( নুরুল হাসান সোহান) আরেকজন, যে আসা যাওয়ার মধ্যে আছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ ফর্মে আছে।’
নিজের প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘ফিটনেস অনুযায়ী আমি ভালো অবস্থানে আছি। ফর্মের দিক দিয়ে চিন্তা করছি না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভালো একটা ম্যাচ গেছে আমার। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়ে আমি খুব একটা ভাবছি না। দলীয় পারফরম্যান্স নিয়েই ভাবছি।’
এমপি/এসএন